×

অর্থনীতি

ব্যাংকের বিনিয়োগের খবরে পুঁজিবাজারে উত্থান

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০১৯, ০২:৫৫ পিএম

ব্যাংকের বিনিয়োগের খবরে পুঁজিবাজারে উত্থান
টানা পতনের পর ব্যাংকের বিনিয়োগের খবরে গতকাল মঙ্গলবার ১০০ পয়েন্টের বেশি সূচক বেড়েছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই)। একই সঙ্গে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) প্রণোদনা স্কিমের ৮৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ছাড়ের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে চিঠি দেয়ার খবরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বাজারে। গতাকল বাজারে খবর আসে যেসব ব্যাংকের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগসীমা অনুযায়ী বিনিয়োগ করার সক্ষমতা রয়েছে, সেসব ব্যাংককে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য নির্দেশনা দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বর্তমানে ২০টিরও বেশি ব্যাংকের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করার সুযোগ রয়েছে। ওই ব্যাংকগুলোর প্রায় ২-৩ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে পারবে। এই দুই খবরে একদিনেই ডিএসই প্রধান মূল্য সূচক বেড়েছে ১০০ পয়েন্টের ওপরে। আর দাম বেড়েছে লেনদেনে অংশ নেয়া ৯৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের। হঠাৎ এমন উত্থান হলেও কয়েক মাসে ধরেই শেয়ারবাজারে মন্দাভাব বিরাজ করছে। এমনকি রবিবার ও সোমবার পর পর দুদিন পুঁজিবাজারে বড় দরপতন ঘটে। ভয়াবহ ওই দরপতনের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে বিএসইসি। সেই সঙ্গে সোমবার প্রণোদনা স্কিমের ৮৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ছাড়ের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেয় পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। বাংলাদেশ ব্যাংক এই অর্থ ছাড়লে তা বিনিয়োগের জন্য শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট ২৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আনুপাতিক হারে বণ্টন করা হবে। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানগুলো অফার লেটার পেয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের তুলনায় ১১১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় ৫ হাজার ৭৭ পয়েন্টে। অপর দুটি সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৮১৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর শরিয়াহ সূচক ২৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৬৪ পয়েন্টে। সূচকের এমন বড় উত্থানের বিষয়ে ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, আতঙ্কের কারণে গত কয়েকদিন শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। এমন দরপতনের কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই। এমন পরিস্থিতিতে প্রণোদনা স্কিমের ৮৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ছাড়ার জন্য বিএসইসি থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এতে বিনিয়োগকারীদের কিছুটা হলেও আস্থা বেড়েছে। এ কারণেই বাজারে এমন বড় উত্থান দেখা দিতে পারে। তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু হয়নি। দুয়েকটি কোম্পানি হয়তো খারাপ করেছে। কিন্তু তালিকাভুক্ত সব কোম্পানি খারাপ না। এখানে ভালো ভালো দেশীয় ও বহুজাতিক কোম্পানি আছে। পিপলস লিজিংয়ের মতো দুয়েকটি কোম্পানির জন্য তালিকাভুক্তকে খারাপ বলা যাবে না। মূল্য সূচকের বড় উত্থানের পাশাপাশি প্রতিদিন লেনদেনে অংশ নেয়া প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩২৭ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার বিপরীতে কমেছে মাত্র ১৫টির। আর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ৯টির। বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার বিষয়ে বিনিয়োগকারী সাইফুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিন যে হারে দাম কমেছে তাতে এই একদিনের উত্থানে কিছু হবে না। টানা পতনে ইতোমধ্যে যে লোকসান হয়েছে, তা পুষিয়ে নিতে হলে কমপক্ষে এক মাস শেয়ারবাজার টানা ঊর্ধ্বমুখী থাকতে হবে। এদিকে মূল্য সূচক ও বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়লেও লেনদেন খরা অব্যাহত রয়েছে। ডিএসইতে দিনভর লেনদেনে হয়েছে ৩১৭ কোটি ৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪৬৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ লেনদেন কমেছে ১৪৭ কোটি ১৩ লাখ টাকা। ডিএসইর মতো বড় উত্থান হয়েছে অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। বাজারটির সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৯৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৫১৩ পয়েন্টে। বাজারটিতে হাতবদল হওয়া ২৮৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩০টির, কমেছে ৩৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫টির দাম। লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App