×

জাতীয়

বাবাকে হত্যাকারী সাজানোর অভিযোগ সিআইডির বিরুদ্ধে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০১৯, ০২:০৫ পিএম

বাবাকে হত্যাকারী সাজানোর অভিযোগ সিআইডির বিরুদ্ধে
ছেলে হত্যার আসামিদের মুক্তি দিতে নিহতের বাবাকে পিটিয়ে হত্যাকারী সাজানোর অভিযোগ উঠেছে শেরপুর সিআইডি পুলিশের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, মামলার সাক্ষীদেরও পিটিয়ে উল্টো সাক্ষ্যগ্রহণ করা হচ্ছে। এই অবস্থায় ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে ষড়যন্ত্রের শিকার নির্দোষ স্বামীর মুক্তি চেয়ে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি ও সিআইডি প্রধানের হস্তক্ষেপ কামনা করছে একটি পরিবার। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শেরপুর জেলার নকলা থানার বাছুর আলগা উত্তরপাড়া এলাকার বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশীদের সঙ্গে আমার স্বামী লাল মিয়ার জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। সম্প্রতি একটি বিরোধের জের ধরে লাল মিয়া আদালতে ১০৭ ধারায় মামলা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ওই প্রতিবেশীরা। তারা বলে ‘যখন আসামি হয়েছি তখন ওদের একটাকে হত্যা করেই আসামি হবো। এর কিছুদিন পর গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে আমার নাবালক ছেলে নয়নকে (১২) আসামিরা হত্যা করে পাশের একটি ডুমুর গাছের সঙ্গে গলায় রশি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখার চেষ্টা করে। এ সময় তাদের শব্দ শুনে আমার স্বামী টর্চলাইট জ্বালাতেই আসামিরা পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় নকলা থানায় মুনছর আলী, রুস্তম আলী, জরিপ উদ্দিন, কালা মিয়াসহ অজ্ঞাত আরো ২/৩ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় চার আসামিকেই গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিন্তু হঠাৎ করে আসামির ঘনিষ্ঠ আত্মীয় শেরপুর জেলা সিআইডির এসআই তরিকুল ইসলাম মামলাটি সিআইডিতে নিয়ে নিজেই তদন্তের নামে চরম অনিয়ম শুরু করেন। এই নিয়ে অভিযোগ দেয়া হলে মামলার তদন্ত নেন সিআইডির এসআই সজিব। তিনি মামলার সাক্ষী আনিচ মিয়া, রিপন মিয়াকে সিআইডি কার্যালয়ে নিয়ে বেধড়ক মারধর করে মিথ্যা সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। তিনি সাক্ষীদের বলতে বাধ্য করেন যে আসামিরা নয়, বাবাই ছেলেকে হত্যা করেছে। পুলিশের নির্যাতনে আনিচ ও রিপন মিথ্যা সাক্ষ্য দেন। পুলিশ নিহত নয়নের বাবা মামলার বাদী লাল মিয়া ও তার স্ত্রী মনোয়ারাকে একই কথা স্বীকার করাতে গত সোমবার ২৬ তারিখ রাতে সিআইডি কার্যালয়ে নিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। পরে মনোয়ারাকে ছেড়ে দিলেও লাল মিয়াকে আটক রেখে ব্যাপক নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। মনোয়ারা বলেন, আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার কথা বলে এসআই সজিব তাদের কাছ থেকে দুই দফায় চার লাখ টাকা নেন। কিন্তু পরে আসামিদের কাছ থেকে আট লাখ টাকা নিয়ে মামলা ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করতে এমন নিষ্ঠুর নাটক সাজান। যে লোকটা তিন মেয়ের পরে হওয়া অনেক আকাঙ্খার ছেলেকে হারিয়ে শোকে পাথর, তাকেই ছেলের হত্যাকারী সাজাতে এমন ষড়যন্ত্র করছে পুলিশ। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত দুই সাক্ষী আনিচ মিয়া ও রিপন মিয়া বলেন, তাদের শেরপুর সিআইডি কার্যালয়ে নিয়ে এসআই সজিব মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়ার জন্য ব্যাপক মারধর করেন। মারের যন্ত্রণায় টিকতে না পেরে তার শেখানো মতো মিথ্যা সাক্ষ্য দেন। এরপর তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এসআই সজিব মোবাইলে সাংবাদিকদের বলেন, তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগই মিথ্যা। প্রকৃতপক্ষে নয়নের মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটনের জন্য তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে যেসব তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তাই নিয়ে কাজ করছে সিআইডি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App