×

মুক্তচিন্তা

রায় কার্যকর করে জাতিকে দায়মুক্ত করুন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০১৯, ০৮:৫৮ পিএম

আজ ভয়াল ২১ আগস্ট। ২০০৪ সালের এই দিনে ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে উপর্যুপরি গ্রেনেড হামলায় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী ও মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী বেগম আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন প্রায় ৪শ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ। একটি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বকে নিশ্চিহ্ন করার এই নৃশংস তৎপরতা নজিরবিহীন, ঘৃণ্য এবং ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। দীর্ঘ ১৪ বছর পর আলোচিত এই হামলার রায় হয়েছে। গত বছর ১০ অক্টোবর সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরী, সাবেক সাংসদ কায়কোবাদসহ ১৭ জনের যাবজ্জীবন দেয়া হয়েছে। এই রায়ে যোগ্য বিচার হয়েছে। এখন দ্রুত রায় কার্যকর করে জাতিকে দায়মুক্তি করতে হবে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে উপর্যুপরি এই গ্রেনেড হামলা হয়। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের কালো অধ্যায়ের পর এ ঘটনা জাতীয় রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বর্বরোচিত ঘটনা। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল করার এমন পাশবিক চেষ্টা সমকালীন বিশ্ব রাজনীতিতে বিরল। এটা স্পষ্ট যে, হত্যাকাণ্ডের মূল টার্গেট ছিলেন শেখ হাসিনা। এর আগে তিনি বহুবার হত্যার টার্গেট হয়েছিলেন। গণতন্ত্রকে রক্ষা, জঙ্গিবাদকে নির্মূল ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের বিকল্প নেই ভেবেই হামলাকারীরা তার নেতৃত্বকে ধ্বংস করার জন্য বারবার আঘাত করেছে। ঘৃণ্য ওই গ্রেনেড হামলার পর তৎকালীন সরকার অপরাধীদের রক্ষায় যে তোড়জোড় শুরু করে তা সভ্য সমাজে কল্পনা করাও কঠিন। আক্রান্ত আওয়ামী লীগকেই এ হামলায় জড়িত প্রমাণের চেষ্টা তখনকার তদন্তকে পরিণত করে প্রহসনে। প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা দিতে, তদন্ত ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ঘটনার আলামত নষ্টসহ হেন কোনো কাজ নেই যা করেনি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার। জজ মিয়া নামক এক অপ্রকৃতিস্থ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে আসামি বানানো ছাড়াও শৈবাল সাহা পার্থসহ ২২ জনকে বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার করে সাজানো স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য নির্যাতন ও হয়রানি করা হয়। এমনকি বিচার বিভাগীয় তদন্তের নামে মনগড়া রিপোর্ট তৈরি করা হয়। ওয়ান-ইলেভেনের পর সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সিআইডি প্রকৃত অর্থে তদন্ত শুরু করে এবং ২০০৮ সালে জোট সরকারের উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু ও তার ভাইসহ ২২ জনকে আসামি করে মামলার অভিযোগপত্র দেয়া হয়। তাতে হামলার জন্য মূলত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ বা হুজিকে দায়ী করা হয়। কিন্তু অভিযোগপত্রে গ্রেনেডের উৎস, মদদদাতা ও পরিকল্পনাকারীদের সম্পর্কে অনেক কিছুই অস্পষ্ট থেকে যায়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার এসে এর অধিকতর তদন্ত করে। ২০১১ সালের ৩ জুলাই সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। এরপর দুই অভিযোগপত্রের মোট ৫২ আসামির মধ্যে তারেক রহমানসহ ১৮ জনকে পলাতক দেখিয়ে বিচার শুরু হয়। অবশেষে রায়ও হয়েছে। এখন দরকার ঘাতকদের রায় কার্যকর করা। পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে এনে আইনের হাতে সোপর্দ করার উদ্যোগ নেয়া দরকার সরকারের।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App