রবীন্দ্রসঙ্গীতের বিকৃতি ঘটাচ্ছে অযোগ্যরা : তপন মাহমুদ
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪ আগস্ট ২০১৯, ০২:১৪ পিএম
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৮তম প্রয়াণবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা আয়োজন করেছে ‘সমুখে শান্তি পারাবার’ শীর্ষক দুদিনব্যাপী অনুষ্ঠান। গতকাল শুক্রবার এ আয়োজন শুরু হয়েছে রাজধানীর পাবলিক লাইব্রেরির শওকত ওসমান মিলনায়তনে। রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থার সভাপতি তপন মাহমুদ এ আয়োজনের প্রসঙ্গ ও সমকালীন রবীন্দ্রচর্চার নানা বিষয় নিয়ে মুখোমুখি হয়েছিলেন ভোরের কাগজের। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন হেমন্ত প্রাচ্যরবীন্দ্র প্রয়াণবার্ষিকীর আয়োজন নিয়ে জানতে চাই ১৯৮৯ সাল থেকে রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা প্রতি বছর এ আয়োজনটি করে আসছে। রবীন্দ্রজয়ন্তীতে আমরা একটা আয়োজন করি, আবার রবীন্দ্র প্রয়াণবার্ষিকীতে কবিগুরুকে স্মরণ করে আরেকটি আয়োজন করি। এবারের রবীন্দ্রজয়ন্তীতে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার জন্য আমরা পুরো অনুষ্ঠানটি ঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারিনি। সেই আয়োজনের কিছু অংশ প্রয়াণবার্ষিকীতে যুক্ত করেছি। প্রয়াণবার্ষিকীর আয়োজনে সংস্থার শিল্পীরা রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করছে। পাশাপাশি থাকছে আবৃত্তির পরিবেশনা। এ ছাড়া দুদিনব্যাপী আয়োজনে শিল্পী আজাদ রহমানকে সম্মাননা দেয়া হচ্ছে। আমাদের দেশের সাম্প্রতিক রবীন্দ্রচর্চা নিয়ে আপনার কাছ থেকে শুনতে চাই আমাদের দেশে রবীন্দ্রচর্চা আগের চাইতে বেড়েছে বলে আমি মনে করি। এখন অনেকেচই রবীন্দ্রসঙ্গীতের চর্চা করছেন। রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে নানামুখী গবেষণা হচ্ছে। রবীন্দ্রনাথের কবিতা নিয়ে আবৃত্তিচর্চা হচ্ছে। রবীন্দ্রনাথের নাটকের মঞ্চায়ন হচ্ছে। তরুণদের মাঝে রবীন্দ্রনাথ বিষয়ে আগ্রহ বেড়েছে। সব মিলিয়ে রবীন্দ্রনাথ আমাদের হৃদয়ে বেশ শক্তপোক্তভাবেই বিচরণ করছেন। রবীন্দ্রসঙ্গীতের প্রতি তরুণদের আগ্রহ কেমন এই সময়ের অনেক তরুণ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিখতে আসছে। এটা ইতিবাচক। রবীন্দ্রসঙ্গীতের আবেদন তো সব বয়সের মানুষের মাঝেই। সুরের জাদু, কথার মায়ায় রবীন্দ্রসঙ্গীত সবাইকে বেঁধে রাখে। সারাদেশেই এখন রবীন্দ্রসঙ্গীত চর্চা হচ্ছে। বিভিন্ন জেলা শহরে তরুণরা রবীন্দ্রসঙ্গীত শিখছে। আমি ভীষণ সম্ভাবনা দেখি। তরুণদের হাত ধরেই রবীন্দ্রচর্চা আরো বিকশিত হবে। রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়ে ফিউশন হচ্ছে। ব্যাপারটিকে কীভাবে দেখেন যদি কেউ সঙ্গীত বুঝে, রবীন্দ্রসঙ্গীতের মর্মবাণী বুঝে, মূল কথা-সুর ঠিক রেখে নতুন সঙ্গীতায়োজন করে সেটা মুগ্ধ করে। কিন্তু ইদানীং অযোগ্যদের হাতে ফিউশনের নামে রবীন্দ্রসঙ্গীতের বিকৃতি ঘটছে। রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়ে কিছু করতে চাইলে আগে শিখতে হবে, বুঝতে হবে। সেই কাজটা করার মতো যোগ্য হয়ে উঠতে হবে। তখনই নতুন রূপে, নতুন ব্যাখ্যা দিয়ে রবীন্দ্রনাথকে উপস্থাপন সম্ভব। রবীন্দ্রনাথ তার সঙ্গীত নিয়ে কিছু কথা বলে গেছেন। সেগুলো মাথায় রাখতে হবে। এজন্য রবীন্দ্রনাথের গানের পাশাপাশি তার অন্যান্য সাহিত্য, শিল্পকর্ম সম্পর্কে জানতে হবে। রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়ে শিল্পী সংস্থার কার্যক্রম সম্পর্কে বলুন... রবীন্দ্রনাথকে নানামুখী কাজ করে চলেছে শিল্পী সংস্থা। এর মধ্যে রবীন্দ্রসঙ্গীতের চর্চা, গবেষণা রয়েছে। পাশাপাশি গুণীজনদের সম্মাননা প্রদান করছি। এবারের প্রয়াণবার্ষিকীর আয়োজনেও আমরা গুণীজন সম্মাননা প্রদান করছি। এর মধ্য দিয়ে আমরা শুদ্ধ রবীন্দ্রচর্চাকে এগিয়ে নিতে চাই।