×

মুক্তচিন্তা

গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করাই চ্যালেঞ্জ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:০৭ পিএম

পঞ্চম জেনারেশন ইন্টারনেটসেবা ফাইভ-জি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বিটিআরসির প্রধান কার্যালয়ে গত মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকে ফাইভ-জি চালুর জন্য পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাবনা ও নীতিমালা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত হয়েছে। দেশে ফাইভ-জি মোবাইল ফোনসেবা চালু হচ্ছে, এটি নিঃসন্দেহে একটি ভালো খবর। এর মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আরেক ধাপ এগোবে দেশ। তবে ফাইভ-জি নামে মাত্র চালুই যথেষ্ট হবে না, এই সেবা ঠিকঠাক মতো এবং সুলভে প্রাপ্তি নিশ্চিত করার চ্যালেঞ্জ নিতে হবে সংশ্লিষ্টদের। ফাইভ-জি সেবা চালুর উদ্যোগ হিসেবে আগামী জানুয়ারি নাগাদ একটি পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা প্রণয়নের দিকে এগোচ্ছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফাইভ-জি সেবা চালু করতে পরিকল্পনা ও একটি নীতিমালা প্রণয়নে সরকারের প্রতিনিধি, নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতিনিধি, অপারেটরগুলোর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে কমিশন গত ৪ আগস্ট একটি কমিটি গঠন করে। কমিটি এই প্রযুক্তি চালু করতে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাবনা (ফাইভ-জির রূপরেখা, সম্ভাব্য তরঙ্গ, তরঙ্গমূল্য এবং বাস্তবায়ন সময়কাল ইত্যাদি) প্রণয়ন করবে। সেসঙ্গে একটি নীতিমালাও তৈরি করবে। এই সেবা চালু হলে ফোর-জি প্রযুক্তির চেয়ে নেটওয়ার্ক সক্ষমতা বহুগুণ বেড়ে যাবে। বিশেষ করে চিকিৎসাসেবায় ব্যবহৃত শরীরে লাগানো ফিটনেস ডিভাইসগুলো নিখুঁত সময়ে সংকেত দিতে পারবে, জরুরি চিকিৎসা বার্তাও পাঠাতে পারবে। তবে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, দেশে মোবাইল ফোন অপারেটররা যেখানে থ্রি-জি কিংবা ফোর-জি সেবা ঠিকমতো দিতে পারছে না, সেখানে এই নতুন সেবা কতটা দিতে পারবে। বর্তমানে দেশে কোনো অপারেটরই গ্রাহকদের মানসম্পন্ন থ্রি-জি সেবাও দিতে পারছে না। ফোর-জি দূরের কথা। সাধারণভাবে এ সেবাগুলো সাশ্রয়ী হওয়ার কথা ছিল। এতদিন অপারেটরগুলো যে সেবা দিয়ে আসছে তা যথেষ্ট সাশ্রয়ী নয়। ৯০ শতাংশ গ্রাহক এখনো ফোর-জির আওতার বাইরে। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, ফাইভ-জি চালুর সিদ্ধান্ত কতটা বাস্তবসম্মত। দেশে টু-জি মোবাইল ফোন সেবার পরিবর্তে ২০১৩ সালে থ্রি-জি সেবা চালু করা হয়। এরপর ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে চালু হয় ফোর-জি সেবা। ফোর-জি চালুর ১৭ মাস পার হলেও সারাদেশে থ্রি-জি সেবাই সঠিকভাবে নিশ্চিত হয়নি এখনো। ফাইভ-জি বেলায় কি একই অবস্থা হবে? এ রকম নানা প্রশ্ন গ্রাহকদের মাঝে ঘুরপাক খাচ্ছে। আর এই নিম্নমানের সেবার কারণে সরকারও অপারেটরের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে, সেটাও আমাদের জানা নেই। অপারেটর কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগের যেন অন্ত নেই। অতিরিক্ত অর্থ কেটে নেয়া থেকে শুরু করে নানা অভিযোগ হরহামেশাই আসছে গণমাধ্যমে। মূলত নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্নতা, নিম্নমানের ভয়েস সেবা, কল ড্রপ, এসএমএস আদান-প্রদানে সময়ক্ষেপণ ও নানা প্রলোভন দেখিয়ে অতিরিক্ত অর্থ কেটে নেয়ার অভিযোগগুলোই বেশি। গ্রাহক স্বার্থ রক্ষায় নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষকে আরো কঠোর হতে হবে। প্রয়োজনে অভিযোগের ধরন বিবেচনায় জরিমানাসহ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ফাইভ-জির মানসম্মত সেবা ও সুলভ সাশ্রয়ী রেট নিশ্চিত করতে হবে। গ্রাহক স্বার্থ রক্ষায় বিটিআরসি আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন ও তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করবে- এমনই প্রত্যাশা করছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App