×

মুক্তচিন্তা

কারণটা কী, ব্যাধিটা কোথায়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৮:৫৬ পিএম

আমরা মুক্তির যে স্বপ্নের কথা ভেবেছিলাম সেই স্বপ্ন সফল হয়নি। তার কারণ হচ্ছে আমরা পুরনো ব্যবস্থাটাকে বদলাইনি। আমরা রাষ্ট্র বদলিয়েছি। মানুষের মুক্তি এল না। তার কারণ হচ্ছে সমাজে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটল না। সমাজ মানে অনেকগুলো সামাজিক সম্পর্ক, সেই সম্পর্কগুলো বদলালো না। সম্পর্ক রয়ে গেল প্রভু এবং ভৃত্যের, সম্পর্ক রয়ে গেল ধনী এবং দরিদ্রের এবং এই ভৃত্য ও দরিদ্র এখন নিপীড়িত হচ্ছে।

বাংলাদেশের পরিস্থিতি যে ভালো নেই এটা আমরা সবাই জানি। পরিস্থিতি কখনোই ভালো ছিল না। তবে আমরা দীর্ঘকাল চেষ্টা করেছি, সংগ্রাম করেছি এই পরিস্থিতি বদলানোর জন্য, কিন্তু বদলাতে পারিনি। সংগ্রাম চলেছে, আত্মত্যাগ ঘটেছে, কিন্তু ব্যবস্থাটা বদলায়নি এবং সংগ্রাম ও আত্মত্যাগ সত্ত্বেও ব্যবস্থাটা বদলায়নি বলেই এই ব্যবস্থাকে আরো খারাপ মনে হচ্ছে। এ ছাড়া ব্যবস্থা যে ক্রমাগত খারাপ হচ্ছে সেই বিষয়েও কোনো সন্দেহ নেই। আজকে আমাদের এই দেশে কোনো কিছুই নিরাপদ নয়। ব্যাংকে টাকা থাকলে সেটা লোপাট হয়ে যাচ্ছে, দেশি দুর্বৃত্তরা লোপাট করছে, বিদেশি দুর্বৃত্তরা লোপাট করছে, স্থানীয়দের সঙ্গে যোগসাজশে। যে টাকা বাইরে থেকে আমাদের মেহনতি ভাই ও বোনেরা পাঠাচ্ছেন সেই টাকা এভাবে লুণ্ঠিত হচ্ছে, যে টাকা গার্মেন্টসের শ্রমিকরা উপার্জন করছেন সেই টাকাও ওই একইভাবে লুণ্ঠিত হচ্ছে এবং যেটা খুব পরিষ্কার সত্য এবং যে সত্যের মধ্য দিয়ে এই বাস্তবতা, আজকের এই বাস্তবতা, উন্মোচিত হয়ে যায় সেটা হলো মেয়েদের অবস্থা। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যখন প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন এখানে ছাত্রী ছিল মাত্র একজন, আজকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীর সংখ্যা হয়েছে সতেরো হাজারেরও বেশি, কিন্তু মেয়েদের নিরাপত্তা বাড়েনি এবং নিরাপত্তার অবস্থা মেয়েদের জন্য যে কতটা খারাপ সেটা ুতিন বছর আগের একটি ঘটনার কথা এখনো আলোচিত হচ্ছে। কুমিল্লায় সোহাগী জাহান তনু যেভাবে নিহত হয়েছে সেটাই তা উন্মোচিত করেছে। তনু একজন কিশোরী, সে ধর্ষিত ও নিহত হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে সুরক্ষিত যে এলাকা সেখানে এবং আমরা দেখলাম যে সেই হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দেয়া হতো যদি না তার সহপাঠীরা প্রতিবাদ করত এবং যদি না বাংলাদেশজুড়ে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হতো। সঠিক তদন্ত হচ্ছে না, অপরাধীরা চিহ্নিত হচ্ছে না এবং অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে বিচারটা। এটা প্রতীকের মতো ঘটনা। এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি অসংখ্য ঘটনার একটি এবং এ ঘটনা বাস্তব সত্যকে উন্মোচিত করে দেয়। আমরা ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের তদন্তের ব্যাপারে দীর্ঘমেয়াদি তৎপরতা দেখেছি। আমরা দেখেছি সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড। কতদিন