শিশুর যখন চিকুনগুনিয়া
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০১৯, ০৪:৩৪ পিএম
চিকুনগুনিয়া কি?
চিকুনগুনিয়া নামটির সঙ্গে এখন কমবেশি সবাই পরিচিত। বিশেষ করে এই মৌসুমে নতুন এই ভাইরাস জ্বর নিয়ে সবাই বেশ শঙ্কিত। বড়দের পাশাপাশি শিশুরাও এই জ্বরে আক্রান্ত হতে পারে। এমন কি শিশুর জন্মের ১ সপ্তাহের মধ্যে যদি অন্তঃসত্ত্বা মা এই রোগে আক্রান্ত হন, তবে নবজাতকেরও চিকুনগুনিয়া হতে পারে।
চিকুনগুনিয়া রোগের লক্ষণ কি কি?
চিকুনগুনিয়ার লক্ষণগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো
* জ্বর
* মাথা ব্যথা
* হাড়ে ব্যথা
* চোখের কোটরে ব্যথা
* হাড়ের স্ফীতি ইত্যাদি।
চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত শিশুর হঠাৎ করে জ্বর তীব্র হতে পারে। ৩ থেকে ৫ দিনে যখন জ্বর কমতে শুরু করে, তখন শরীরে চুলকানি এবং র্যাশ বা ফুসকুড়ি উঠতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে র্যাশের পরিবর্তে কালচে-বাদামি বা ধূসর বর্ণের দানা দেখা দিতে পারে।
* শিশুদের ক্ষেত্রে আরেকটি ব্যতিক্রম লক্ষণ হলো স্নায়ুবিক জটিলতা; যেমন- খিঁচুনি বা এনকেফালাইটিস।
চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু জ¦রের মধ্যে পার্থক্য কি?
* ডেঙ্গুর মতো অণুচক্রিকা বা প্লাটিলেট কমে গিয়ে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি চিকুনগুনিয়াতে নেই।
* ডেঙ্গুতে হাড় ব্যথা হলেও ফুলে যায় না; কিন্তু চিকুনগুনিয়াতে শিশুর হাড়-সন্ধিতে প্রদাহের ফলে তা ফুলে যায়।
* চিকুনগুনিয়াতে ব্যথার মাত্রা এত তীব্র থাকে যে রোগী ব্যথার কারণে হাঁটতেই পারে না। এ জন্য একে ‘ল্যাংড়া-জ্বর’ বলে।
চিকুনগুনিয়ার চিকিৎসা কি?
* ভাইরাসজনিত জ্বর বলে এটি সপ্তাহখানেকের মধ্যেই (সাধারণত ৭ থেকে ১০ দিন) ভালো হয়ে যায়।
* পর্যাপ্ত পানি ও তরল খাবার; পাশাপাশি বয়সানুযায়ী প্যারাসিটামলই এ রোগের একমাত্র চিকিৎসা।
* ব্যথা কমাতে বরফ লাগানো যেতে পারে।
* ব্যথা একটু কমে গেলে ফিজিওথেরাপি দেয়া যেতে পারে।
* ডেঙ্গুতে ব্যথানাশক একেবারে নিষেধ করা হলেও চিকুনগুনিয়াতে চিকিৎসকের পরামর্শে তা ব্যবহার করা যেতে পারে।
তবে শিশুর বয়স ১ বছরের কম হলে অথবা অন্যান্য জটিলতা থাকলে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে।
ডা. প্রহলাদ কুমার স্বপ্নীল
শিশু বিভাগ,
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।