×

মুক্তচিন্তা

জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি সরকারকে দেখতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০১৯, ০৮:৫৮ পিএম

বিএসটিআইয়ের লাইসেন্সপ্রাপ্ত ১১ কোম্পানির পাস্তুরিত দুধে গ্রহণযোগ্য মাত্রার চাইতে অতিরিক্ত সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। ওইসব কোম্পানির দুধ পরীক্ষা করে গত মঙ্গলবার হাইকোর্টে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। এর আগেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আ ব ম ফারুকের নেতৃত্বে একদল গবেষক বাজারজাত গরুর দুধের পরীক্ষা করে তাতে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক অ্যান্টিবায়োটিক ও ডিটারজেন্টের সন্ধান পেয়েছেন।

বিশ্বের অন্য কোনো দেশে দুধে এ ধরনের ক্ষতিকর উপাদান পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে বড় অঙ্কের জরিমানা গুনতে হতো দফায় দফায়। কিন্তু আমাদের দেশে তার উল্টা চিত্র দেখছি। অভিযুক্ত কোম্পানিগুলো বহাল তবিয়তে তাদের বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি অনেক বেশি উদ্বেগের, কারণ শিশু থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধ- বেশিরভাগ মানুষ এখন এ তরল দুধের ওপর নির্ভরশীল।

ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ কী ব্যবস্থা নিয়েছে সে বিষয়ে ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এর আগেও তরল দুধের ৯৬টি নমুনার মধ্যে ৯৩টিতেই ক্ষতিকর উপাদান পাওয়া গিয়েছিল। গত ১১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট দুধে কী পরিমাণ ব্যাক্টেরিয়া, কীটনাশক ও সিসা রয়েছে তা নিরূপণ করে ১৫ দিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়।

বিএসটিআইর প্রতিবেদনে ১৪টি কোম্পানির দুধে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কোনো উপাদান না থাকার কথা আদালতকে জানানো হয়েছিল। এই পরীক্ষা করা হয়েছে বিএসটিআই নির্ধারিত মানদণ্ডে। একই বিষয়ে দুটি প্রতিষ্ঠান পরস্পরবিরোধী তথ্য প্রকাশ করায় এ নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা থাকা স্বাভাবিক। এ নিয়ে আমরা চিন্তিত না হয়ে পারি না।

চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের অভিমত হচ্ছে, দীর্ঘদিন ধরে কেমিক্যাল মিশ্রিত এই দুধ পান ও ঘি খেলে মানবদেহে ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। ফরমালিন মেশানোর ফলে লিভার ও কিডনির রোগ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ক্ষতিকর মিল্ক পাউডার ব্যবহারের ফলে মানবদেহে হাড়ের মধ্যকার দূরত্ব সৃষ্টি হতে পারে। এতে ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, হার্ট অ্যাটাক, চোখের অসুখ বৃদ্ধি পেতে পারে।

এ ধরনের পরিস্থিতি জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। এর জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা জোরদার করতে হবে। অপরাধীদের শনাক্ত করে কঠোর শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। ভেজালকারীরা এতটা কৌশলের সঙ্গে ভেজাল মেশাচ্ছে বা নকল দুধ তৈরি করছে যে, ল্যাকটোমিটার দিয়ে পরীক্ষায়ও ভেজাল ধরা পড়ে না।

উদ্বেগের বিষয়, এসব ঘটনায় দায়ী কাউকে শাস্তির আওতায় আনা যায়নি। দেশের নাগরিকদের নিরাপদ খাবার নিশ্চিত করা সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। নিরাপদ খাবারের ওপর নির্ভর করে মানুষের সুস্থ থাকা না থাকা। তাই জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে সরকার দ্রুত এর সমাধানে উদ্যোগ নেবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App