কাশ্মীর ইস্যুতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে বৈঠক
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০১৯, ১২:১২ পিএম
জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপ করার ভারতীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে(ইউএনএসসি) জরুরি বৈঠক বসছে।
চীন ও পাকিস্তানের অনুরোধে শুক্রবার বৈঠকটি হচ্ছে বলে কূটনীতিকদের বরাতে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
৫ অগাস্টে নেওয়া এক সিদ্ধান্তে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে সেখানে নিজেদের আইন চালু করার ও স্থানীয় বাসিন্দা নন এমন নাগরিকদের সম্পত্তি কেনার সুযোগ করে দিয়েছে ভারত। ওই দিনটি থেকে কাশ্মীরের টেলিফোন লাইন, ইন্টারনেট ও টেলিভিশন নেটওয়ার্ক বন্ধ করে রেখেছে দিল্লি এবং লোকজনের অবাধ চলাচল ও জমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে।
এর প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার নিরাপত্তা পরিষদ বরাবর লেখা এক চিঠিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি ভারতের সিদ্ধান্ত নিয়ে বৈঠকে বসার জন্য নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানান।
চিঠিতে কুরেশি বলেছেন, “পাকিস্তান যুদ্ধের উস্কানি দিবে না। কিন্তু ভারত যেন আমাদের সংযমকে দুর্বলতা না ভাবে। ভারত যদি ফের শক্তি প্রয়োগ করার পথে যায়, আত্মরক্ষার জন্য সর্ব শক্তি নিয়ে পাকিস্তান জবাব দিতে বাধ্য হবে।”
তবে কোরেশি এ বৈঠককে পাকিস্তানের কূটনৈতিক বিজয় বলে মন্তব্য করেন।
এ ছাড়া কাশ্মীর ইস্যুতে পরিষদের অধিবেশন আহ্বানের অনুরোধ নিয়ে ফোনে কথা বলেছেন পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যাসেক ক্যাপটোউইজের সঙ্গে। জবাবে পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, দুটি দেশের মধ্যে বিরোধের সমাধান হতে পারে আলোচনার মাধ্যমে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও একই রকম কথা বলেছে।
এদিকে নিরাপত্তা পরিষদে চীন বলেছে, কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় রুদ্ধদ্বার বৈঠক হোক। অন্যদিকে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাশিয়া দু'পক্ষকে খোলা মন নিয়ে বসে পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করার পরামর্শ দিয়েছে।
জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে ভারত ও পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। কাশ্মীরের ভারতীয় অংশে বিধিনিষেধ আরোপের খবরে উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন মহাসচিব।
১৯৪৮ সালে ও ১৯৫০-র দশকে কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের বিরোধের বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। এর মধ্যে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গণভোট নেওয়ার কথাও ছিল।
আরেকটি সিদ্ধান্তে উভয়পক্ষকে “পরিস্থিতিকে আরও নাজুক করে তোলে এমন কোনো বিবৃতি ও কাজ না করার জন্য বা পদক্ষেপের অনুমোদন দেওয়া থেকে বিরত থাকার জন্য বলা হয়েছিল।”
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে অস্ত্রবিরতি পর্যবেক্ষণ করার জন্য ১৯৪৯ সাল থেকে জম্মু ও কাশ্মীরে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মোতায়েন আছে।