×

মুক্তচিন্তা

কর্মক্ষেত্র নিরাপদ হবে কখন?

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০১৯, ০৮:২৪ পিএম

চোর সন্দেহে দেলোয়ার হোসেন সাঈদ নামে এক পোশাক শ্রমিককে পিটিয়ে ও বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর হাতিরঝিল থানার পশ্চিম হাজীপাড়ায় একটি পোশাক কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। কর্মক্ষেত্রে শ্রমিক নিরাপত্তার বিষয়টি বরাবরই উপেক্ষিত। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্রমিক মারধর এমনকি খুনাখুনির ঘটনাও ঘটছে। কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিশ্চিত করার বিষয়টি যে কতটা অবহেলিত এবং প্রচলিত বিধিবিধানের প্রয়োগ কতটা ঢিলেঢালা তা এ ঘটনাই প্রমাণ করে। জানা যায়, ইজি ফ্যাশন পোশাক কারখানায় ৭ম তলায় কাটিং সেকশনে কাজ করত দেলোয়ার হোসেন সাঈদ। গত বুধবার তার বিরুদ্ধে গেঞ্জি চুরির অভিযোগ ওঠে। এরপর কারখানার মালিকসহ একজন চালক তাকে মারধর করে আটকে রাখে। গতকাল তাকে বৈদ্যুতিক শকও দেয়া হয়। এক পর্যায়ে অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে হাসপাতালে নেয়ার সময় মারা যান তিনি। নিহত সাঈদের সহকর্মী ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে উত্তেজিত শ্রমিক ও জনতা রাস্তায় নেমে এলে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আতঙ্কে আশপাশের পোশাক কারখানা ছুটি দেয়াসহ এলাকার অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। সে সময় সড়কে কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। এ ছাড়াও কারখানার তালা ভেঙে পোশাক লুটের ঘটনাও ঘটে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৭-৮ রাউন্ড ফাঁকা গুলিও ছোড়ে। পরে বিকেলের দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে যানচলাচলসহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। প্রাতিষ্ঠানিক বা অপ্রাতিষ্ঠানিক কোনো খাতেই শ্রমিকের কাজের পরিবেশ ও পরিস্থিতি যথাযথ নিরাপদ নয়। কাজ করার সময় শ্রমিকদের মৃত্যুর মূলে যেসব কারণ রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনা, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া, অগ্নিকাণ্ড, ওপর থেকে পড়ে যাওয়া, বজ্রপাত, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, সহিংসতা, মালিকপক্ষের শারীরিক আঘাত, দেয়াল-ভবন-ছাদ ও মাটিধস। এটা পরিষ্কার যে, যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও উদ্যোগ নেয়া হলে শ্রমিকের মৃত্যু এড়ানো সম্ভব। বিশ্বের প্রায় সর্বত্রই যুগ যুগ ধরে ঠিক তা করা হচ্ছে। সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করা হচ্ছে কর্মরত শ্রমিকদের নিরাপত্তার ওপর। এমনকি আমাদের দেশের প্রচলিত শ্রম আইনেও কলকারখানার শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিধান রয়েছে। এ ছাড়া আমাদের দেশেও সবার আগে নিরাপত্তা কথাটি সুপরিচিত শুধু নয়, ব্যাপকভাবে ব্যবহৃতও হয়ে আসছে বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে। কিন্তু বাস্তবে তার প্রয়োগ নেই। এর জন্য মূলত দায়ী হলো দায়িত্বহীনতা ও গাফিলতি। দেলোয়ার হত্যার ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। আমরা চাই, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক, দায়ীদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App