অমীমাংসিত ইস্যুগুলোর সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাধান হোক
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০১৯, ০৮:৩৮ পিএম
ভারতের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. সুব্রামনিয়াম জয়শঙ্কর ঢাকা সফর করে গেলেন। এই সফরকে ঘিরে নতুন প্রত্যাশার স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন এসেছে। গত ১০ বছরেরও বেশি সময়ে দুদেশের মধ্যে বহুল প্রত্যাশিত বিভিন্ন চুক্তির ফলে দুদেশের সম্পর্কের উচ্চতা ক্রমাগত বেড়েছে। ভবিষ্যতে ভারতের সঙ্গে অমীমাংসিত ইস্যুগুলোর সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাধান, নতুন আরো চুক্তি স্বাক্ষরসহ ঢাকা-দিল্লির ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে বলে আমরা প্রত্যাশা রাখছি। ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার আগে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সাংবাদিকদের বলেছেন, তার সফর অত্যন্ত উষ্ণ। খুব ভালো শুরু এবং অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই তিস্তা নদীর পানিবণ্টন নিয়ে প্রশ্ন আসে। সফরে বহুল আকাঙ্ক্ষিত তিস্তাসহ ৫৪ নদীর পানি বণ্টনের সুস্পষ্ট আশ্বাস না মিললেও দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে প্রাপ্তির খাতা একেবারে শূন্য নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। রোহিঙ্গা ইস্যু এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর আসাম রাজ্যের নাগরিক তালিকা (এনআরসি) নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে ভারত। গত মঙ্গলবার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ সংকট দীর্ঘায়িত হলে তা বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমারের জন্যও ঝুঁকির কারণ হবে। ভারত ও বাংলাদেশ উভয়ই একমত যে, রোহিঙ্গাদের সম্মানজনক এবং নিরাপদ প্রত্যাবাসন হতে হবে। নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে জয়শঙ্কর বলেন, দুদেশের জনগণের মধ্যে পরস্পরের দেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রটিকে সহজ করার ব্যাপারে বিশ্বাসী ভারত। জয়শঙ্কর এ সময় বাংলাদেশের জ্বালানি ক্ষেত্রে সহযোগিতায় তার দেশের আগ্রহ ব্যক্ত করেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী অক্টোবরে ভারতে দ্বিপক্ষীয় সফরের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এস জয়শঙ্কর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করেন। তার ঢাকা সফরের এগুলো সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ এবং কূটনীতিকরা। ভারতের সহযোগিতা আমাদের প্রয়োজন। তবে এ ক্ষেত্রে উভয় দেশের নেতৃত্বেরই সদিচ্ছা থাকতে হবে। ছিটমহল সমস্যা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতামূলক চুক্তির প্রেক্ষাপটে দুদেশের জনগণের প্রত্যাশা, তিস্তা চুক্তি সম্পাদনসহ অমীমাংসিত অন্য বিষয়গুলোরও দ্রুত সমাধান হবে। পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে দেশ দুটির মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অটুট থাকুক। দুদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক তথা সব ধরনের যোগাযোগ ও সহযোগিতা ক্রমেই জোরদার হোক- এমন প্রত্যাশা করছি।