×

সাময়িকী

বন্ধ জানালা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০১৯, ০৮:২৭ পিএম

বন্ধ জানালা

জানালাটা এখন বন্ধ। বেশ বড়সড় একটি জানালা। নকশাকাটা কাঠের দুই পাল্লা। এর শিকগুলোও কাঠের। জানালাটা খুলে দিলেই বাতাস আর রোদ হুড়মুড় করে এসে ঘরটা দখল করে নেয়। কিন্তু এমন রোদ আর বাতাস বেশ কয়েকদিন যাবৎ আর এ দিক মুখো হয় না। পেল্লাই সাইজের একটি জং ধরা ছিটকিনি তুলে জানালাটা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অন্তু মাঝেমাঝেই ছিটকিনিটা নামিয়ে পাল্লা দুটোকে হাট করে মেলে দিতে চেয়েছে। কিন্তু অন্ধকারে কয়েকপ্রস্ত ধাক্কা খেয়ে পাল্লা দুটো আবার ফিরে এসেছে ঘরের দিকেই। এ বাড়ির অন্য জানালাগুলোর অবশ্য এমন বিড়ম্বনায় নেই। আর তা থাকবেই বা কেন? ওসব জানালা দিয়ে আলো বা বাতাসের আমদানি সব সময় খুব নিতান্তই ছিল। অন্তুর মা-বাবার ঘরে উত্তরমুখী জানালার ওপাশেই শরিকদের বাড়ির বাউন্ডারি। তাদের প্রভাব আর প্রতিপত্তিতে সে জানালাকে জন্মাবধি অন্তু জড়সড়ই থাকতে দেখেছে। আর ওদের বসার ঘরের জানালার পাশেই বিশ্বরোডের কড়া পাহারা। দানবের মতো ট্রাকগুলো যখন বাড়ি কাঁপিয়ে সে রাস্তা দিয়ে ছুটে যায়, তখন তার আওয়াজ, ধোঁয়া আর ধুলোর হুঙ্কারে জানালাটা রীতিমতো ভয়ে সিঁটিয়ে থাকে। শুধুমাত্র অন্তুর ঘরের এই জানালাটিই নিঃসংকোচে দুই পাল্লা ছড়িয়ে আলো আর বাতাসের সন্ধান নিয়ে এসেছে এ বাড়ির জন্য এতদিন। কিন্তু গত বারো দিন জানালাটা সেই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছে। এমনটা অবশ্য হবার কথা ছিল না। এই জানালার পাশেই বিকেলের রোদে পিঠ ঠেকিয়ে অন্তুর ত্রিকোণমিতি শেষ করার কথা ছিল বা পরেশ দাদুর বইয়ের আলমারি থেকে চুরি করে আনা বইগুলো এখানে বসেই পড়ার কথা ছিল। অথবা আরো অনেকটা সময় এই জানালা দিয়ে আসা আলো আর বাতাসের সাথে এ বাড়ির মিতালি করার কথা ছিল। কিন্তু সে সকল চাওয়াকে অবলীলায় মুখ বাঁকিয়ে পাশ কেটে গেল পেল্লাই এই জানালা। তবে সর্বান্তকরণে জানালাটাকে দোষী সাবস্ত্য করা মনে হয় ঠিক হবে না। ওপাশে তেড়েফুঁড়ে ওঠা বিশাল বাড়িটার ভূমিকাকে খাটো করে দেখার অবকাশ নেই মোটেও। ওটাকে বাড়ি না বলে অট্টালিকা বলাই শ্রেয়। এ তল্লাটে এমন বাড়ি আর দুটো নেই। কালো কাচের বিশাল বিশাল জানালা, মার্বেল পাথরের মেঝে, রূপালী ইস্পাতের রেলিং ঘেরা ঝুল বারান্দা আর ঘরে ঘরে বাহারি ঝাড় লণ্ঠন। এসবকিছুই ও বাড়ির আভিজাত্য ঘোষণা