×

মুক্তচিন্তা

কিশোর অপরাধ দমন করতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০১৯, ০৮:৪৫ পিএম

কিশোর অপরাধ সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক ও জাতীয় উদ্বেগের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। রাজধানীসহ দেশের প্রধান শহরগুলোতে কিশোর-তরুণরা বিভিন্ন গ্যাংয়ের মাধ্যমে অপরাধ করছে। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর মগবাজারের দিলু রোডে এক বিয়ের আসরে কনের বাবা নৃশংসভাবে খুন করেছে এক বখাটে। এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়েছেন কনের মাও। স্থানীয় সজীব আহমেদ রকির সঙ্গে বিয়ে না দিয়ে মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেয়ার জেরেই সে এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানা গেছে। পরে স্থানীয়রা বখাটে রকিকে হাতেনাতে ধরে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। বিয়ে না দেয়ায় কনের বাবাকে এভাবে প্রকাশ্যে হত্যা বড় ধরনের অপরাধ। উঠতি বয়সী কিশোররা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে গ্রুপ তৈরি করে এমন অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে কিশোর সন্ত্রাস নতুন একটি সামাজিক ব্যাধি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পুলিশের তথ্য মতেই গত ১০ বছরে রাজধানীর আলোচিত হত্যাকাণ্ডের বেশিরভাগই কিশোর অপরাধীদের হাতে ঘটেছে। এটি খুবই ভয়ঙ্কর তথ্য। এদের দ্বারা সংঘটিত হচ্ছে খুনের ঘটনা। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে কিংবা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের অনুচর হিসেবে কাজ করছে অনেক কিশোর। বিভিন্ন মহল্লায় চাঁদাবাজি, দখলবাজি থেকে শুরু করে ছিনতাই-রাহাজানির সঙ্গেও জড়িয়ে পড়ছে এরা। প্রশ্ন হচ্ছে, যে বয়সে নিজেকে গড়ে তোলা ও পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ার কথা, সে বয়সে ছেলেমেয়েদের এমন অপরাধে জড়ানোর কারণ কী? বিশেষজ্ঞদের মতে, শিথিল পারিবারিক বন্ধন, বাবা-মা সন্তানকে সময় না দেয়া, সামাজিক অবক্ষয়, স্বল্প বয়সে স্মার্টফোনসহ উন্নত প্রযুক্তি উপকরণের নাগাল পাওয়া, সঙ্গদোষ ইত্যাদি কারণে কিশোরদের অপরাধে যুক্ত হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। এ ছাড়া কিশোরদের হাতে পর্যাপ্ত টাকা দেয়া, যৌক্তিকতা বিচার না করেই সব আবদার পূরণ করা এবং সন্তান কী করছে সে বিষয় পর্যবেক্ষণ না করায় অপরাধপ্রবণতা বাড়ছে বলে সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করছেন। কিশোররা যেন অপরাধে জড়াতে না পারে এবং কেউ তাদের অসৎ কাজে ব্যবহার করতে না পারে, সে বিষয়ে নজর দিতে হবে। এ জন্য সবার আগে পরিবার তথা বাবা-মাকে এগিয়ে আসতে হবে। সন্তানরা কী করে, কার সঙ্গে সময় কাটায়- এসব খেয়াল রাখতে হবে। গোটা সমাজেই শিশু-কিশোরদের সুস্থ-সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠার পরিবেশ তৈরি করতে হবে। স্কুল কারিকুলামের বাইরে শিশু-কিশোরদের খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে আকৃষ্ট করা এবং যুক্ত করার সুযোগ বাড়াতে হবে। যারা ইতোমধ্যে অপরাধ চক্রে জড়িয়ে গেছে, তাদের জন্য উপযুক্ত কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে। দিলু রোডের ঘটনায় মামলা হয়েছে। খুনি রকিকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দৃষ্টান্তমূলক বিচার হওয়া দরকার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App