×

জাতীয়

রংপুর-৩ আসনে নির্বাচনের উত্তাপ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০২:১৬ পিএম

রংপুর-৩ আসনে নির্বাচনের উত্তাপ

ফাইল ছবি

রংপুর-৩ সদর আসনে উপনির্বাচনের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে। গত রবিবার নির্বাচন কমিশন উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করায় রাজনৈতিকদলগুলো যেন নড়েচড়ে বসেছে। দলের প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে জাতীয় পার্টিতে হিমশিম অবস্থা। সম্ভাব্য প্রার্থী বেশ কয়েকজন থাকলেও পরিবার ও দলের অবস্থান ভিন্নমুখী আওয়ামী লীগ এ আসনটি নিতে মরিয়া। দলের অন্তত ১২ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মাঠে রয়েছেন বেশ কিছু দিন ধরে। আর বিএনপির প্রার্থীরাও হয়েছেন উজ্জীবিত। রংপুর-৩ আসনটি জাতীয় পার্টির দুর্গ বলে খ্যাত। দলটির চেয়ারম্যান প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। আর রবিবার ঘোষণা করা হয়েছে এ আসনে উপনির্বাচনের তফসিল। আগামী ৫ অক্টোবর ভোটগ্রহণের দিন ধার্য করেছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু আসনটিতে মনোনয়নকে কেন্দ্র করে দ্বিধা-বিভক্ত জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টিসহ দলের সিনিয়র নেতারা। এরশাদ পরিবারের পক্ষ থেকে প্রার্থী হতে চাইছেন অন্তত ৪ জন। জানা গেছে, পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা ও এইচ এম এরশাদের সহধর্মিণী রওশন এরশাদ তার ছেলে শাদ এরশাদকে এই আসন থেকে এমপি হিসেবে দেখতে চান। কিন্তু দলের অনেক সিনিয়র নেতা ও স্থানীয় জাপা নেতাকর্মীরা তা মানতে নারাজ। তারা চান রংপুরের তৃণমূলকে প্রাধান্য দিয়ে প্রার্থী নির্বাচিত হোক। এতে দল আরো বেশি শক্তিশালী হবে। সেই সঙ্গে দলে নিজেদের অবস্থান আরো বেগবান হবে বলে মনে করেন স্থানীয় নেতারা। পার্টির শীর্ষ নেতাদের সূত্রে জানা গেছে, এরশাদ পরিবারের সদস্যরাই এখনো রংপুর-৩ আসনে মনোনয়নের বিষয়ে একমত হতে পারেননি। পরিবার থেকে মনোনয়ন দৌড়ে এরশাদপুত্র রাহগীর আল মাহি সাদ এরশাদ ছাড়াও ভাতিজা সাবেক এমপি হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ, ভাতিজা (মামাতো ভাইয়ের ছেলে) মেজর (অব.) খালেদ আখতার, ভাগনি (বোন মেরিনা রহমানের মেয়ে) মেহেজেবুন্নেছা রহমান টুম্পাও মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। পরিবারের বাইরে রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসিরকে মনোনয়ন দেয়ার দাবি জানিয়ে ইতোমধ্যে আল্টিমেটাম দিয়েছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। এ আসনে মনোনয়ন পেতে দলীয় ফরম সংগ্রহ করেছেন জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফখর উজ জামান জাহাঙ্গীর। মনোনয়ন পেলেই বিজয়ী হবেন এমনটা চিন্তা থেকেই সম্ভাব্য সব প্রার্থীই লবিং-তদবির বাড়িয়ে দিয়েছেন। অনেকেই পার্টির চেয়ারম্যান-মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতাদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন। পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেছেন, জাতীয় পার্টি মহাজোটের শরিক দল হওয়ায় এ আসনে নির্বাচন জোটগতভাবে হবে এবং পার্লামেন্টারি বোর্ড আগ্রহী প্রার্থীদের আবেদন ও মাঠের অবস্থা বিশ্লেষণ করে মনোনয়ন দেবে। সে ক্ষেত্রে তিনি আওয়ামী লীগকে প্রার্থী না দেয়ারও অনুরোধ জানান। তবে আওয়ামী লীগ এবার এ আসনটিতে ছাড় দিতে নারাজ। এ আসনের উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য বেশ আগে থেকেই মাঠে রয়েছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর এক সদস্যসহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের অন্তত ডজন খানেক নেতা। প্রতিদিনই তারা গণসংযোগ, সমাবেশ, শোডাউনসহ বিভিন্ন প্রচারণামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের নজর এবার এ আসনটির দিকে। মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি সাফিউর রহমান সফি বলেন, রংপুরের মানুষ এবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী চায়, নৌকা প্রতীক চায়। আমরাও চাই প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হোক। আসনটি নিয়ে কঠিন হিসাব-নিকাশ করছে বিএনপিও। তারা চাইছে রংপুর সদর আসনে এবার একজন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ প্রার্থী দিতে। এ ব্যাপারে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিজু ও যুবদলের জেলা সভাপতি নাজমুল আলম নাজু বলেন, দল যেহেতু নির্বাচনে অংশ নেবে, সেহেতু দুয়েক দিনের মধ্যে প্রক্রিয়া শুরু হবে। তবে পরিস্থিতি যা হয়েছে তাতে আসনটি নিয়ে চিন্তিত জাতীয় পার্টির তৃণমূল নেতারা। তারা মনে করছেন, পারিবারিক দ্বন্দ্বের সমাধান না হলে অন্যরা সুযোগ নিতে পারে। এমনকি জাপা আসনটি হারাতেও পারে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App