×

মুক্তচিন্তা

উপদ্রুত এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা ও ত্রাণ কার্যক্রম জোরদার করতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০১৯, ০৮:৪২ পিএম

বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও কমেনি বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ। দূষিত পানির কারণে ডায়রিয়া, চর্মরোগ, চোখের প্রদাহ, শ্বাসনালিতে প্রদাহসহ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বানভাসিরা। এ পরিস্থিতিতে দুর্গত এলাকাগুলোতে ত্রাণ-পুনর্বাসন তৎপরতার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা জোরদার করা খুবই জরুরি। জানা গেছে, এবারের ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে দেশের ২৮টি জেলা। এর মধ্যে ৯ জেলায় তুলনামূলকভাবে কম ক্ষতি হলেও বাকি ১৯ জেলার ফসল, রাস্তাঘাট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এসব জেলার ১১ লাখ ৪ হাজার ২৭৩টি পরিবার ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৫০ লাখের বেশি মানুষ বন্যাক্রান্ত। বানের পানিতে ডুবে গেছে আক্রান্ত জেলার ১ লাখ ৪১ হাজার ৮১৪ হেক্টরের বেশি ফসলি জমি। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ কাঁচা-পাকা মিলে ৮ হাজার ৯৬ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৪ হাজার ৭২১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়া ২৯৪টি ব্রিজ ও কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যাজনিত কারণে এ পর্যন্ত ১১৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে সরকারি হিসাব বলছে ৭৪ জন। ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ দিয়ে সাময়িক সহায়তা দিচ্ছে সরকার। কিন্তু স্থায়ী বা দীর্ঘমেয়াদি পুনর্বাসনের চিন্তায় উদ্বিগ্ন মানুষ। বন্যার পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খাদ্য ও খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে টিউবওয়েলগুলো অকেজো হয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানি পাওয়া বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সময় নোংরা দূষিত পানি পান করার ফলে কলেরা, আমাশয়সহ নানা রকম পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। কমে যাওয়া বদ্ধ পানির সঙ্গে ময়লা-আবর্জনা মিশে একে বিষাক্ত করে ফেলে। এই পানি গোসল বা অন্যান্য কাজে ব্যবহারের ফলে নানা রকম চর্মরোগেরও প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা রয়েছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, এ সময় উপদ্রুত এলাকায় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন নিরাপদ খাবার পানির সংস্থান এবং ডায়রিয়া মোকাবেলার ওষুধ-পথ্য বিশেষ করে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও খাবার স্যালাইন। ইতোমধ্যে বন্যার্তদের সহায়তায় সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। তবে এসব উদ্যোগের যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সমন্বয় এবং মনিটরিং খুবই জরুরি। বিশেষ করে চিকিৎসকরা দায়িত্বপালন করছেন কিনা, চাহিদা অনুযায়ী ওষুধ ও পথ্য সরবরাহ হচ্ছে কিনা এসব দেখভাল করা দরকার। দুর্গম প্রত্যন্ত এলাকাতেও যেন চিকিৎসাসেবা দানকারী টিম তৎপর থাকে সেটা নিশ্চিত করা দরকার। বন্যা-পরবর্তী রোগবালাই নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। আমরা চাই, বন্যাদুর্গত অঞ্চলের চিকিৎসকদের সার্বক্ষণিক তৎপরতা যেন নিশ্চিত করা হয়; বন্যার্তদের মাঝে দ্রুততার সঙ্গে যেন পর্যাপ্ত প্রয়োজনীয় ওষুধ ও সরঞ্জাম পৌঁছে দেয়া হয়; উপদ্রুত এলাকায় রোগের প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধে জনসচেতনতা কার্যক্রম যেন জোরদার করা হয়। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাস্তা, বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও পানিবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। বন্যায় ইতোমধ্যেই লাখো কৃষক সর্বস্ব হারিয়েছে। দ্রুততম সময়ে বিনা সুদে ও সহজশর্তে কৃষিঋণের ব্যবস্থা করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App