×

মুক্তচিন্তা

নির্বিঘ্ন ও স্বস্তিদায়ক হোক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০১৯, ০৯:২৭ পিএম

ঈদ উদযাপন শেষে মানুষ কর্মস্থলে ফিরছেন। আগামী কয়েকদিন ট্রেন, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালগুলোতে ফিরতি মানুষের ভিড় বাড়বে। এই সময়ে বিভিন্ন পথে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যায়। ঈদের ছুটিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ৩৮ জনের। এর মধ্যে রাজধানী, দিনাজপুর ও কুমিল্লায় চারজন করে; বগুড়ায় ও কুষ্টিয়ায় তিনজন করে; গাইবান্ধা, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর ও গোপালগঞ্জে দুজন করে; নাটোর, রংপুর, পটুয়াখালী, ময়মনসিংহ, ভোলা, টাঙ্গাইল, নওগাঁ, মাদারীপুর, মৌলভীবাজার ও খুলনায় একজন করে নিহত হয়েছেন। সড়ক দুর্ঘটনায় এ নিহতের সংখ্যাই বলে দিচ্ছে দেশের সড়ক-মহাসড়কে মৃত্যুর মিছিল থামেনি। বছরে দুটি ঈদ মুসলমানদের জীবনে সবচেয়ে বড় উৎসব। কর্মসংস্থানের প্রয়োজনে যে যেখানেই থাকুক না কেন, দুটি ঈদে অন্তত তারা নিজ নিজ পরিবার ও স্বজনদের কাছে ফিরে যায়। বরাবরের মতো এবার ঈদযাত্রায় টিকেটের ভোগান্তি ছিল। বিশেষ করে রেলে টিকেট পেতে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। অনলাইনে টিকেট সংগ্রহের ব্যবস্থা রাখলেও এটা খুব বেশি কাজে এসেছে বলে মনে হয় না। ধীরগতি সার্ভারের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষকে টিকেটের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে। অন্যদিকে বাসে বাড়তি ভাড়া আদায়ের ঘটনা এবার কম দেখা গেছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট মহাসড়কে মানুষ স্বস্তিতে ঘরে ফিরেছে। তবে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বরাবরের মতো সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। নদীপথে যাত্রা ছিল স্বাচ্ছন্দ্যের। সার্বিকভাবে বলা যায়, এবার ঈদে ঘরে ফেরার ধকল কম হয়েছে। উৎসবকে কেন্দ্র করে বাড়তি মানুষের চাপ অনেকটাই পরিকল্পিতভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরপরও ঈদের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনার খবর আসছে। সড়ক দুর্ঘটনা চালকের অসতর্কতার কারণেই প্রধানত ঘটে থাকে। এসব সড়ক দুর্ঘটনায় চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র। নিকট-অতীতে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের রাজধানীসহ দেশব্যাপী আন্দোলন ব্যাপকভাবে নাড়া দিয়েছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কয়েকদিন আগে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ মন্ত্রিসভায় অনুমোদন লাভ করে। এই আইনের খসড়া অনুমোদন মূলত চালকদের অনিয়ম ও এর শাস্তির বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েই করা হয়েছে। গণপরিবহন ব্যবস্থার চূড়ান্ত নৈরাজ্যের ফলে জনমনে যে ক্ষোভের সঞ্চার ঘটেছিল এরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল ওই আন্দোলনে। কিন্তু এরপরও সড়ক-মহাসড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে পারিবারিক বন্ধন বেশ শক্তিশালী। স্বজনদের সঙ্গে ঈদ পালনের রেওয়াজ চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। এ রেওয়াজ মানুষের সংবেদনশীলতার অংশ হয়েও দাঁড়িয়েছে। ফলে যারা কর্মস্থল ছেড়ে স্বজনদের মাঝে গিয়েছিলেন, তারা যাতে নির্বিঘ্নে কর্মস্থলে ফিরতে পারেন এ ব্যাপারে সরকার তথা প্রশাসনকে দায়িত্বশীল হতে হবে। আমরা মনে করি, দেশের বিস্তৃত সড়কপথকে নিরাপদ করতে হলে সার্বিক সতর্কতা ও নজরদারি নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ। সড়ক দুর্ঘটনার কারণগুলোও যেহেতু চহ্নিত, সেহেতু সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App