×

জাতীয়

ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলেন ব্যারিস্টার সুমন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০১৯, ০৬:৩২ পিএম

ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলেন ব্যারিস্টার সুমন

ব্যারিস্টার সুমন (বামে) - ওসি মোয়াজ্জেম (ডানে) / ফাইল ছবি

ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেফতার সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলেন মামলার বাদী। সাক্ষ্য শেষে আগামী ২০ আগস্ট জেরার জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত। বুধবার (৩১ জুলাই) বিশেষ জজ-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলমের আদালতে মামলার বাদী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের জবান্দবন্দি গ্রহণ করা হয়।

এর আগে আসামি মোয়াজ্জেমের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ ফারুক আহম্মেদ সাক্ষীর সাক্ষ্য না নেওয়ার জন্য আবেদন করেন। তিনি বলেন, মামলাটি উচ্চ আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৬১ ধারা আবেদন করা হয়েছে সেহেতু সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবি রাখার অনুরোধ করছি। অপর দিকে রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম বলেন, উচ্চ আদালতের কোনো আদেশ না থাকায় সাক্ষ্য নিতে কোনো বাধা নেই। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আসামিপক্ষের আবেদন নামঞ্জুর করে সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।

গত ১৭ জুলাই বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মাদ আস সামছ জগলুল হোসেন আসামি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অভিযোগ গঠন করেন। একই সঙ্গে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন আদালত। চলতি বছরের ১৬ জুন রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে আসামি মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর ১৭ জুন তাকে ফেনীর সোনাগাজী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে করা হয়।

ওইদিনই ফেনী সোনগাজী থানার এসআই আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম মোয়াজ্জেমকে আদালতে হাজির করে। পরে জামিন আবেদন করলে আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে ‘অসম্মানজনক’ কথা বলায় ও তার জবানবন্দির ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় গত ১৫ এপ্রিল সাইবার ট্রাইব্যুনালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বাদী হয়ে এ মামলা করেন।

আদালতের নির্দেশে গত ২৭ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রীমা সুলতানার পক্ষে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। একই দিন মামলার তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি সংক্রন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ১৭ জুন দিন ধার্য করেন আদালত। ওইদিনই তাকে আদালতে হাজির করা হয়।

পিবিআই-এর প্রতিবেদনে বাদীসহ ১৫ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। এর মধ্যে সোনাগাজী থানার চারজন পুলিশ সদস্যও রয়েছেন। চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজ-উদ দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন ভুক্তভোগী নুসরাতের মা। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

যৌন হয়রানির অভিযোগ করতে যাওয়ার পর থানার ওসির কক্ষে ফের হয়রানির শিকার হতে হয় নুসরাতকে। ‘নিয়ম না মেনে’ জেরা করতে করতেই নুসরাতের বক্তব্য ভিডিও করেন ওসি। মৌখিক অভিযোগ নেওয়ার সময় দুজন পুরুষের কণ্ঠ শোনা গেলেও সেখানে নুসরাত ছাড়া অন্য কোনো নারী বা তার আইনজীবী ছিলেন না।

গত ৬ এপ্রিল আলিম পরীক্ষার আগ মুহূর্তে বান্ধবীকে মারধরের কথা বলে নুসরাতকে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিতে চাপ দেয় দুর্বৃত্তরা। মামলা তুলে নিতে অস্বীকৃতি জানালে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় তারা। ওইদিন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে গত ১০ এপ্রিল চিকিৎসাধীন নুসরাতের মৃত্যু হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App