করে সদর্পে। সত্যি বলতে পাড়ার চেহারা পালটে দিয়েছে বাড়িটা। তবে এমন রাজপ্রাসাদ তো আর একদিনে গড়ে ওঠেনি। ধীরে ধীরে সময় নিয়ে মাথা তুলেছে বাড়িটা। অন্তুর ঘরের জানালার এপাশের খোলা জায়গাটুকুতে ডেরা গেড়েছে খুব ধীরে ধীরে। প্রায় বছরখানেক আগের কথা। তখন এই ফাঁকা জায়গাতে একটি সজনে গাছ ছিল। তবে অন্তুদের পশ্চিমের জানালায় খুব কম সময়ই সে গাছের ছায়া বসতো। বরং সজনে গাছের পাতা ছুঁয়ে আসা সবুজ আলো সে জানালা পেরিয়ে বসত গাড়তো অন্তুর ঘরে। শুধুই আলো, কোনো ছায়ার দেখা পাওয়া যেত না দিনভর। সেই আলোতেই অন্তু কারণে-অকারণে জানালায় দাঁড়িয়ে থাকতো বা কখনো শিস বাজিয়ে সদ্য শেখা সুরটা ঝালিয়ে নিতো। আর অন্তুর সেই সুর বাতাসে ভাসতে ভাসতে পেরিয়ে যেতো জানালার ওপাশের ফাঁকা জায়গা। মিশে যেতো বাতাসে। সেদিনও অন্তু জানালাতেই দাঁড়িয়েছিল। হন্তদন্ত বাবাকে আসতে দেখেও সে খুব একটা গা করেনি। অন্তুর বাবা সব সময়ই একটু হড়বড়ে। সবকিছুতেই তাড়াহুড়ো তার। একই কথা কয়েকবার না আওড়ালে শান্তি পায় না সে। অন্তুর মা ঠিক এর বিপরীত। শান্ত আর সৌম্য। খুব কম কথা বলে। তবে যেটুকু বলে তা খুব ওজনদার। বাড়ির ভিতরে ঢুকেই বাবা অস্থিরভাবে মাকে কিছু বলতে লাগলেন। সুর ভাজতে থাকা অন্তু বাবার এরকম অস্থিরতায় সব সময় অভ্যস্ত। সেদিকে ইচ্ছে করেই মনোযোগ দেয় না। তবে নীচু গলায় মাকে একটানা বেশ অনেকক্ষণ সেদিনই প্রথম কথা বলতে দেখলো। আর তা দেখে ঘটনার প্রতি কিঞ্চিৎ আগ্রহ এসেছিল তা অন্তু কোনোভাবেই অস্বীকার করতে পারবে না। তবে সে কৌতূহল পুরোপুরি জাগার আগেই অন্তুর জানালায় নিপুণ এসে দাঁড়িয়েছিল সেদিন। নিপুণ আর অন্তু একসঙ্গে কম্পিউটার শিখতে যায়। এম এস, এক্সেল শেষ করে পাওয়ার পয়েন্ট শুরু করেছে সবে। এ ছবি, ও ছবি বসিয়ে প্রেজেন্টেশন বানাতে খুব ভালো লাগে অন্তুর। তাই মা-বাবার ব্যস্ত সে কথোপকথন অগ্রাহ্য করে অন্তু বেরিয়ে পড়ে নিপুণের সাথে। তবে যতটা আগ্রহ নিয়ে অন্তু বেরিয়েছিল ততটাই নিরাশ হয়ে ফিরেলো সেদিন। ‘শ্যামল কম্পিউটার সেন্টার’ অজানা কারণে বন্ধ। কম্পিউটার সেন্টারের সাথে শ্যামল কাকাও অন্তুর খুব প্রিয়। তবে এর পিছনের কারণটিও খুব মজার। শ্যামল কাকা অন্তুর কাছে এক জলজ্যান্ত এনসাইক্লোপিডিয়া। পৃথিবীর কোনো দেশের ইতিহাস হোক বা প্রয়োজনীয় কোনো তথ্য, শুধু জিজ্ঞাসা করার অপেক্ষা। শ্যামল কাকা খানিকক্ষণ চিন্তা করেই শুরু করে দেয় সেসবের বৃত্তান্ত। অন্তুর আজো