×

জাতীয়

ডেঙ্গু আক্রান্ত অর্ধ লাখ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০১৯, ১১:৫৮ এএম

ডেঙ্গু আক্রান্ত অর্ধ লাখ

ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালগুলো রোগীদের ভিড়। গতকাল সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল থেকে তোলা ছবি -ভোরের কাগজ

দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে চলতি বছর। সারাদেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তিকৃত ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা অর্ধ লাখ অতিক্রম করেছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশে ২০০০ সালে সর্বপ্রথম ডেঙ্গু দেখা দেয়। দাবি করা হয় ওই বছর এই জ¦রে আক্রান্ত হয়ে ৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরপর মৃতের সংখ্যা ধীরে ধীরে প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে আসে। ২০০২ সালে সর্বোচ্চ ৬ হাজার ২৩২ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়। ২০১৬ সালে হঠাৎ করে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ৬০ জনে বৃদ্ধি পায়। সে বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা আবারো বাড়তে থাকে। ওই বছর এই রোগে ১৪ জনের মৃত্যু হয়। ২০১৭ সালে আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৭৬৯ জন ও মৃতের সংখ্যা ৮ জন। ২০১৮ সালে ১০ হাজার ১৪৮ জন আক্রান্ত হয় আর মারা যায় ২৬ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টার এন্ড কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গতকাল ১৬ আগস্ট পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৪৯ হাজার ৯৯৯ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছে ৪০ জন। চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪২ হাজার ২৪৩ জন অর্থাৎ আক্রান্তদের ৮৪ শতাংশ। রোগতত্ত¡, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. মাহমুদুর রহমান ভোরের কাগজকে বলেন, ডেঙ্গুর মৌসুম শুরু হয় এপ্রিলে। যা চলে অক্টোবর পর্যন্ত। গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরেই ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি থাকে। সেপ্টেম্বরের পর থেকে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা কমতে থাকে। কিন্তু এ বছর আগস্ট মাসের মাঝামাঝিতেই ডেঙ্গুতে যে সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়েছে তা অতীতের যে কোনো বছরের তুলনায় অনেক বেশি। আর সেপ্টেম্বর মাস তো পুরোটাই এখনো বাকি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা ভোরের কাগজকে বলেন, পরিস্থিতি কোনো দিকে যাচ্ছে তা বলা মুশকিল হয়ে পড়ছে। গত বছর ডেঙ্গুর ‘পিক সিজন’ (মৌসুম) ছিল সেপ্টেম্বরে। এ বছর তা কখন হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যার দিক দিয়ে এ বছর দেশের ইতিহাসের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। গতকাল শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. সানিয়া তাহমিনা বলেন, আগামী সপ্তাহে বোঝা যাবে ডেঙ্গু পরিস্থিতি কোনদিকে যাচ্ছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সরকার ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় জোর তৎপরতা চালাচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার এন্ড কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার বলেন, ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যার দিক দিয়ে অনান্য বছরের তুলনায় রেকর্ড ছাড়িয়েছে অনেক আগেই। তবে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ হাজার এটি দেশের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড স্থাপন হয়েছে। তবে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হলেও মৃতের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। ঢাকার সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত ৪০টি ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন বিভাগীয় হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত তথ্য দিয়ে কন্ট্রোল রুমের তথ্য প্রকাশ করা হয়। সেই অনুযায়ী, গত ২৪ ঘন্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ৭১৯ জন। এর মধ্যে ঢাকার ৭৫৯ এবং ঢাকার বাইরে ৯৬০ জন। মৃতের সংখ্যা ৪০ জন। আগস্ট মাসের ১৭ তারিখ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ৩১ হাজার ৫৩৮ জন। ঢাকার বাইরে মোট আক্রান্ত রোগী ১৮ হাজার ৬০৪ জন। ঢাকায় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছে ৭ হাজার ৭১৬ জন। আর ঢাকার বাইরে ৩ হাজার ৭০১ জন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App