×

মুক্তচিন্তা

দ্রুত সড়ক-মহাসড়ক সংস্কার করতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০১৯, ০৮:৫৭ পিএম

এবারের বন্যার একটি বড় প্রভাব পড়েছে দেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায়। এমনিতেই দেশের সড়ক-মহাসড়কগুলোর একটি বড় অংশের অবস্থা খুবই খারাপ। এই বন্যা কার্যত মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ঈদের আগে ঘরমুখো মানুষের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সড়ক-মহাসড়কের এই হাল। দ্রুত সংস্কার না করা হলে তা ঈদে যাতায়াতের জন্য বড় ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। জানা যায়, উত্তরাঞ্চলে বন্যার ফলে সড়ক-মহাসড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন জেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গত কয়েক দিনে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও সড়ক-মহাসড়কগুলোর অবস্থা বেহাল। উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোর ১১টি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোথাও কোথাও কালভার্ট ও সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রংপুর জেলার সাড়ে ৫শ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাইবান্ধার মহাসড়কের প্রায় ১০০ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কুড়িগ্রাম জেলার সড়ক-মহাসড়কের অবস্থাও নাজুক। উত্তরবঙ্গে সড়ক যোগাযোগের অন্যতম টাঙ্গাইল জেলাধীন সড়ক-মহাসড়ক। এই সড়ক ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মোট দৈর্ঘ্য ১৯২ কিলোমিটার। এর মধ্যে বড় দারোগারহাট থেকে ধুমঘাট ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার অংশ মিরসরাইয়ে অবস্থিত। এ অংশ এখন ছোট-বড় গর্তে ভরে গেছে। এসব সড়কের খানাখন্দ ও গর্ত দ্রুত মেরামত না করলে ধীরে ধীরে তা আরো বড় হয়ে ঈদের সময় অতিরিক্ত গাড়ির চাপে ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। সারাদেশে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের অধীন সড়কগুলোর ৮ হাজার ৬৬২ কিলোমিটারই ভাঙাচোরা অবস্থায় রয়েছে। সড়কগুলোর খারাপ অংশের কোথাও পুনর্নির্মাণ, কোথাও সংস্কার, কোথাও পিচ ঠিক করা আবার কোথাও ডাবল বিটুমিনাস সারফেস ট্রিটমেন্ট (ডিবিএইচ) করা জরুরি বলে মহাসড়ক উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা (এইচডিএম) বিভাগের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে। এই ভাঙাচোরা সড়ক-মহাসড়কে দেশের মধ্যাঞ্চলে আবার ধাক্কা মেরেছে বন্যার পানি। আসন্ন ঈদুল আজহার এক সপ্তাহ আগেই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক-মহাসড়কের মেরামত কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। সড়কের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা তৎপর না হলে মন্ত্রীর নির্দেশনা কতটুকু বাস্তবায়ন হবে সেটা দেখার বিষয়। বিগত বছরগুলোতে ঈদের সময় রাস্তাঘাটের দুরবস্থার কারণে যান চলাচল বিঘ্নিত হওয়া, যানবাহন গন্তব্যে পৌঁছতে কয়েকগুণ সময় বেশি লাগা, যানবাহন দুর্ঘটনায় পতিত হওয়াসহ নানারকম বিপদ-ভোগান্তির অভিজ্ঞতা আমাদের হয়েছে। আমরা নিশ্চয় এমন অবস্থায় পুনরাবৃত্তি চাই না। অনতিবিলম্বে দেশের ঝুঁকিপূর্ণ ও বন্যায় নাজুক সড়কগুলো সংস্কার করে নিরাপদ যান চলাচল উপযোগী করতে হবে। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্নের নামে জোড়াতালি দিয়ে কোনোমতে সংস্কার কাজ করা হয়- যা প্রকৃতপক্ষে কোনো কাজে আসে না। রাস্তাঘাটের সংস্কারে গাফিলতির কারণে কারো ঈদ আনন্দ যেন ভেস্তে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App