×

জাতীয়

পানি কমলেও দুর্ভোগ বেড়েছে বানভাসিদের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০১৯, ১১:৪৪ এএম

পানি কমলেও দুর্ভোগ বেড়েছে বানভাসিদের
বন্যার পানি কিছুটা কমলেও যুমনায় এখনো বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিশুদ্ধ পানির সংকটে ডায়রিয়া, আমাশয়সহ পানিবাহিত রোগ-বালাই দেখা দিয়েছে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে। স্যানিটেশন ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে। ঘরবাড়িতে পানি উঠে আবার নেমে যাওয়ায় দুর্গন্ধ শুরু হয়েছে। বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ায় খাদ্য, সুপেয় পানি, নিরাপদ আশ্রয়সহ নানা সংকটে চরম দুর্ভোগে বানভাসি মানুষ। একইসঙ্গে কয়েকটি এলাকায় দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। গাইবান্ধায় বন্যার পানি কমলেও বেড়েছে দুর্ভোগ। দেখা দিয়েছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। বন্যার পানিতে বাঁধধসে ও রাস্তা ভেঙে গিয়ে সপ্তাহ খানেক ধরে গাইবান্ধা জেলা সদরের সঙ্গে সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। অন্যদিকে বাদিয়াখালীতে বন্যার পানিতে রেললাইনের পাথর ও মাটি সরে যাওয়ায় সান্তাহার-লালমনিরহাট ও রংপুর রুটে ট্রেন যোগাযোগও বন্ধ রয়েছে। পদ্মার পানিতে শরীয়তপুরের নদী তীরবর্তী নড়িয়া, জাজিরা, ভেদরগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে নড়িয়া-জাজিরা সড়ক। একইসঙ্গে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। ফরিদপুরে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকলেও এখনো পানিবন্দি অনেক মানুষ। বন্ধ রয়েছে ২৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ঝুঁকিতে শহর রক্ষা বাঁধ। জামালপুরের বকশীগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বন্যার পানি কমলেও বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। অনেক এলাকার বানভাসি মানুষ এখনো পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী না পাওয়ায় তাদের মধ্যে হাহাকার শুরু হয়েছে। কোনো নৌকা দেখলেই মানুষ ত্রাণের নৌকা মনে করে এগিয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ সামান্য ত্রাণসামগ্রী পেলেও অনেকেই পাননি। এ নিয়ে মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। গেল ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনার পানি ২৩ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে। পানি কমতে শুরু করলেও দুর্ভোগ কমেনি বানভাসিদের। চলতি বন্যায় জেলার পাঁচটি উপজেলার ৫২টি ইউনিয়নের চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের ৯০ হাজার পরিবারের প্রায় তিন লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এর মধ্যে কাজিপুর উপজেলায় বন্যার ভয়াবহতা বেশি দেখা দিয়েছে। এই উপজেলার অধিকাংশ ইউনিয়ন যমুনার চরাঞ্চলে অবস্থিত। চরাঞ্চলের বাড়িগুলো এখনো পানিতে নিমজ্জিত থাকায় বানভাসি মানুষ গবাদি পশু নিয়ে উঁচু স্থান ও আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে। বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ এলাকার বানভাসিদের অভিযোগ, তাদের কাছে এখনো ত্রাণসামগ্রী পৌঁছায়নি। এদিকে গত ১২ দিনে বন্যায় বিভিন্ন জেলায় মারা গেছে অন্তত ৮৭ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এই তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়, সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে জামালপুর জেলায়। সেখানে ২৯ জন মারা গেছে। এছাড়া গাইবান্ধা জেলায় ১৫ জন, নেত্রকোনায় ১৩ জন এবং টাঙ্গাইল ও সুনামগঞ্জ জেলায় পাঁচজন করে মারা যাওয়ার কথা জানানো হয়েছে। প্রাণহানি হয়েছে লালমনিরহাট, নীলফামারী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, কুড়িগ্রাম, শেরপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া এবং ফরিদপুরেও।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App