কিছু প্রশ্ন ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা আর নেলসন ম্যান্ডেলাকে নিয়ে শ্যামল কাকার কাছে। কিন্তু কম্পিউটার সেন্টার বন্ধ, এমনকি তার মোবাইল ফোনটাও বন্ধ। এরপর আর কোনোদিনই খোলেনি সেই কম্পিউটার সেন্টার। শোনা যায়, এরপর শ্যামল কাকাকে দু’একদিন বাজারে দেখা গিয়েছিল কিন্তু শীত আসতে আসতে তাও বন্ধ হয়ে গেল। অনেক পরে অন্তু জেনেছিল শ্যামল কাকা ওপার চলে গেছেন। বন্ধ ‘শ্যামল কম্পিউটার সেন্টার’-এর সেই জায়গাতে কয়েকদিন পর মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো একটি চারতলা ভবন। যে ভবনের দ্বিতীয় তলায় ব্যক্তিগত অফিস বানানো হলো এলাকার প্রভাবশালী একজন রাজনৈতিক নেতার। এরপর অন্তুর আর কম্পিউটার শেখা হয়ে ওঠেনি। আস্তে আস্তে শীত জাঁকিয়ে বসলো। বিকেলের ফাঁকা সে সময় অন্তু আলোভরা জানালার পাশে বসে সময় কাটাতে লাগলো। একদিন দুপুরবেলা। উঠোনে শুকাতে দেয়া কাপড়ে এক চিলতে রোদ লুকোচুরি খেলছিল। মা রান্নাঘরে ব্যস্ত। বাড়ির ফটকের সামনে কেউ একজন এসে কড়া নাড়লো। প্রথমে ভিখিরি ভেবে কেউ উত্তর দিলো না। এরপর খুসখুস করে কেশে আরো জোরে কড়া নাড়তে লাগলো। এবার আর গুরুত্ব না দিয়ে উপায় রইলো না। অন্তু গিয়ে দরজা পুরোপুরি না খুলে সামান্য ফাঁক করে দেখলো। একজন মানুষ। বেশ কেতাদুরস্ত। চোখে রোদচশমা। অচেনা মানুষটিকে দেখে অন্তুর প্রথমে একটু ভয়ই পেয়েছিল। পর মুহূর্তেই অন্যরকম একটা ভাবনা এলো তার। মা বা বাবার কোনো আত্মীয় হবে হয়তো। ‘কে রে অন্তু’ মা উঠোনে এসে দাঁড়িয়েছিল। অন্তুকে কথার উত্তর দেয়ার সুযোগ না দিয়ে লোকটি দরজা ঠেলে বাড়ির মধ্যে ঢুকে পড়লো। বাবাকে খোঁজ করলো লোকটি। বেশ হেঁয়ালী করে মার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন ছুড়লো, ‘এ বাড়ির মালিক কই? তার তো দেখাই পাওয়া যায় না। জরুরি কথা আছে তার সাথে।’ প্রশ্নটায় কিছু একটা ছিল। মা ছোট্ট করে ‘জানি না’ বলে চুপ করে রইলো। মালিক ফিরলেই তাকে খবর দেয়ার আদেশ রেখে লোকটি বেরিয়ে গেলো। সেদিন দুপুরে মা আর রান্নাঘরে ঢোকেননি। বেলা গড়িয়ে বিকেলে বাবা ফিরলেও তাকে নিয়ে মাকে উচ্ছ্বসিত হতে দেখা গেল না। গামছা এগিয়ে দিয়ে বাবাকে স্নানে যাবার তাড়া দিলো না মা। বাবা আর মা সেদিন গলা খাদে নামিয়ে কিছু একটা নিয়ে তর্ক করে গেল অনেকটা সময়। এর মাসখানেক পরেই সেই কেতাদুরস্ত লোকটি সময়ে অসময়ে এ বাড়িতে আসতে শুরু করলো। ‘ওদের কথা মেনে