বঙ্গবন্ধুর মহান সংগ্রামী জীবনভিত্তিক ঐতিহাসিক নাট্যাখ্যান ‘মুজিব মানে মুক্তি’। আবহমান বাংলার হাজার বছরের ইতিহাস, সংস্কৃতি, শোষণ-বঞ্চনা, দ্রোহ ও মুক্তির স্বপ্ন বিনির্মাণ এই নাটকের মূল উপপাদ্য। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, তেইশ বছরের পাকিস্তানি অপশাসন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছরে দেশ গঠন এবং তার মহাপ্রয়াণ এই নাটকের উপাত্ত। এ ছাড়া ‘মুজিব মানে মুক্তি’ নাটকে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ধারাবাহিক ইতিহাসের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর শৈশব, কৈশোর, যৌবন, মহান সংগ্রামী জীবন ও মহাপ্রয়াণ ক্রমান্বয়ে সন্নিবেশিত হয়েছে। পাকিস্তানি হানাদারদের সহযোগী যুদ্ধাপরাধীদের হিংস্র চিত্রও তুলে ধরা হয়েছে নাটকটিতে। তাই ‘মুজিব মানে মুক্তি’ নাটকটি ইতিহাস, বঙ্গবন্ধুর জীবন নিয়ে রচিত বিশেষ প্রযোজনা। এর গ্রন্থনা, পরিকল্পনা, সুর সংযোজনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন নাট্যকার লিয়াকত আলী লাকী। বঙ্গবন্ধু স্মরণে শিল্পকলা একাডেমির মাসব্যাপী বিভিন্ন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রদর্শিত হবে ‘মুজিব মানে মুক্তি’। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল বুধবার নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয় গোপালগঞ্জের শেখ মনি অডিটোরিয়াম, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় শহীদ স্মৃতি কলেজ এবং ঢাকার সরকারি বাঙলা কলেজে। গোপালগঞ্জে উদ্বোধনী প্রদর্শনীতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা। এ সময় গোপালগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী এমদাদুল হক, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এহিয়া খালেদ সাদী, জেলা কালচালার অফিসার আল মামুন বিন সালেহ উপস্থিত ছিলেন। একাডেমি জানায়, নাটকটির মাসব্যাপী প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা, মৌলভীবাজার, ঝিনাইদহ, গাজীপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ২০টি স্থানে। নাটকটিতে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ধারাবাহিক ইতিহাসের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর শৈশব, কৈশোর, যৌবন, মহান সংগ্রামী জীবন ও মহাপ্রয়াণ ক্রমান্বয়ে সন্নিবেশিত হয়েছে। পাকিস্তানি হানাদারদের সহযোগী যুদ্ধাপরাধীদের হিংস্র চিত্রও তুলে ধরা হয়েছে নাটকটিতে। নির্দেশক লিয়াকত আলী লাকির ভাষ্যে, ইতিহাসনির্ভর নাট্য নির্মাণ চিরকালই কঠিন কাজ। আর একজন মহাপুরুষের সংগ্রামী জীবন নিয়ে শিল্প নির্মাণ আরো কঠিন। ইতিহাসের সত্যের চেয়ে শিল্পের সত্য অনেক বেশি শক্তিশালী। একটি আবেগ আশ্রিত কাব্যিক শিল্প উপস্থাপন ‘মুজিব মানে মুক্তি’। লিয়াকত আলী লাকী আরো জানান, নাটকে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও রাজনৈতিক দর্শন, স্বপ্ন ও সংগ্রাম, তার নানা সময়ের বক্তৃতা, সঙ্গীত, কোরিওগ্রাফ ও কবিতার মধ্য দিয়ে উপস্থাপিত হয়েছে। এ ছাড়া ফিজিক্যাল থিয়েটারের উপাদান এবং বিভিন্ন ইমেজেরও ব্যবহার রয়েছে নাটকটিতে।