×

জাতীয়

বেসরকারিতে ফ্রি স্টাইল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০১৯, ০১:২২ পিএম

বেসরকারিতে ফ্রি স্টাইল

ফাইল ছবি

দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ায় জ্বর হলেই রক্ত পরীক্ষা করতে আক্রান্তরা ছুটছেন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিক কিংবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়াও ডেঙ্গু পরীক্ষা করাচ্ছেন অনেকে। এই সুযোগে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো নিজেদের ইচ্ছামতো ফি আদায় করছেন। বিষয়টি গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে ডেঙ্গুর পরীক্ষায় অতিরিক্ত ফি আদায় করা নিয়ে গত বৃহস্পতিবার উষ্মা প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। এ ছাড়া ডেঙ্গু পরীক্ষায় বেসরকারি হাসপাতালগুলো অতিরিক্ত ফি নিচ্ছে কিনা এবং সরকারি হাসপাতাল ফ্রি করাচ্ছে কিনা তা ২৯ জুলায়ের মধ্যে মৌখিকভাবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর কাছে জানতে চেয়েছেন। কিন্তু এরপরও প্রতিষ্ঠানগুলোতে ফি আদায়ে রয়েছে বিস্তর তারতম্য। দেখা গেছে, ডেঙ্গু নির্ণয়ের জন্য এন এস ওয়ান, ডেঙ্গু আইজিএম অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করাচ্ছেন রোগীরা। অনেকে সিবিসিও করাচ্ছেন। ধানমন্ডির কমফোর্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এনএস ওয়ান ২ হাজার টাকা, সিবিসির ৬৬০ টাকায় করানো হচ্ছে। পান্থপথের হেলথ এন্ড হোপ স্পেশালাইজড হাসপাতালে এনএস ওয়ান ৭৫০, আইজিএম ৬০০ টাকা, ইনসাফ বারাকাহ কিডনি এন্ড জেনারেল হাসপাতালে এনএস ওয়ান ৮৬৫, ডেঙ্গু আইজিএম ৭২৫ ও সিবিসি ৩৭৫ টাকায় করানো হয়। স্কয়ার হাসপাতালে এনএস ওয়ান ২ হাজার ৫০ টাকা, আইজিএম ৩ হাজার ৯৬০ টাকা এবং সিবিসি ৬৮০ টাকায় করানো হচ্ছে। এদিকে দ্রুত রোগী শনাক্ত ও বিশেষজ্ঞদের তৈরি গাইড লাইন অনুযায়ী, চিকিৎসা দিতে বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সরকারি হাসপাতালগুলোতে পেয়িং বেড ও কেবিনের রোগীদের কাছ থেকে টাকা নেয়া হলেও অন্য রোগীদের ডেঙ্গু পরীক্ষা হচ্ছে বিনামূল্যে। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক উত্তম কুমার বড়–য়া ভোরের কাগজকে জানান, পেয়িং বেড ও কেবিনের রোগীদের কাছ থেকে ২৫০ টাকা নেয়া হচ্ছে। অন্য রোগীদের বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা হচ্ছে। ঢাকা শিশু হাসপাতালেও এই একই অবস্থা। তবে কেবিনের রোগীদের কাছ থেকে এর জন্য ৮৫০ টাকা রাখা হচ্ছে। পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মুজাহেরুল হক বলেন, এই অবস্থা প্রমাণ করে বেসরকারি স্বাস্থ্য খাতের ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। আর এই সুযোগে তারা ইচ্ছামতো ব্যবসা করছে। হেলথ এন্ড হোপ হাসপাতালের চেয়ারম্যান প্রিভেন্টিভ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. এম এইচ চৌধুরী লেলিন বলেন, একই পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিক একেক রকম মূল্য নির্ধারণ করছে। এটি ল্যাব টু ল্যাব ভ্যারি করে। তবে ডেঙ্গু নির্ণয়ে যে পরীক্ষা করানো হয় এর মূল্য সর্বোচ্চ ৭৫০-১৫০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তবে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন মূল্য নির্ধারণ করছে। বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার ফি ইচ্ছামতো রাখা হচ্ছে কিনা, তা জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিদের আমরা ডেকেছি। সঙ্গে করে কোন পরীক্ষার জন্য তারা কত মূল্য রাখছেন সেই তালিকা নিয়ে আসার জন্য বলা হয়েছে। আগামী রবিবার তাদের সঙ্গে বৈঠক হবে। তারা সহনীয় পর্যায়ের মূল্য রাখছেন কিনা, তা দেখার জন্য মনিটরিং কমিটিও করা হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার এন্ড কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ৯ হাজার ৬৫৭ জন। মারা গেছে ৮ জন। গতকাল ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩৯০ জন। এদিকে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পো ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সংস্থাটির আবাসিক কার্যালয়ের (ইউএনআরসি) এক কর্মকর্তা। গতকাল শুক্রবার ওই কর্মকর্তা জানান, গত কয়েকদিন ধরে মিয়া সেপ্পো জ্বরে ভুগছেন। ডাক্তারি পরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া গেছে যে তার ডেঙ্গু হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App