নেয়ার দরকার নেই’ ‘ঘিঞ্জি এ পাড়াতে ওটুকুই তো খোলা জায়গা মাত্র’ ‘এ বাড়িতে আলো আসার ওই একটামাত্র পথ’——মুখের এ সকল শব্দগুলোর সাথে কপালের ভাঁজ একইসাথে দীর্ঘস্থায়ী হতে লাগলো মায়ের। মা-বাবার মধ্যে তর্কের সুর দিনে দিনে উদারা থেকে তারায় গিয়ে পৌঁছুলো। ‘কেউ একজন এসে বললো আর তুমি মেনে নিলে? ওদের আবদার কেন মানবে তুমি। ভয় পাবার কি আছে ওদের?’ মায়ের খুব শান্ত প্রশ্নে বাবার উত্তর ছিল, ‘ওদের তুমি চেনো না, ওদেরকে যেমন দেখো আসলে ওরা তেমন নয়। সময় আসলে বুঝতে পারবে ওরা কারা? যা চাইছে না দিলে ছিনিয়ে নিবে।’ কাকে কেমন দেখছে বা কি ছিনিয়ে নিবে তা নিয়ে অন্তু মাথা ঘামায়নি। তবে হঠাৎ হঠাৎ ফাঁকা সে জায়গায় সজনে গাছটা ছুঁয়ে মায়ের দাঁড়িয়ে থাকা দেখে অন্তু বুঝে গিয়েছিল আলোর দিন ফুরিয়ে আসছে। এরপর একদিন ভোরবেলা পশ্চিম জানালার ওপাশে ধুপধাপ আওয়াজে অন্তুর ঘুম ভেঙে গেল। জানালা খুলে দেখলো গোটাকতক লোক সজনে গাছের গোড়ায় কুড়ালি চালাচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যেই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়লো গাছটা। কতগুলো পাখি গাছ থেকে উড়ে চলে গেল। বাবাকে ওই লোকগুলোর আগেপিছে দু’একবার দেখা গেলেও মা নিজের ঘরের দরজা বন্ধ করে বসেছিল দুপুর অবধি। সজনে গাছবিহীন ফাঁকা সে জায়গা বেশিদিন ফাঁকা রইলো না। অল্প সময়ের মধ্যেই ইট, সিমেন্ট আর সুরকিতে ভরে উঠলো সে জায়গা। কাউকে প্রশ্ন না করেও অন্তু বুঝতে পারলো ফাঁকা জায়গাটা হারিয়ে যাচ্ছে। এরপর ইট-সিমেন্ট এর পরত খুব দ্রুতই জায়গাটিকে ঢেকে ফেলতে শুরু করলো। আর অন্যদিকে হিসেবী হতে শুরু করলো পশ্চিমের জানালাটা। সারাদিনই প্রায় জানালা তার দুই পাল্লা গুটিয়ে রাখে, ওপাশের অচেনা কিছু মানুষ আর ধুলোর ভয়ে। কিন্তু বিকেলের দিকে হাঁপিয়ে উঠে পাল্লা দুটো নিজেকে প্রসারিত করতো, ওপাশটা নিরিবিলি হতেই। সেই পড়ন্ত সময়েও আলো বিমুখ করতো না এ বাড়িকে। বাবার হড়বড়ে ভাব ততদিনে আরো বেড়েছে। ‘কি হবে কিছুই বুঝতে পারছি না। ও বাড়িটা তো এ বাড়িকে খেয়ে ফেলবে। এমন তো কথা ছিল না। ওরা কথা দিয়েছিল পশ্চিমের জানালার পাশে তিন হাত জায়গা রেখে দিবে।’ উত্তরে মা লম্বা দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজের ঘরে গিয়ে ঢুকতো। দিনে দিনে বাবার অস্থিরতার বিপক্ষে মা হয়ে উঠছিল আরো শান্ত। এ বাড়ির মতো মায়ের ঘরেও অন্ধকারে কয়েক পোচ কালো বেশি পড়তে শুরু করেছে তখন। মাটির নিচের গাঁথুনী শেষে প্রাসাদসম বাড়িটা তখন আস্তে আস্তে আকৃতি পেতে শুরু করেছে কেবল। তখনো পশ্চিম জানালা বিকেলের দিকে খোলা হয়। অন্তু সেই প্রাসাদের একোনা-ওকোনা দিয়ে আসা আলোয় তখনো নিয়ম করে জানালায় দাঁড়ায়। সেদিনও অন্তু জানালাতেই দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ পাশের ঘর থেকে দুড়ুম দাড়ুম আওয়াজ আসতে লাগলো। এমনিতেই এ বাড়ির তিনটি মানুষ খুব নিরীহ। জোরে কথা বলা থেকে কাজ কখনই তারা করে না। আর ওপাশের প্রাসাদটা হবার পর তো সকলের আওয়াজ আরো মিইয়ে গেছে। তাই ওঘরের বেমানান শব্দগুলো অন্তুকে ভাবনায় ফেলে দিলো। বেশ হন্তদন্ত হয়েই সে গেল ওঘরে। দেখলো মা এ বাড়ির সব শৌখিন জিনিষগুলো গোটানো শুরু করেছে। আর খুব নীরবে গুটিয়ে এলো বিকেলের নরম রোদে পিঠ পেতে মায়ের বই পড়া, রাতের খাবারের পর ফাঁকা জায়গায় বাবার পায়চারি আর অন্তুর সময়ে অসময়ে খোলা জানালায় দাঁড়ানো। এরপর সেই রাজকীয় বাড়ির দৈর্ঘ্য বাড়তে লাগতো ধাইধাই করে, আশপাশের সব বাড়িকে হেয় করে। জীর্ণ পুরাতন বাড়িগুলো মাটির সাথে আরো সিধিয়ে গেল সে বাড়ির প্রচণ্ডতা দেখে। সে প্রচণ্ডতা থেকে রেহাই পেলো না অন্তুদের বাড়িও। কৃচ্ছ্রসাধন শুরু হলো এবার খুব সাধারণ কাজেও। শ্বাস নেয়ার মতো বাতাসও যেন বিশাল সে বাড়িকে তোয়াজ করে অন্তুদের বাড়ি এড়িয়ে চলতে লাগলো। ভোরের আকাশে বাঁকা কোমরের কালপুরুষ, দিনের রোদ্দুর আর বাতাসে ভেসে বেড়ানো অন্তুর সুর ততদিনে বিদায় নিয়েছে এ বাড়ির পশ্চিম জানালা থেকে। এরপর এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। সেই প্রাসাদসম বাড়ি আসল চেহারায় উদ্ভাসিত হলো। রাজকীয় অট্টালিকার চারপাশ ঘিরে তুলে দেয়া হলো ঢেউ খেলানো বাহারি সীমানা প্রাচীর। সেই প্রাচীরের শক্তির কাছে হেরে দক্ষিণের জানালা। নকশাকাটা দুই পাল্লা সিধিয়ে গেল কাঠের শিকগুলোর সাথে সেই প্রাচীরের ধাক্কায়। সে বাড়ির সম্ভ্রান্ত ভাব বজায় রাখার জন্য অন্তুদের বাড়িকে চিরতরে অন্ধকারে নিক্ষেপ করা হলো। আলোর অভাব পুষিয়ে নিলেও বাতাসের অভাবে হাঁসফাঁস করতে লাগলো এ বাড়ির মানুষগুলো। জং ধরা ছিটকিনি খুলে অন্তু যতই কাঠের পাল্লা দুটোকে মেলে দিতে চাইলো তা অন্ধকারে ধাক্কা খেয়ে বারবারই ফিরে এলো। বন্ধ জানালার এপাশে জমে থাকা অন্ধকারের ভিতর অন্তুরাও হারিয়ে গেল এবাড়ি থেকে শ্যামল কাকার মতো।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App