×

মুক্তচিন্তা

বেপরোয়া চালকদের থামাবে কে?

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০১৯, ০৯:৩০ পিএম

কে লাগাম টানবে বেপরোয়া গাড়িচালকদের? রাজধানীর বাংলামোটরে মঙ্গলবার ফুটপাতে দাঁড়ানো এক নারীর বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়েছে ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসের একটি বেপরোয়া গতির বাসের চাপায়। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাস দুর্ঘটনায় কেউ হাত কিংবা পা হারাচ্ছেন আবার কারো প্রাণ যাচ্ছে। সম্প্রতি এ ধরনের ঘটনা বাড়লেও চালকদের সতর্কতা নেই বললে চলে। বিশেষ করে রাজধানীতে বাস চলাচল বিপজ্জনক। রাজধানীর গণপরিবহনে নৈরাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি দেয়া জরুরি। জানা যায়, দুপুর আড়াইটার দিকে কৃষ্ণা রায় বাংলামোটরে রাস্তার পূর্বপাশে ফুটপাতে দাঁড়িয়েছিলেন। কারওয়ান বাজারের দিক থেকে আসা একটি বেপরোয়া গতির বাস ফুটপাতে উঠে কৃষ্ণা রায়কে ধাক্কা দেয়। এ সময় তিনি পড়ে গেলে বাসের একটি চাকা তার বাম পায়ের ওপর দিয়ে চলে যায়। এতে তার বাম পা হাঁটুর নিচ থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে শুধু চামড়ার সঙ্গে ঝুলে ছিল। দুর্ঘটনার পর কৃষ্ণা রায়কে উদ্ধার করে প্রথমে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাকে পঙ্গু হাসপাতালে নেয়া হয়। বিকেলে চিকিৎসক অস্ত্রোপচার করে হাঁটু থেকে বাঁ পা কেটে ফেলেন। গত বছরের ৩ এপ্রিল বাংলামোটরের অদূরেই কারওয়ান বাজার ক্রসিংয়ে দুই বাসের পাল্লায় চাপা পড়ে হাত বিচ্ছিন্ন হয় সরকারি তিতুমীর কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাজীব হোসেনের। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। ওই ঘটনার কয়েক দিন পরই মহাখালী এলাকায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে পা হারিয়েছিলেন গৃহকর্মী রোজিনা আক্তার। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনিও। প্রায় একই সময়ে বাসের চাকায় পা বিচ্ছিন্ন হয় প্রাইভেটকারের চালক রাসেলের। তিনি এখন পঙ্গু জীবনযাপন করছেন। এসব ঘটনায় আদালত জরিমানা ও সতর্ক করলেও আবারো ঢাকায় ঘাতক বাসের চাকায় পা গেল নারী কর্মকর্তা কৃষ্ণার। এমন দুর্ঘটনা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ পরিবহন খাতে বিরাজমান বিশৃঙ্খলা। বেতনভুক্ত চালক দিয়ে লোকাল (বাস) গাড়ি চালালে মালিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে নগরীর অধিকাংশ পরিবহন মালিক তাদের বাস-মিনিবাস চালককে চুক্তিতে চালাতে দিচ্ছে। চুক্তির কারণেই চালকরা বেপরোয়া। কারণ একই রুটের যে বাস আগে শেষ গন্তব্যে পৌঁছাবে সে-ই ফিরতি ট্রিপের সিরিয়াল পাবে। এ কারণে একই রুটের বাসের মধ্যেই ভয়াবহ মরণ রেস দেখা যায়। আর এ প্রতিযোগিতার কারণেই পরিণতি হয় দুর্ঘটনা। সড়ক ব্যবস্থাপনার চিত্র এক কথায় ভয়াবহ। সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা কঠিন কোনো বিষয় নয়। এ জন্য দরকার ইতিবাচক চিন্তা ও সমন্বিত পদক্ষেপ। সড়কপথে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হলে দুর্ঘটনার হার অনেক কমে আসবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। এ জন্য পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের পাশাপাশি যাত্রীদের সচেতন হতে হবে এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগও নিশ্চিত করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App