চলে গেল। মাসের পর মাস চলে গেল। বলা হয়েছিল ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রহস্য উন্মোচিত হবে। ৪৮ ঘণ্টা, ৪৮ দিন, ৪৮ মাস চলে গেছে। কিন্তু রহস্য উন্মোচিত হয়নি; অপরাধীরা চিহ্নিত হয়নি। বিচার তো দূরের কথা। বিচার হয়নি এই জন্য যে ওই দাবিটা প্রবলভাবে তোলা যায়নি। বিচারব্যবস্থা একটা স্বাধীন স্বাভাবিক ব্যবস্থা হওয়ার কথা, কিন্তু বিচারের জন্য এখানে দাবি করতে হয়, প্রবলভাবে দাবি না করলে বিচার হয় না। সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধ ছিলেন না। সাংবাদিকদের সেই অনৈক্যের কারণে সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পেছনের ঘটনা উন্মোচিত হয়নি, অপরাধীরা শাস্তি পায়নি। এখনো তনু হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে বলে আমরা আশা করছি তার একটা মাত্র কারণ আছে, একটাই মাত্র ভরসা আছে, সেটা হলো দেশজুড়ে ছাত্ররা সজাগ রয়েছে। এই সজাগটাই হচ্ছে ভরসা এবং এর ওপরই ভরসা করে আমরা আছি, টিকে আছি এবং আমরা ভাবছি যে, আমাদের সুদিন আসবে। আমাদের দেশে যে ব্যবস্থা বিদ্যমান সেই ব্যবস্থাটাকে চিহ্নিত করার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে একে পুঁজিবাদী নাম দেয়া। এক সময়ে পুঁজিবাদের কিছু কিছু ভালো দিক ছিল। সেই দিকগুলো আমাদের দেশে আমরা দেখি না। পুঁজিবাদ উৎপাদন বৃদ্ধি করে, পুঁজিবাদ বিনিয়োগকে উৎসাহিত করে, পুঁজিবাদ মতপ্রকাশের এক প্রকারের স্বাধীনতা দেয়। আমাদের দেশে সেই গুণগুলো আমরা দেখতে পাচ্ছি না। আমরা যা দেখতে পাচ্ছি সেটা হলো পুঁজিবাদের সবচেয়ে নিকৃষ্ট দিকগুলোই। আমার দেখতে পাচ্ছি বিচ্ছিন্নতা, আমরা দেখতে পাচ্ছি ভোগবাদিতা, আমরা দেখতে পাচ্ছি নিপীড়ন। আর এই যে বিচ্ছিন্নতার বিষয় এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৭১ সালে ওই যে হানাদাররা গণহত্যা করেছে আমাদের দেশে, তারা আশা করেছিল যে আক্রান্ত মানুষগুলো পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হবে। প্রত্যেকে নিজের কথা ভাববে, নিজের স্বার্থ দেখবে, নিজের জান বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করবে। আমরা যে তাদের তাড়িয়ে দিতে পেরেছি সেটার কারণ হচ্ছে একটাই। কারণ হলো আমরা বিচ্ছিন্ন হইনি, আমরা ঐক্যবদ্ধ ছিলাম। এই ঐক্যই ছিল সে দিন শক্তি। বিচ্ছিন্নতার বিষয়টিকে নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। বিচ্ছিন্নতা এবং একাকীত্ব এক জিনিস নয়। উদাহরণ দিলে পরিষ্কারভাবে দেখতে পাব। সাহিত্যে দুটো খুব বিখ্যাত চরিত্র আছে। দুজনেই তরুণ। একজনের নাম রবিনসন ক্রুসো আর একজনের নাম হ্যামলেট। আমরা দেখি যে রবিনসন ক্রুসো অল্প বয়সে একটা নির্জন দ্বীপে সাঁতরিয়ে গিয়ে উঠেছিল। তার জাহাজ ডুবে গেছে, সাঁতরিয়ে একাকী সেই নির্জন দ্বীপে এই তরুণ এসে উঠেছে। একাকী অবশ্যই, কিন্তু বিচ্ছিন্ন নয়। রবিনসন ক্রুসোর হাতের কাছে কিছু হাতিয়ার ছিল যা ভগ্ন জাহাজটি থেকে সে উদ্ধার করে আনতে পেরেছে। সেগুলো উৎপাদনের কাজে লেগেছে। সে চাষবাস করেছে, মাছ ধরেছে, সে ছাগল পুষেছে, সে প্রকৃতির সঙ্গে বন্ধুত্ব করেছে, সে