×

খেলা

ওপেনিংয়ে সৌম্যই ভরসা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:৪৭ পিএম

ওপেনিংয়ে সৌম্যই ভরসা

ছবি: সংগৃহীত

তিনি আসলেন, দেখলেন এবং জয় করলেন- কথাটি যেন হুবুহু মিলে যায় সৌম্য সরকারের সঙ্গে। ২০১৪ সালের শেষদিকে বাংলাদেশ সফরে এসেছিল জিম্বাবুয়ে। সেবার ৫ ম্যাচ সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে টাইগার স্কোয়াডে জায়গা পেয়েছিলেন সৌম্য। ক্যারিয়ারের অভিষেক ম্যাচে তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে করেন ২০ রান। বড় ইনিংস খেলতে না পারলেও সৌম্যর আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিংয়ের ধরন নজর কাড়ে সবার। যে কারণে ২০১৫ সালের বিশ^কাপ দলে ডাক পান সৌম্য সরকার। বিশ্বকাপে গিয়ে সৌম্য দেন নিজের সামর্থ্যরে প্রমাণ। ৬ ম্যাচে করেন ১৭৫ রান। একাদশ বিশ্বকাপ শেষে ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলে বাংলাদেশ। ওই সিরিজে তামিমের সঙ্গে ওপেন করতে নেমে ৩ ম্যাচে ৮২ গড়ে ১৬৪ রান করেন সৌম্য। তার ব্যাটিংয়ের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো প্রচণ্ড চাপের মুখেও দ্রুতগতিতে রান তোলা। আর শট খেলার মানসিকতা। যে কারণে অল্প সময়েই সবার মন জয় করে নেন তিনি। মারকুটে এই ব্যাটসম্যানের টেস্ট অভিষেকের জন্যও বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয়নি। ২০১৫ সালের এপ্রিলেই সাদা পোশাকে অভিষেক হয় তার। আফগানদের বিপক্ষে আসন্ন চট্টগ্রাম টেস্টে দেশসেরা ওপেনার তামিম খেলছেন না। আর তামিমের অনুপস্থিতিতে টাইগারদের ওপেনিংয়ে বাড়তি দায়িত্ব সামলাতে হবে সৌম্যকে। তাই বলা যায়, আফগানদের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে ওপেনিংয়ে সৌম্যই বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে বড় ভরসা।

সৌম্য সরকারের টেস্ট ক্যারিয়ারটা ওয়ানডের মতো অতটা সমৃদ্ধ নয়। গত ৪ বছরে খুব বেশি টেস্ট খেলা হয়নি তার। এখন পর্যন্ত মাত্র ১৪টি টেস্ট খেলেছেন বাঁ-হাতি এই ওপেনার। আগেই বলা হয়েছে, সৌম্য মারমুখী মেজাজে ব্যাটিং করেন। যেটা টেস্ট ক্রিকেটের সঙ্গে একেবারেই যায় না। আর কেবল এ কারণেই অনেক ম্যাচে একাদশ থেকে ছিটকে যেতে হয়েছে এই ওপেনারকে। এ ছাড়া ফর্মহীনতার কারণেও কয়েকটি ম্যাচে দলে জায়গা হারিয়েছেন তিনি।

২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টেস্ট অভিষেক হয় সৌম্যর। সেবার ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত ২ ম্যাচের সিরিজে ৪ ইনিংসে মাত্র ৭০ রান করেন তিনি। ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্টে ভারতের বিপক্ষে করেন ৩৭ রান। সাদা পোশাকে সৌম্য প্রথমবার আস্থার প্রতিদান দেন ২০১৭ সালে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাদেরই মাটিতে একটি টেস্টে উভয় ইনিংস মিলে ১২২ রান করেন তিনি। এরপর আবারো ছন্দপতন। পরের টেস্টগুলোতে উভয় ইনিংস মিলিয়ে তার রান যথাক্রমে ৫৭, ১২৪, ৭১, ২৩, ৪২, ৯, ১১ ও ১৯।

তবে বাংলাদেশ দলের সর্বশেষ টেস্ট সিরিজে সৌম্য নিজেকে নতুন করে চিনিয়েছেন। গত মার্চে নিউজিল্যান্ড সফরে ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলে টাইগাররা। ওই সিরিজের প্রথম টেস্টের ২য় ইনিংসে ১৪৯ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলেন তিনি। যা তার ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি। ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি সবসময় বিশেষ কিছু। আর সেটা যদি হয় নিউজিল্যান্ডের মতো কঠিন কন্ডিশনে তাহলে মাহাত্ম্যটা আরো বহুগুণ বেড়ে যায়। সৌম্যর এই ইনিংসটির মাহাত্ম্য তাই অনেক বেশি। এ ছাড়া ওই ম্যাচে তিনি ১০০ পূর্ণ করেন মাত্র ৯৪ বলে। যা টেস্টে বাংলাদেশের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড।

সৌম্য সরকার এখন আর তরুণ ক্রিকেটার নেই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার পথচলা দীর্ঘ চার বছরেরও বেশি সময়ের। স্বাভাবিকভাবেই সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিজ্ঞতা বেড়েছে তার। আফগানিস্তানের বিপক্ষে তামিম নেই, ছেলের ডেঙ্গু হওয়ার কারণে স্কোয়াডে রাখা হয়নি আরেক অভিজ্ঞ ওপেনার ইমরুল কায়েসকেও। এই দুজনের অনুপস্থিতিতে তরুণ সাদমান ইসলামের সঙ্গে ইনিংস ওপেন করবেন সৌম্য সরকার। সাদমান এখনো তরুণ। তাই চাপটা বেশি থাকবে সৌম্যর ওপরই। সেই চাপ তিনি কতটা সামলাতে পারেন সেটাই এখন দেখার পালা।

এ পর্যন্ত ১৭টি ইনিংসে ওপেন করতে নেমেছেন এই বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান। যেখানে ২৮.২৯ গড়ে তার রান ৪৮১। সর্বোচ্চ ৮৬। পরিসংখ্যানের বিচারে ওপেনিংয়ে সৌম্যর পারফরমেন্স মোটেই উজ্জ্বল নয়। কিন্তু আফগানদের বিপক্ষে নিশ্চয় ওপেনিংয়ে দারুণ কিছু উপহার দেবেন তিনি- এমনটিই প্রত্যাশা সবার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App