×

খেলা

কোচ নিয়োগের হিড়িক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০১৯, ০৩:৫৩ পিএম

কোচ নিয়োগের হিড়িক
দ্বাদশ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের অব্যবহিত পরেই বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড, ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে চলছে হেড কোচসহ পুরো কোচিং প্যানেল পরিবর্তনের কার্যক্রম। কোনো দেশে নিজ ইচ্ছায় আবার কোনো দেশে পরিচালনা বোর্ডের হস্তক্ষেপে এসব পদত্যাগ ও ছাঁটাইয়ের ঘটনা ঘটছে। ফলে কোচ নিয়োগের হিড়িক পড়ে গেছে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোয়। মোটের ওপর কোচের বাজার এখন বেশ গরমই বলা চলে। ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস বিশ্বকাপের পর থেকে অনেক দেশের কোচ নেই, কারও থাকলেও মেয়াদ বাড়ানো হয়নি, কেউ অল্প কদিন মেয়াদ বাড়িয়ে কাজ চালাচ্ছে, কেউ মাসের পর মাস চলছে ভারপ্রাপ্ত দিয়ে। কেউবা আবার মেয়াদ থাকা কোচকে ছাঁটাই করছে। সেই শূন্য পদ পূরণের তোড়জোড়ও চলছে। সব মিলিয়ে টেস্ট খেলুড়ে আটটি দেশের ক্রিকেট বোর্ডই এ মুহূর্তে প্রধান কোচ নিয়ে ব্যস্ততার মধ্যে আছে। এরই মধ্যে কোচ চেয়ে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞাপন দিয়েছে বেশ কিছু দেশ, কেউ বিজ্ঞাপন দেয়ার পথে। তবে ফ্র্যাঞ্চাইজি যুগে বড় সমস্যা, চাহিদা থাকায় মোটামুটি মানের কোচরাও চড়া বেতন হাঁকাচ্ছেন। সাধারণ কোচরাও এখন মাসে ২০-২৫ হাজার ডলার বেতন চান। আর টম মুডি, গ্যারি কারস্টেন, ট্রেভর বেলিস, মাহেলা জয়াবর্ধনেরা মাসে ৫০ হাজার ডলার বা তারও বেশি বেতন দাবি করছেন। ক্রিকেট বিশ্বের খুব কম দেশই রয়েছে, ওই পরিমাণ অর্থ দিয়ে ভালোমানের একজন কোচ নিয়োগ দিতে পারবে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) আর্থিকভাবে সচ্ছল, ভালো মানের কোচ পেলে টাকা বাধা হবে না। কিন্তু সমস্যা পুরো সময়ের জন্য কোচ খুঁজে পাওয়া। তবে বেশ কিছু দেশ পুরনো কোচদের ছেড়ে দেয়ায় বা চুক্তি নবায়ন না করায় বাজার উন্মুক্ত হচ্ছে। দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ ওটিস গিবসন, আফগানিস্তানের কোচ ফিল সিমন্স, পাকিস্তানের কোচ মিকি আর্থার, শ্রীলঙ্কার কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে, ইংল্যান্ডের কোচ ট্রেভর বেলিসের যে কাউকেই দেখা যেতে পারে নতুন ঠিকানায়। গত বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ভরাডুবির পর প্রধান কোচ স্টিভ রোডসসহ কয়েকজনকে ছাঁটাই করা হয়েছে। আসন্ন আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগে সাকিব-তামিমদের প্রধান কোচ নিয়োগে বদ্ধপরিকর বিসিবি। দলের কোচিং স্টাফদের খালি পদগুলোও পূরণে বিজ্ঞাপনও দেয় বোর্ড। বিসিবির বিজ্ঞাপনে চারটি মাত্র আবেদন জমা পড়ে। বাংলাদেশের কোচ হতে আগ্রহীর সংখ্যা কম হলেও পার্শ্ববর্তী ভারতে তা উল্টো। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক কোচ মিলিয়ে দুই হাজার আবেদন পড়েছে সেখানে। আপাতত বাংলাদেশসহ বেশিরভাগ ক্রিকেট বোর্ডই অপেক্ষা করছে বিসিসিআইর কোচ নিয়োগ পর্যন্ত। প্রধান কোচ নিয়োগ দিতে বিশ্বের বেশ কিছু তারকা কোচের সঙ্গে যোগাযোগও করেছে বিসিবি। এই তালিকায় গ্যারি কারস্টেন, মিকি আর্থার, চন্ডিকা হাথুরুসিংহের নাম শোনা গেছে। তবে তাদের কেউ কেউ আইপিএল বা বিপিএলের মতো ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে কাজ করার স্বাধীনতা চেয়েছেন বলে বিসিবি রাজি হয়নি। তাদের চাওয়া পূর্ণ সময়কালীন মেয়াদের জন্য কোচ। ইতোমধ্যে প্রধান কোচ নিয়োগ না পেলেও পেস বোলিং কোচ হিসেবে সাবেক প্রোটিয়া ফাস্ট বোলার চার্ল লেঙ্গেভেল্টকে ও স্পিন বোলিং পরামর্শক হিসেবে নিউজিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ড্যানিয়েল ভেট্টোরিকে নিয়োগ দিয়েছে বিসিবি। ল্যাঙ্গেভেল্টকে পুরো সময়ের জন্য আর ভেট্টোরির সঙ্গে বছরে ১০০ দিনের জন্য চুক্তি করেছে। প্রধান কোচ নিয়োগে বিসিবির পছন্দ দায়িত্বশীল, অভিভাবকসুলভ, স্কিল ও প্ল্যানিংয়ে দক্ষ, খেলোয়াড়দের শেখানো এবং পারফরমেন্স আদায় করে নিতে পারেন এমন একজন। আবার তাকে নামিদামি হতে হবে এ জন্য যে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রেসে থাকতে হয় বিসিবিকে। এরই ধারাবাহিকতায় দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক কোচ রাসেল ক্রেইগ ডমিঙ্গো সাক্ষাৎকার দেয়ার জন্য বুধবার সকাল ১০টায় ঢাকায় পৌঁছান। ডিসেম্বর ২০১২ থেকে আগস্ট ২০১৩ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করার অভিজ্ঞতা তার। সামনেই ২০২০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থাকায় এবং প্রোটিয়াদের টি-টোয়েন্টি দলকে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা কারণে তাকে নিয়ে ভাবছে বিসিবি। বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, খণ্ডকালীন কোনো শর্ত না দিলে এবং আলোচনার মাধ্যমে দুই পক্ষ সমঝোতায় উপনিত হলে রাসেলকে জাতীয় দলের কোচ হিসেবে দেখা যেতে পারে। ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট কোচের দায়িত্ব পালন করা রাসেল প্রোটিয়া দলের সঙ্গে এর আগেও বাংলাদেশ সফর করেছেন। সাক্ষাৎকার শেষে আজ রাতে তিনি ঢাকা ত্যাগ করবেন বলে জানা গেছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App