×

জাতীয়

সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ১৮ ঘণ্টায়ও চিকিৎসা পাননি অন্তঃসত্ত্বা নারী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০১৯, ১১:৪৮ এএম

সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ১৮ ঘণ্টায়ও চিকিৎসা পাননি অন্তঃসত্ত্বা নারী
পাঁচ দিন ধরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিবি রহিমা। রবিবার রাত ১০টার দিকে পরিবারের সদস্যরা সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাকে। গতকাল সোমবার সকাল ১১টা পর্যন্ত কোনো বেড ও চিকিৎসা পাননি তিনি। উল্টো কর্তব্যরত নার্স ও স্টাফদের চরম দুর্ব্যবহারের শিকার হতে হয় তাকে। এসব সহ্য করতে না পেরে সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান বাসায়। দুপুরে অবস্থার অবনতি হলে ফের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তাকে। প্রায় ২ ঘণ্টা ফ্লোরে শুয়ে থাকার পর হাসপাতালের কেন্টিনের সামনে মেঝেতে একটি বেড ফাঁকা হলে সেখানেই আপাতত ঠাঁই হয় তার। কিন্তু ততক্ষণেও শুরু হয়নি ডেঙ্গুর কোনো চিকিৎসা। অথচ এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে ১৮ ঘণ্টা। গতকাল বিকেল ৪টায় রহিমার সঙ্গে কথা হয় ভোরের কাগজের এই প্রতিবেদকের। অশ্রুসিক্ত নয়নে তিনি বলেন, রবিবার রাতে হাসপাতালে এসেছি। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ডেঙ্গু ধরা পড়েছে। কিন্তু কোনো চিকিৎসা এখন পর্যন্ত পাইনি। নার্সদের কাছে গেলে তারা খুবই খারাপ আচরণ করে। সহ্য করতে না পেরে সকালেই বাসায় চলে যাই। বাবা-মা দুপুরে আবার হাসপাতালে নিয়ে এসেছে। এখনো থাকার জায়গা পাইনি। একজন রোগী চলে গেছে, ফাঁকা পেয়ে আপাতত বসে আছি। ভয় হয়, এটাও পাব কিনা। কারণ যারা নার্স ও স্টাফদের টাকা দেয়, তাদেরকেই তারা বেড ভাড়া দেয়। তিনি বলেন, আমি দ্রুত সুস্থ হতে চাই। আমার অনাগত সন্তানের জন্যই আমি বাঁচতে চাই। দয়া করে আমাকে একটু সাপোর্ট দিন। যেন আমি চিকিৎসা পাই। অন্য রোগীদের সঙ্গে কথা বলেও জানা গেছে, হাসপাতালে কর্তব্যরত নার্স ও চিকিৎসকদের দায়িত্বে অবহেলা ও রোগীদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহারের নানা কথা। টাকা ছাড়া তাদের কাছ থেকে মেলে না কোনো চিকিৎসাসেবা, থাকার বেড। অনেকেরই অভিযোগ, শুধু প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কোনো ওষুধও দেয়া হচ্ছে না হাসপাতাল থেকে। স্যালাইন-ইনজেকশন কিনতে হয় বাইরে থেকে। গত মঙ্গলবার থেকে এই হাসপাতালে ভর্তি আছেন মোহাম্মদপুর শেখেরটেকের বাসিন্দা মো. রনি। তার মা শিউলি বেগমের অভিযোগ, ৬ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও তার ছেলে ঠিকমতো চিকিৎসা পাচ্ছে না। ঠিকমতো কোনো ওষুধও এখান থেকে দেয়া হয় না। প্যারাসিটামল ছাড়া বাকি সব স্যালাইন ও ইনজেকশন কিনতে হচ্ছে বাইরের দোকান থেকে। ধারদেনা করে ওষুধ কেনার খরচ মেটাতে গিয়ে হিমশিম পোহাতে হচ্ছে তাকে। তবে কেউ কেউ চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়িতেও ফিরছেন। ৪ দিন চিকিৎসা নেয়ার পর এখন অনেকটাই সুস্থ নোয়াখালীর মাইজদি থেকে আসা আতাউর রহমান। বুধবার জ¦র অনুভব করলে নোয়াখালীর প্রাইম হসপিটালে ভর্তি হন তিনি। সেখানে ২ দিন চিকিৎসার পর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠানো হয় তাকে। শুক্রবার থেকে চিকিৎসা নিয়ে এখন অনেকটাই সুস্থ। দুয়েক দিনের মধ্যে বাড়িও ফেরার সম্ভাবনা আছে তার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App