গাছের ফল সংগ্রহ করেছে। সে একটা তোতা পাখি সংগ্রহ করেছে। একজন মানুষকেও পেয়ে গেছে শেষ পর্যন্ত। তার একাকীত্ব ছিল, কিন্তু বিচ্ছিন্নতা ছিল না এবং এই তরুণ তার বিচ্ছিন্নতা দূর করার আরেকটি উপায় খুঁজে ছিল, সেটা হলো বাইবেল পড়া। এই যে মানুষ ধর্মের দিকে ঝোঁকে তার মূল কারণ হচ্ছে বিচ্ছিন্নতা। মানুষ যখন চারদিকে কোনো আশা দেখে না, কেবল বিপদ দেখে, কেবলি শত্রু দেখতে পায় অন্যকিছু না দেখে, তখন সে ধর্মের কাছে আশ্রয় খোঁজে। রবিনসন ক্রুসোর ক্ষেত্রেও সেটা ঘটেছিল। রবিনসন ক্রুসো চতুর্দিকে অন্ধকার দেখেছে, নিঃসঙ্গ নির্জন দ্বীপ, কিন্তু সেখানে বাইবেল পড়ে সে সান্ত্বনা পেয়েছে এবং নিজের বিচ্ছিন্নতা কিছুটা দূর করতে পেরেছে। আমরা এর বিপরীতে আর একটি চরিত্র দেখি। অত্যন্ত পরিচিত চরিত্র, শেক্সপিয়ারের হ্যামলেট। হ্যামলেট কিন্তু একাকী ছিল না। হ্যামলেট ছাত্র, হ্যামলেট তখনকার দিনের জার্মানিতে সবচেয়ে বিখ্যাত যে বিশ্ববিদ্যালয় উইটেনবার্গ, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। হ্যামলেট দর্শনের ছাত্র। হ্যামলেটের বন্ধু আছে, হ্যামলেট নাটক লিখতে পারে, অভিনয় করতে পারে, তলোয়ার চালাতে পারে। তার আছে উদ্ভাবনী শক্তি। মেধাতে হ্যামলেট তার ওই রাজ্যে, ডেনমার্কের ওই রাজ্যে, সবচেয়ে উচ্চ পর্যায়ের মানুষ। কিন্তু হ্যামলেট দেখছে সে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। এই যে ভিড় চতুর্দিকে তার, মানুষ আছে, অনেক মানুষ, রাজপুত্র সে, সবাই তার সমর্থক, কিন্তু সে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তার পিতা মারা গেছে, রটিয়ে দেয়া হয়েছিল যে পিতাকে সাপে কামড়েছে। তার পিতা মারা যাওয়ার পরে তার চাচা রাজা হয়েছে এবং তার মা, হ্যামলেটের মা, নতুন রাজাকে বিয়ে করেছে। এসব ঘটনা হ্যামলেটকে বিচলিত করছিল। এর মধ্যে হ্যামলেটের বাবার প্রেতাত্মা এসে দেখা দিল এবং বলল যে আমি খুব কঠিন যন্ত্রণায় দগ্ধ হচ্ছি, তুমি যদি এর প্রতিশোধ না নাও তাহলে আমার এই দুর্ভোগ, এই যন্ত্রণা দূর হবে না। ঘটনা কী? প্রেতাত্মা বলল সাপে কাটেনি আমাকে। আমাকে ওই যে দুর্বৃত্ত, তোমার পিতৃব্য, তোমার চাচা, সেই হত্যা করেছে। আমার কানের ভেতর বিষ ঢেলে দিয়েছিল। বাগানে আমি ঘুমাচ্ছিলাম। এটার তুমি প্রতিশোধ নেবে এবং বলল কিন্তু তুমি তোমার মাকে যন্ত্রণা দেবে না। হ্যামলেট তার মাকে ভালোবাসে, পিতাকে ভালোবাসে এবং সে দেখতে পাচ্ছে যে, একটি দুর্বৃত্ত তার পিতাকে হত্যা করেছে, তার মাকে বিয়ে করেছে এবং মায়ের বিয়ে সে কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না কেননা সে মনে করে তার মায়ের সঙ্গে তার চাচার সম্পর্কটা হওয়া উচিত ছিল আপন ভাই-বোনের সম্পর্ক। ভাই-বোনের জায়গাতে সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রীর, সেটা অত্যন্ত অপবিত্র একটা সম্পর্ক। হ্যামলেট তাই প্রতিশোধ নেবে। কিন্তু কী করে প্রতিশোধ নেবে? সে তো একা হয়ে যাচ্ছে। সে দেখতে পাচ্ছে যে, যদি রাজাকে সে হত্যা করে তাহলে একটা রাজা গেল ঠিকই, কিন্তু অন্যায় তো দূর হলো না। সে দেখতে পাচ্ছে যে, সমস্ত দেশে যা ঘটছে সেটা হচ্ছে, সময় দুই টুকরো