×

মুক্তচিন্তা

পোশাক খাতে নতুন করে অস্থিরতা নয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:২১ পিএম

কোনো ঘোষণা ছাড়াই রাজধানীর একটি কারখানায় ৭০০ শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। ক্রেতা সংকটের কারণে এস এফ ডেনিম অ্যাপারেলস লিমিটেড এই ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছে বলে মালিক পক্ষ বলছে। দেশের গার্মেন্টস খাতে যদি ক্রেতা সংকটের বিষয়টি সত্য হয় তাহলে এ খাতের জন্য বড় অশনি সংকেত। এই শিল্পকে ধ্বংস করার নানান ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত হচ্ছে। পাটের মতো গার্মেন্টস শিল্প ধ্বংসের চক্রান্ত রুখে দিতে না পারলে দেশের অর্থনীতিতে চরম বিপর্যয় নেমে আসবে। জানা যায়, সিএন্ডএ, এইচএন্ডএমের মতো বিশ্বের নামি কয়েকটি ব্র্যান্ডের জন্য পোশাক সরবরাহ করে এই কারখানাটি। ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিটির পাঁচটি ইউনিটে প্রতি মাসে ১০ লাখ পোশাক তৈরি করতে সক্ষম বলে তাদের ওয়েবসাইটে বলা আছে। কোম্পানির ওয়েবসাইটে শ্রমিকের সংখ্যা দেয়া আছে ৬ হাজার ৯০০ জন। ঈদের পর আকস্মিক চাকরিচ্যুতির কারণে শ্রমিকদের মনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। বিজিএমইএ বলছে, অর্ডার কমে যাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটিকে বাঁচিয়ে রাখতে কোম্পানি তাদের খরচ ৫০ শতাংশ কমিয়েছে। খরচ কমানোর জন্য তারা এটা করেছে। তবে শ্রমিকরা দাবি করছেন, কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই এস এফ ডেনিম ৭০০ জন শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করেছে। এর মধ্যে অনেক গর্ভবতী নারী রয়েছেন, যাদের নিয়মানুযায়ী চাকরি থেকে বাদ দেয়া যায় না। এটা মানবিকভাবে বিবেচনা করা জরুরি নয় কি? তৈরি পোশাকশিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ খাত। অনেক চড়াই-উৎরাই অতিক্রম করে গত কয়েক দশকের পথপরিক্রমায় দেশের তৈরি পোশাকশিল্প আজকের এ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। অনেক প্রতিকূলতা এবং দেশি ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প এগিয়ে যাচ্ছে অগ্রগতির পথে। দেশের অর্থনীতিকে বেগবান করতে পোশাক শিল্পের কোনো বিকল্প নেই। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিদেশ থেকে যে রেমিট্যান্স আসছে তার অন্যতম খাত হলো গার্মেন্টস শিল্প। প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিকের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ প্রচুর বৈদেশিক অর্থ আয় করছে। যে কোনো দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা নিঃসন্দেহে সে দেশের শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে পোশাক রপ্তানি থেকে ৫০ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বিজিএমইএ। এই লক্ষ্যমাত্রাকে অনেকে উচ্চাভিলাষী বললেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব। এর জন্য বিদ্যমান অনেক সমস্যা দূর করতে হবে। বিশ্ব পোশাক বাজার এখন ৬৫০ বিলিয়ন ডলারের। বাংলাদেশ এর মাত্র ৫ শতাংশ সরবরাহ করে। এ হার ৮ শতাংশে উন্নীত করতে পারলেই ৫০ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব। এই টার্গেট পূরণে প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের আন্তরিক ও বাস্তবভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন। নিশ্চিত করতে হবে শ্রমিকদের চাকরি নিরাপত্তা। একই সঙ্গে পোশাকশিল্পের কর্মপরিবেশ আরো উন্নত করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App