×

অর্থনীতি

উচ্চ সুদেও ঋণ পাচ্ছে না ব্রোকারেজ হাউসগুলো

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১২:০২ পিএম

উচ্চ সুদেও ঋণ পাচ্ছে না ব্রোকারেজ হাউসগুলো
ভয়াবহ তারল্য সংকটের মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করছে দেশের পুঁজিবাজার। বাজার পরিস্থিতি মন্দা হওয়ায় ব্যাংক ও ব্যাংকবহিভর্‚ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ পাচ্ছে না। উচ্চসুদে ঋণ নেয়ার জন্য তদবির করে ব্যর্থ হচ্ছে ব্রোকারেজ হাউসগুলো। মূলত শেয়ারবাজার পরিস্থিতি মন্দা হওয়ায় কেউই এ খাতে ঋণ দিতে সাহস পাচ্ছে না বলে জানা গেছে। গত এক মাসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ২৩০ পয়েন্ট। বর্তমানে ডিএসইএক্স সূচক ৫০০৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অন্যদিকে ডিএসইর লেনদেনও ৪শ কোটির ঘর ছাড়াচ্ছে না। অপর শেয়ারবাজার চিটাগাং স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সিএসইএক্স সূচকও কমে ৯২৮৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। একাধিক ব্রোকারেজ হাউস বলছে, তারা অনেক ব্যাংকের কাছে ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ হারে সুদ দিতে রাজি হলেও ব্যাংকগুলো টালবাহানা করছে। অনেক ব্যাংক প্রথমে রাজি হলেও পরে বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা করে না করে দিচ্ছে। এ ছাড়াও এক্সপোজার লিমিটের (একক শেয়ার ধারণসীমা) কারণে অনেক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব সহযোগী (সাবসিডিয়ারি) কোম্পানিকেও ঋণ দিতে পারছে না। ফলে ব্রোকারেজ হাউসগুলো চরম তারল্য সংকটের মধ্যে রয়েছে। জানা গেছে, চলমান রিং সাইনের প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) আবেদন করার জন্য অনেকে টাকার সংস্থান করতে পারছে না। ফলে অনেক ব্রোকারেজ হাউসই তাদের কোটা অনুপাতে পুরোপুরি আবেদন করতে পারবে না। অব্যাহত বাজার মন্দার কারণে একদিকে লেনদেন কমছে ব্রোকারেজ হাউসগুলোর, অন্যদিকে তারল্য সংকট থাকায় কাক্সিক্ষত ঋণও দিতে পারছে না। ফলে পরিচালন লোকসানের আতঙ্কে ব্রোকারেজ হাউসগুলো। জানা গেছে, ব্রোকারেজ হাউসগুলোকে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সহজ শর্তে ঋণ দিত। কিন্তু অনেক হাউসে ঋণের হিসাবগুলো নেতিবাচক (নেগিটিভ ইক্যুইটি) হয়ে আছে। ফলে তারা মূল প্রতিষ্ঠানকে ঋণের টাকা দিতে পারছে না। গ্রাহকদেরও লোকসানের মধ্যে বিক্রি করতে বলতে পারছে না। এ বিষয়ে সিএসইর সাবেক সভাপতি ফখরুদ্দিন আলী আহমেদ বলেন, বাজার পরিস্থিতি খারাপ হলে সব দিক থেকেই হতাশাজনক অবস্থার সৃষ্টি হয়। বর্তমানে অনেক ব্রোকারই তাদের ব্যবসার দিকে মনোযোগী নয়। সবাই অন্যান্য ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে। অধিকাংশ ব্রোকারেজ হাউস তাদের সব শাখা অফিস বন্ধ করে দিয়েছে। শুধু প্রধান কার্যালয়ে যেটুকু ব্যবসা হয়, সেটার ওপর টিকে আছে। অনেক ব্রোকারেজ হাউস তাদের পরিচালনা ব্যয়ে লোকসান গুনছে। অন্যদিকে স্টক এক্সচেঞ্জগুলোও খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। এ বিষয়ে একাধিক ব্রোকারেজ হাউসের নির্বাহীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছে, অনেক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাদের সাবসিডিয়ারি থেকে ঋণের টাকা ফেরত নেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে। এক্সপোজার লিমিট নিয়ে তারা আতঙ্কিত। অন্যদিকে লিজিং কোম্পানিগুলো থেকে গ্রাহকরা আমানতের টাকা তুলে নিচ্ছে। এতে আরো অস্বস্তিতে পড়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের উচিত এ মুহূর্তে একটি বড় তহবিল গঠন করে পুঁজিবাজারকে সহায়তা করা। অন্যথায় ব্রোকারেজ হাউসগুলো গত কয়েক বছরের অব্যাহত লোকসানে চলতে থাকলে এক পর্যায়ে ধসে পড়বে। এ বিষয়ে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুজিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাজারের তারল্য সংকটের কথা বিবেচনা করে আইসিবি বেশ কিছু উদ্যোগ নিচ্ছে। খুব শিগগিরই তা দৃশ্যমান হবে। এ ছাড়া ব্রোকারেজ হাউস, মার্চেন্ট ব্যাংক ও অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলোকেও ঋণ দেয়া অব্যাহত রেখেছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App