হয়ে গেছে এবং এই দুই টুকরো সময়কে একত্রিত করার দায়িত্ব তার কাঁধে এসে পড়েছে, যে রাজা সে দুর্বৃত্ত, যে মা সে তার শত্রু। মা ওই দুর্বৃত্তকেই বিয়ে করেছে। হ্যামলেট দেখতে পাচ্ছে যে, যে মেয়েটিকে সে বিয়ে করবে- ওফিলিয়া- সে দুর্বলচিত্তের এবং ওফিলিয়ার পিতা নিজের কন্যাকে ব্যবহার করছে হ্যামলেটের ওপরে গুপ্তচরবৃত্তির জন্য এবং সে দেখতে পাচ্ছে তার অতি আপন দুজন স্কুলের বন্ধু, তারা তার বিরুদ্ধে চলে গেছে, তারা চর হয়েছে রাজার। সে তো লড়ছে ন্যায়ের জন্য, কিন্তু একাকী লড়ছে এবং তার কোনো সঙ্গী নেই। হতাশ হয়ে সে একবার ভাবল আত্মহত্যা করবে। কিন্তু দেখল যে আত্মহত্যা করেও তো মুক্ত হবে না। যদি এমন হয় যে মরার পরে দুঃস্বপ্ন হিসেবে এই বাস্তব জগত তাকে তাড়া করে? তাহলে কী হবে? একবার সে সুযোগ পেয়েছিল রাজাকে হত্যা করার। রাজা প্রার্থনা করছিল। কিন্তু সে হত্যা করল না। হত্যা করল না এ জন্য যে, প্রার্থনারত অবস্থায় রাজাকে হত্যা করলে রাজা হয়তো স্বর্গে চলে যাবে। ন্যায়-অন্যায়ের যুদ্ধ চলছে। হ্যামলেট দেখতে পাচ্ছে সে একাকী ন্যায়ের পক্ষে লড়ছে। কেউ তার সঙ্গে নেই। সবাই তার বিরুদ্ধে এবং ঘটনাক্রমে সে আবার একজনের পিতৃহন্তা হয়ে পড়ল। যে ওফেলিয়াকে তার বিয়ে করার কথা, সেই ওফেলিয়ার পিতাকে সে হত্যা করে ফেলল। বিচ্ছিন্নতার চরম একটা দৃষ্টান্ত আমরা দেখলাম। এই তরুণ অভ্যুত্থান ঘটাতে পারত। এই তরুণের পক্ষে রাজ্যের সবাই ছিল, কিন্তু তরুণ অভ্যুত্থান ঘটাতে পারেনি। সে একা, নিজের কথা ভেবেছে, সে সব দায়িত্ব একা নিল এবং শেষ পর্যন্ত সে মারা গেল। এখানে যে সত্যটা উন্মোচিত হলো সেটা হলো এই যে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে একজন মানুষ যদি একাকী লড়াই করে তাহলে সে জয়ী হবে না। তাকে সংঘবদ্ধ হতে হবে। হ্যামলেট ওই কাজটা করতে পারেনি। আমরা যে ব্যবস্থার মধ্যে আছি সেটা হ্যামলেটের ডেনমার্কের মতোই অন্যায় ব্যবস্থা। এখানে আজ কোনো প্রকার নিরাপত্তা নেই। আমরা যদি এই ব্যবস্থাটাকে বদলাতে চাই তাহলে একা কেউ পারব না। সংঘবদ্ধ হতে হবে এবং সেখানে সংগঠনের প্রয়োজন। আমরা আন্দোলন দেখেছি, স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন দেখেছি, কিন্তু বাংলাদেশে যেটা প্রয়োজন সেটা হচ্ছে সমাজ পরিবর্তনের সংঘটিত সুষ্ঠু আন্দোলন। ধারাবাহিক আন্দোলন। আমরা মুক্তির যে স্বপ্নের কথা ভেবেছিলাম সেই স্বপ্ন সফল হয়নি। তার কারণ হচ্ছে আমরা পুরনো ব্যবস্থাটাকে বদলাইনি। আমরা রাষ্ট্র বদলিয়েছি। একবার ১৯৪৭-এ রাষ্ট্র বদলালাম, দেশভাগ করলাম। ৭১’ এ দেশ স্বাধীন হলো। রাষ্ট্র ছোট হলো, কিন্তু রাষ্ট্রের চরিত্র বদল হলো না। মানুষের মুক্তি এল না। তার কারণ হচ্ছে সমাজে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটল না। সমাজ মানে অনেকগুলো সামাজিক সম্পর্ক, সেই সম্পর্কগুলো বদলালো না। সম্পর্ক রয়ে গেল প্রভু এবং ভৃত্যের, সম্পর্ক রয়ে গেল ধনী এবং দরিদ্রের এবং এই ভৃত্য ও দরিদ্র এখন নিপীড়িত হচ্ছে।

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী : ইমেরিটাস অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App