×

জাতীয়

বন্যার্ত এলাকায় খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাব

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০১৯, ১২:১৩ পিএম

উত্তরাঞ্চলসহ দেশের অধিকাংশ স্থানে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। বিপদসীমার উপরে বইছে তিস্তা, ঘাঘট, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, সাঙ্গু ও সুরমা নদীর পানি। এতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লাখো মানুষ। পর্যাপ্ত ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন দুর্গতরা। দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাব। তিস্তা, ঘাঘট, ধরলা, ব্রহ্মপুত্রসহ শাখা নদনদীর পানি বাড়ায় কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধাসহ উত্তরাঞ্চলের অধিকাংশ স্থানের বন্যার আরো অবনতি হয়েছে। যমুনার পানি বাড়ায় জামালপুরেও বন্যার অবনতি হয়েছে। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ৩০টি গ্রাম। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৩৫ হাজার মানুষ। দুর্গতদের ত্রাণ দেয়া শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এদিকে সাঙ্গু নদীর পানি বাড়ায় বান্দরবানে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। প্রধান সড়ক ডুবে থাকায় টানা ষষ্ঠ দিনের মতো বান্দরবানের সঙ্গে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। মৌলভীবাজারে কুশিয়ারা, মনু, ধলাই নদীর পানি বেড়ে বন্যার আরো অবনতি হয়েছে। সুনামগঞ্জে পানি কিছুটা কমলেও বিপদসীমার ওপরে বইছে সুরমা। কুড়িগ্রামে ধরলা-ব্রহ্মপুত্র পাড়ে নতুন করে পানিবন্দি ২ লাখেরও বেশি মানুষ। যমুনার পানি বেড়ে জামালপুরে প্লাবিত হয়েছে চল্লিশটি গ্রামের প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে শেরপুরে ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী ও নকলার ৫৫টি গ্রাম। লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপরে থাকলেও বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। গাইবান্ধার চারটি উপজেলার বেশিরভাগ চরাঞ্চল ডুবেছে। পানিবন্দি হয়েছে অন্তত ২০ হাজার মানুষ। নেত্রকোনায় সোমেশ্বরীর পানি অপরিবর্তিত থাকলেও বেড়েছে কংসের পানি। নতুন করে জলমগ্ন হয়েছে তিনটি ইউনিয়ন। সিলেটেও তিন উপজেলার নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকেছে। এ ছাড়া গতকাল বান্দরবানে পাহাড় ধসে এক নারী ও কক্সবাজারের চকরিয়ায় মাটি চাপায় আরো দুজন নিহত হয়েছেন। তবে চট্টগ্রাম নগরীতে রাত থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় কয়েক জায়গায় জলাবদ্ধতা কমেছে। এদিকে প্রাণহানি এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের পাহাড় ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। এরই মধ্যে জেলা প্রশাসনের আটটি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে চার শতাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবেলায় চট্টগ্রামে ২৮৪টি মেডিকেল টিম গঠন ও কন্ট্রোল রুম চালু করেছে সিভিল সার্জন কার্যালয়। এসব মেডিকেল টিম ২৪ ঘণ্টা সেবা দেবে। দুর্ঘটনা এড়াতে দেশের বৃহত্তম সেচপ্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের ওপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার গত শনিবার তিস্তা ব্যারেজ পরিদর্শন করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় প্রশাসন ও ব্যারেজ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল রবিবার মন্ত্রণালয় থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। অন্যদিকে দেশের বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং নৌ-চলাচলের বর্তমান পরিস্থিতির তথ্য সংগ্রহ ও মনিটরিং করতে একটি কন্ট্রোল রুম খুলেছে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম খান জানান, বাংলাদেশ সচিবালয়ে ৬ নম্বর ভবনের নবম তলায় ৮০৩ নম্বর কক্ষটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ হিসেবে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ফোন নম্বর-৯৫১৫৫৫১। নিয়ন্ত্রণ কক্ষটি গতকাল রবিবার থেকে শুরু হয়ে ১৮ জুলাই পর্যন্ত খোলা থাকবে। কন্ট্রোল রুমের সার্বিক তদারকি এবং সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করবেন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (প্রশাসন ও চবক) আবদুছ ছাত্তার শেখ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App