×

খেলা

আফগান বধে মরিয়া মিরাজ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১১:১১ এএম

আফগান বধে মরিয়া মিরাজ
আগামী বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলতে মাঠে নামবে টাইগাররা। ঘরের মাঠে টেস্টে নবাগত দলটির বিপক্ষে হুঙ্কার দিয়ে রেখেছেন স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। ১১৪ টেস্ট খেলা বাংলাদেশ দলের সামনে টেস্টে খুব বেশি সুবিধা করতে পারবে না রশিদ খানের দল। সেই সঙ্গে নিজেদের মাঠে তো আত্মবিশ্বাসটা আরো বেশি এই টাইগার অফস্পিনারের। বাংলাদেশ টেস্ট খেলে ১৯ বছর। প্রায় দুই দশকের এই জার্নিতে ১১৪টি টেস্ট ম্যাচ খেলে ফেলেছে টাইগাররা। সাদা পোশাক আর লাল বলের এই খেলায় দেশে ও বিদেশে ম্যাচ এবং সিরিজ দুটোই জিতেছে। সেদিক থেকে টেস্ট ক্রিকেটেও এখন অভিজ্ঞ দল বাংলাদেশ। এই ফরম্যাটে নবাগত আফগানিস্তানের বিপক্ষে পার্থক্য গড়ে দিতে টাইগারদের অভিজ্ঞতাই যথেষ্ট। গত কয়েক বছরে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রবল প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠা আফগানিস্তান টেস্টে নবীন হলেও বাংলাদেশের কন্ডিশনে তারা হতে পারে ভয়ঙ্কর। মূলত অভিজ্ঞতার কারণেই নিজেদের অনেকটা ব্যবধানে এগিয়ে রাখছেন মিরাজ। যদিও আফগানদের তিনি মোটেও সহজভাবে নিচ্ছেন না। চট্টগ্রামে কাবুলিওয়ালাদের হারাতে আশাবাদী মিরাজ। তার মতে, কন্ডিশনের পার্থক্য খুব বড় হয়ে ওঠার কথা নয়। আফগানরাও এই কন্ডিশনে, এই ধরনের মন্থর উইকেটে অভ্যস্ত। আফগানদের বড় শক্তি স্পিন, যা এখানেও দারুণ কার্যকর হয়ে উঠতে পারে। তবে সীমিত ওভার আর টেস্টের পার্থক্য স্পিন বিভাগেও দেখছেন মিরাজ। তার মতে, টেস্টের বিবেচনায় এগিয়ে থাকবে বাংলাদেশের স্পিনাররাই। বিশেষ করে আমাদের সাকিব ভাই আছেন, ১৩-১৪ বছর ক্রিকেট খেলে ফেলেছেন, সফল ক্রিকেটার। আর একটি উইকেট পেলে তাইজুল ভাইয়ের একশ টেস্ট উইকেট হবে। আমারও ৩-৪ বছরের অভিজ্ঞতা হয়েছে। এই তিন-চার বছরে যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, আমি বলব ওদের থেকে আমাদের টেস্ট ক্রিকেটের অভিজ্ঞতা অনেক ভালো। ওদের স্পিনাররা ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টিতে রান সেভ করে বল করে। এর জন্য হয়তো ব্যাটসম্যান চার্জ করে থাকে। টেস্ট ক্রিকেটে কিন্তু ওইরকম কিছু নাই যে জোর করে মারা বা চার্জ করে খেলা। যতক্ষণ ভালো করবে, ততক্ষণ টিকে থাকবে। বোলিংয়ে বাংলাদেশের মতো আফগানিস্তানেরও শক্তির জায়গা স্পিন। রশিদ খান, মুজিবুর রহমান, মোহাম্মদ নবিরা সীমিত ওভারের ক্রিকেটে দারুণ বোলিং করেন। গত বছরই ভারতের দেরাদুনে রশিদ খানদের কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হেরেছে বাংলাদেশ। তবে টেস্ট ক্রিকেটে এই দাপুটে বোলিং নাও করতে পারে দলটি। এই ফরম্যাটে খেলার অভিজ্ঞতার একটা ব্যাপার থাকে। যে কারণেই বোলিংয়ে নিজেদের এগিয়ে রাখছেন মিরাজ। গত বছর ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক আফগানিস্তানের। এ বছর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছে একটি টেস্ট। এই দুই নবাগতের ম্যাচে হার মানে আফগানরা। ২০১৬ সালে মিরাজ বাংলাদেশ জাতীয় দলে সুযোগ করে নেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে। ২ টেস্টে ১৯ উইকেট নিয়ে নিজেকে প্রমাণ করেন এ স্পিনার। পরের বছর ২০১৭ সালে শততম টেস্ট জেতে বাংলাদেশ, তখনো দলকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন এ তরুণ ক্রিকেটার। ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়াকে ঘরের মাটিতে হারায় বাংলাদেশ, যথারীতি সেখানেও দুর্দান্ত ভ‚মিকা পালন করেন মিরাজ। বলাই বাহুল্য, দলের জন্য সে বছরটা ছিল রীতিমতো পয়মন্ত। আর দীর্ঘপরিসর ক্রিকেটে দারুণ পারফরমেন্স তাকে সুযোগ এনে দেয় সীমিত ওভারের ক্রিকেটেও। নির্ভুল লাইন লেংথই তার বোলিংয়ের মূল অস্ত্র। বিশেষ করে পিচে স্পিনারদের জন্য বিন্দুমাত্র সাহায্য যদি থেকে থাকে, মিরাজ হয়ে ওঠেন অনবদ্য। বয়সটা নেহাতই কম, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও খুব বেশি দিনের বিচরণ নয় তার। উন্নতির এখনো ঢের বাকি, বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে। তবে কঠোর পরিশ্রমই যার মূলমন্ত্র, যিনি ক্যারিয়ারের শুরুতেই ফোকাস না হারানোর মতো বড় প্রতিশ্রুতি উচ্চারণ করতে জানেন, দুর্দান্ত ক্রিকেট মস্তিষ্কের উদাহরণ দিয়ে যিনি শত প্রতিক‚লতার মধ্যেও পারফর্ম করতে জানেন। তার সামর্থ্যে বাজি রেখে কিছুটা ঝুঁকি নিয়েই বলা যায়, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১০ বছরে তিনিই হতে চলেছেন বাংলাদেশের অন্যতম সেরা সুপারস্টার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App