×

জাতীয়

ডিজিটাল ট্রাফিকিং কত দূর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০১৯, ১০:৩৬ এএম

ডিজিটাল ট্রাফিকিং কত দূর
পুলিশের অনেক ক্ষেত্রেই ডিজিটালাইজেশনের ছোঁয়া লাগলেও এখনো অ্যানালগ সিস্টেমে রয়ে গেছে ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা। তিলোত্তমা ঢাকা মহানগরীর যানবাহন নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে পুরনো পদ্ধতির হাত উঁচিয়ে। এমন অ্যানালগ পদ্ধতিতে রাজধানীর লাখো যানবাহন নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। তবে ঢাকা সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থার আধুনিকায়নে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ ৬২টি পয়েন্টে আধুনিক প্রযুক্তির সিগন্যাল বাতি, টাইমার কাউন্টডাউন যন্ত্র স্থাপন এবং রিমোট কন্ট্রোল মেশিন বসানো হয়েছে, যা কার্যকরও রয়েছে। কিন্তু পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ বলছে ভিন্ন কথা। তারা বলছেন, সর্বশেষ ৬টি ইন্টারসেকশনে স্থাপন করা রিমোট কন্ট্রোল মেশিন ঠিকমতো কাজ করলেও বাকি ৫৬টি ইন্টারসেকশনের সব কন্ট্রোল প্ল্যান মেশিন নষ্ট, এগুলো কাজ করছে না। যার ফলে বাধ্য হয়েই হাতের ইশারায় যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করতে হচ্ছে। এ ছাড়া মানুষের অভ্যাসের পরিবর্তন আনতে সময় লাগছে বলেও দাবি করেন ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিগনাল বাতির রক্ষণাবেক্ষণকারী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ‘ক্লিন এয়ার এন্ড সাসটেইনেবল এনভায়রনমেন্ট’ (কেস) প্রকল্পের পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম ভোরের কাগজকে বলেন, ট্রাফিকিং ব্যবস্থা আধুনিকায়নে নেয়া প্রকল্পের বাস্তব কাজ চলতি বছরের ৩০ মার্চ শেষ হয় এবং গত ৩০ জুনের মধ্যে নগরীর ৬২টি পয়েন্টে টাইমার মেশিন ও রিমোট কন্ট্রোল যন্ত্র বসানোর কাজও সম্পন্ন হয়েছে। এখন কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব পুলিশের হাতে। তবে কোনো যন্ত্রে ত্রু টি দেখা দিলে সেটা দেখভাল করবে উভয় সিটি করপোরেশনের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। এদিকে মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন ভিন্ন কথা। তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, সর্বশেষ নগরীর মগবাজার, মৌচাক, মালিবাগ মোড়, মালিবাগ রেলগেট, শান্তিনগর ও রেইনবো এই ৬টি ইন্টারসেকশনে যে ৬টি রিমোট কন্ট্রোল মেশিন লাগানো হয়েছে, যেগুলো ভালোভাবে কাজ করছে। তবে এর আগে রাজধানীর অন্যান্য ৫৬টি ইন্টারসেকশনে যে রিমোট কন্ট্রোল মেশিন লাগানো হয়েছিল সেগুলোর কন্ট্রোল প্ল্যান মেশিন নষ্ট, এগুলো কাজ করছে না। মেশিনের সার্কিট নষ্ট থাকায় রিমোট কাজ করছে না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু যে ৬টি ইন্টারসেকশনে রিমোট কন্ট্রোল মেশিন কাজ করছে সেখানেও তো হাতের ইশারায় গাড়ি চলাচল করছে? এমন প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ৬টি ইন্টারসেকশনে নতুন লাগানো রিমোট কন্ট্রোল মেশিন ভালো কাজ করছে সত্য। কিন্তু মানুষের অভ্যাসের পরিবর্তন হতে সময় লাগছে। কেউই আইন মানতে চায় না। হঠাৎ করেই মানুষের দীর্ঘদিনে অভ্যাসের পরিবর্তন করা যায় না, এ জন্য দেরি হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ের ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, ঢাকা শহরের যানবাহনের চাপের বাস্তবতার কারণে ডিজিটাল ট্রাফিক সিগনাল মানা সম্ভব হচ্ছে না, যার কারণে আমরা বাধ্য হচ্ছি বাঁশি, হাত, লাঠির ইশারায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে। তারা আরো বলেন, প্রধান সড়কগুলোতে রিকশা চলাচলের কারণেও ডিজিটাল সিগনাল মানা সম্ভব হচ্ছে না। টাইমার মেশিনে কোনো সিগনালে ৬০ সেকেন্ড, কোনোটায় ৭০ সেকেন্ড দেয়া আছে। কিন্তু একটি রিকশা রাস্তার এক পাশ থেকে অপর পাশে যেতেই ৩০-৩৫ সেকেন্ড লাগে। সে ক্ষেত্রে এক সিগনালে ৩-৪টির বেশি রিকশা পার করা যাচ্ছে না, এর সঙ্গে মোটরযান রয়েছে। আবার সিগনাল দেয়ার আগেই রিকশা চালকরা রাস্তা পার হওয়ার চেষ্টা করে। একটা রিকশাকে থামাতে গেলে ওই সুযোগে অন্য ৫টা রিকশা চলে যাচ্ছে। বাসচালক, রিকশাচালক, পথচারী কেউই নিয়ম মানছে না। তাহলে সিগনাল মানাব কীভাবে?

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App