×

অর্থনীতি

বাংলাদেশের উন্নয়ন বরাদ্দ কাটছাঁট করছে বিশ্বব্যাংক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ আগস্ট ২০১৯, ০৩:২০ পিএম

বাংলাদেশের উন্নয়ন বরাদ্দ কাটছাঁট করছে বিশ্বব্যাংক
দেশের সার্বিক উন্নয়নে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রভাব পড়ছে। বাংলাদেশের উন্নয়নে সবচেয়ে বড় সহযোগী বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের উন্নয়ন বরাদ্দের অর্থ কাটছাঁট করে রোহিঙ্গাদের দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরই মধ্যে রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে ধীরগতির প্রকল্প থেকে অর্থ প্রত্যাহার শুরু করেছে বিশ্বব্যাংক। এরই অংশ হিসেবে অতিদরিদ্র অন্তঃসত্ত্বা নারী ও শূন্য থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টিসেবা প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থ থেকে ৪০০ কোটি টাকা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে তারা। বিশ্বব্যাংক বলছে, রোহিঙ্গাদের কারণে চাপ বেড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের ওপর। এখন তাদের উন্নয়নে ব্যাপক অর্থ প্রয়োজন। এ জন্য চলমান ধীরগতির প্রকল্প থেকে অর্থ প্রত্যাহার করে ওই অঞ্চলের উন্নয়নে ব্যয় করা হবে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রোহিঙ্গারা না এলে প্রকল্পের অর্থ প্রত্যাহার করে ওই অঞ্চলে বিনিয়োগ করত না বিশ্বব্যাংক। এই মুহূর্তে হয়তো প্রয়োজনও পড়ত না। এখন বাধ্য হয়েই তা করতে হবে। ফলে অগ্রাধিকারভুক্ত উন্নয়ন কিছুটা বাধাগ্রস্ত হবে। সার্বিক উন্নয়নে ব্যয়ও বাড়বে। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগকে (ইআরডি) স¤প্রতি চিঠি দিয়ে জানায়, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কারণে চাপ বেড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের ওপর। এখন তাদের সহায়তার জন্য অতিরিক্ত ৩০ কোটি ডলার প্রয়োজন। স্থানীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। এ জন্য চলমান ধীরগতির প্রকল্প থেকে অর্থ প্রত্যাহার করে ওই অঞ্চলের উন্নয়নে ব্যয় করা হবে। ২০১৫ সালে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় অতিদরিদ্র অন্তঃসত্ত্বা নারী ও শূন্য থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টিসেবা বাবদ একটি প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। এতে বিশ্বব্যাংক সহজশর্তে ৩০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। ‘ইনকাম সাপোর্ট প্রোগ্রাম ফর দ্য পুওরেস্ট’ প্রকল্পটির মাধ্যমে বর্তমানে প্রায় ৩ লাখ নারী ও শিশু উপকারভোগী হিসেবে সুবিধা পাচ্ছে। কিন্তু বিশ্বব্যাংক এখন এই প্রকল্প থেকে ৫ কোটি ডলার বা ৪০০ কোটি টাকা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয়রা ব্যাপক চাপের মধ্যে পড়েছে। এখন রোহিঙ্গারা যেহেতু এসেই পড়েছে, যেতেও চাচ্ছে না। এ জন্য বাধ্য হয়েই স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য এই অর্থ ব্যয় করতে হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, বিশ্বব্যাংক আগে ধীরগতির প্রকল্প থেকে অর্থ প্রত্যাহার করে নিলেও অন্যান্য অগ্রাধিকার প্রকল্পে তা ব্যয় করার সুযোগ ছিল। রোহিঙ্গাদের কারণে এখন এই সহজ শর্তের ঋণ কক্সবাজার এলাকায় ব্যয় করতে হচ্ছে। এ জন্য পরোক্ষভাবে হলেও রোহিঙ্গাদের কারণেই অন্যান্য অগ্রাধিকার প্রকল্পে প্রভাব পড়ছে। আইএসপিপি প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা ও রংপুর বিভাগের সাত জেলার ৪২ উপজেলার পাঁচ লাখ নারীর এই নগদ সহায়তা পাওয়ার কথা। জেলাগুলো হলো- গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, জামালপুর, শেরপুর ও ময়মনসিংহ। ২০১৫ সালে নেয়া এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা। এর মধ্যে মাত্র ১৬ কোটি টাকা দেবে সরকার। বাকি টাকার পুরোটাই বিশ্বব্যাংক সহজ শর্তে ঋণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App