×

মুক্তচিন্তা

উত্তরণে একযোগে কাজ করতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ আগস্ট ২০১৯, ০৯:২৯ পিএম

বন্যার পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে দেশের বিভিন্ন জনপদে নানামুখী দুর্ভোগের চিত্র ফুটে উঠেছে। মাঠের ফসল তো গেছেই, সঙ্গে ভিটেমাটিও গেছে অনেকের, গবাদিপশুরও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সড়ক-মহাসড়ক এমনকি রেলপথের অবস্থা বেহাল। কোনো কোনো অঞ্চলে নদীভাঙনের চিত্র উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মাত্রায় নতুন করে দুশ্চিন্তার সৃষ্টি করেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত এসব দুর্ভোগ থেকে উত্তরণে কাজ করতে হবে। জানা গেছে, এবারের ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে দেশের ২৮টি জেলা। এর মধ্যে ৯ জেলায় তুলনামূলকভাবে কম ক্ষতি হলেও বাকি ১৯ জেলার ফসল, রাস্তাঘাট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এসব জেলার ১১ লাখ ৪ হাজার ২৭৩টি পরিবার ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৫০ লাখের বেশি মানুষ বন্যাক্রান্ত। বানের পানিতে ডুবে গেছে আক্রান্ত জেলার ১ লাখ ৪১ হাজার ৮১৪ হেক্টরের বেশি ফসলি জমি। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ কাঁচা-পাকা মিলে ৮ হাজার ৯৬ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৪ হাজার ৭২১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়া ২৯৪টি ব্রিজ ও কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যাজনিত কারণে এ পর্যন্ত ১১৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বন্যার পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খাদ্য ও খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। নোংরা দূষিত পানি পান করার ফলে কলেরা, আমাশয়সহ নানা রকম পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। বন্যাদুর্গত অঞ্চলের চিকিৎসকদের সার্বক্ষণিক তৎপরতা যেন নিশ্চিত করা হয়, বন্যার্তদের মাঝে দ্রুততার সঙ্গে যেন পর্যাপ্ত প্রয়োজনীয় ওষুধ ও সরঞ্জাম পৌঁছে দেয়া হয়; উপদ্রুত এলাকায় রোগের প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধে জনসচেতনতা কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। বন্যার একটি বড় প্রভাব পড়েছে দেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায়। এমনিতেই দেশের সড়ক-মহাসড়কগুলোর একটি বড় অংশের অবস্থা খুবই খারাপ। এই বন্যা কার্যত মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ঈদের আগে ঘরমুখো মানুষের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সড়ক-মহাসড়কের এই হাল। দ্রুত সংস্কার না করা হলে তা ঈদে যাতায়াতের জন্য বড় ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। উত্তরাঞ্চলে বন্যার ফলে সড়ক-মহাসড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন জেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গত কয়েক দিনে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও সড়ক-মহাসড়কগুলোর অবস্থা বেহাল। সংস্কারে দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে। দেশের বন্যাপ্লাবিত জেলাগুলোতে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা কার্যক্রম পুরোপুরি স্থবির হয়ে গেছে। বন্যায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের পাঠ গ্রহণের ক্ষয়ক্ষতিকে আমলে নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। এ ছাড়া কৃষিতে বন্যার ক্ষতির প্রভাব পড়ে দীর্ঘমেয়াদি। এবারের বন্যায় সর্বস্ব হারানো অগণিত অসহায় কৃষকের অনেকেই কর্মহীন এবং বেকার অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাদের পুনর্বাসনসহ কৃষি ক্ষেত্রে যথাযথ মনোযোগ দিয়ে, বাস্তাবানুগ কর্মপরিকল্পনা করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App