×

অর্থনীতি

ঋণ তদারকি কমিটির সভা ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের টাকা দ্রুত ছাড়ের নির্দেশ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১১:৫৬ এএম

ঋণ তদারকি কমিটির সভা ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের টাকা দ্রুত ছাড়ের নির্দেশ
‘পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সহায়তা তহবিল’ থেকে পুনঃঅর্থায়নের টাকা দ্রুত ছাড় করার নির্দেশ দিয়েছে তদারকি কমিটি। প্রায় একশ কোটি টাকার তহবিল বিতরণের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে মঞ্জুরি করা হলেও ঈদুল আজহা, জাতীয় শোক দিবস ও অন্যান্য বেশ কিছু ছুটির কারণে ঋণের অর্থ বিতরণ করা যায়নি। তাই পুঁজিবাজারের তারল্য সংকট মোকাবেলায় দ্রুত অর্থ ছাড়ের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) সভাকক্ষে ঋণ তদারকি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক ও তদারকি কমিটির আহবায়ক মো. সাইফুর রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবুল হোসেন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধিসহ আইসিবির পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। জানা গেছে, গত জুলাইয়ের শেষদিকে ২৭ প্রতিষ্ঠানের নাম চ‚ড়ান্ত করে আইসিবি। এসব প্রতিষ্ঠানকে মোট ৮৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ঋণ দেয়ার কথা থাকলেও এ পর্যন্ত মাত্র একটি প্রতিষ্ঠানকে চেক হস্তান্তর করতে পেরেছে। গত আগস্ট মাসের অধিকাংশ দিনই ছিল সরকারি ছুটি। ঈদুল আজহা ও জাতীয় শোক দিবস ছাড়াও সাপ্তাহিক ছুটির কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো কাজ করতে পারেনি। চলমান বাজারের মন্দা পরিস্থিতি মোকাবেলায় এ টাকা দ্রুত হস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়াও বেশ কিছু কোম্পানির পরিচালকদের খেলাপি ঋণ থাকায় মঞ্জুরিপত্র স্থগিত করা হয়েছে। খেলাপি ঋণ হালনাগাদ না করা পর্যন্ত ঋণ পাবে না। এ ছাড়া কিছু লিজিং কোম্পানির সাবসিডিয়ারিকে মঞ্জুরিপত্র দিয়েও আবার ফিরিয়ে নেয়া হয়েছিল। লিজিং কোম্পানিগুলোকে ঋণ দেয়া হবে কিনা এ নিয়ে আলোচনা করছিল। পরবর্তী সময়ে যেসব লিজিং কোম্পানির সাবসিডিয়ারি আগের ঋণের কিস্তি ঠিকমতো দিচ্ছে তাদের দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক দ্রুত ঋণের অর্থ ছাড়ের উদ্যোগ নিয়েছে আইসিবি। এসব প্রতিষ্ঠানের পরিশোধিত মূলধনের ওপর ভিত্তি করে (পরিশোধিত মূলধনের ২০ শতাংশ) ঋণের পরিমাণ নির্ধারণ করা হচ্ছে। কমিটি সূত্র বলছে, যাদের কাছ থেকে ঋণের টাকা ফেরত আসবে, তাদেরই ঋণ দেয়া হচ্ছে। আইসিবি সূত্রে জানা যায়, ২৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঋণ দেয়া হচ্ছে সিটি ব্রোকারেজ লিমিটেডকে, তারা পাচ্ছে ১৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঋণ পাচ্ছে লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ, তারা পাচ্ছে ১২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। ঢাকা ব্যাংক সিকিউরিটিজ ৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকা, ব্যাংক এশিয়া সিকিউরিটিজ ৯ কোটি ৫৮ লাখ, বিএলআই ক্যাপিটাল ৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা, এসবিএল ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট ৭ কোটি ১৪ লাখ, বিডি ফাইন্যান্স সিকিউরিটিজ ৫ কোটি ৪৩ লাখ, ইউনিক্যাপ ইনভেস্টমেন্ট ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা ঋণ পাচ্ছে। এ ছাড়া মিউওয়ে সিকিউরিটিজ ৯৯ লাখ টাকা, ক্যান্ডল স্টোন ২৪ লাখ টাকা, কাইয়ুম সিকিউরিটিজ ২৩ লাখ টাকা, বিএমএসএল ইনভেস্টমেন্ট এক কোটি ২ লাখ টাকা, ইউনিক্যাপ সিকিউরিটিজ এক কোটি ৬ লাখ টাকা, ফিনিক্স সিকিউরিটিজ এক কোটি ২৭ লাখ টাকা, বিডিভি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি ২৫ লাখ টাকা, অ্যালায়েন্স ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট ২১ লাখ টাকা, শেলটেক ব্রোকারেজ ৮৭ লাখ টাকা, বিডি বেঞ্চার এক কোটি ১০ লাখ টাকা, এএএ ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট এক কোটি ১৩ লাখ টাকা, প্রাইলিংক সিকিউরিটিজ এক কোটি টাকা, স্ট্র্যাটেজি ফিন্যান্স এক কোটি ১৯ লাখ টাকা, স্ট্র্যাটেজিক ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ৭৫ লাখ টাকা, ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন সার্ভিসেস ৮৬ লাখ টাকা এবং নিউ এরা সিকিউরিটিজ ৩৪ কোটি টাকা পাচ্ছে। অন্যদিকে বিডি ফাইন্যান্স ক্যাপিটাল এক কোটি ৬৬ লাখ এবং জিএসপি ইনভেস্টমেন্ট এক কোটি ৫৪ লাখ টাকা ঋণ পাচ্ছে। এ ছাড়াও কিছু প্রতিষ্ঠানের নামে মঞ্জুর করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু বিডি ফাইন্যান্স সিকিউরিটিজকে ৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়েছে। নান কারণে আর কোনো প্রতিষ্ঠানের টাকা এখনো ছাড় করা যায়নি। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ব্যাংক আইসিবিকে মোট ৮৫৬ কোটি টাকার তহবিল দেয়। ৯৫ কোটি ৩ লাখ টাকা বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউস, মার্চেন্ট ব্যাংক ও অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলোকে দেয়া হবে। আর ৭৬০ কোটি ৯৭ লাখ টাকা আইসিবি নিজে বিনিয়োগ করবে। এ বিষয়ে আইসিবি বলছে, আইসিবির পরিশোধিত মূলধনের ২০ শতাংশ টাকা নিজেদের কাছে রেখেছে। বাকি টাকা তারা পুনঃঅর্থায়ন করবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App