×

খেলা

নাটকীয়তায় ভরা ম্যাচে জয় হলো ক্রিকেটের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০১৯, ১২:৫৫ এএম

অবশেষে ২২ গজের বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলো । দ্বাদশ বিশ্বকাপ যেন সমস্ত রোমাঞ্চ জমা রেখেছিল ফাইনালের জন্য। কি ছিল না লর্ডসের ফাইনালে! প্রতি মুহূর্তে উত্তেজনা উপহার দিয়েছে ম্যাচটি। অনেক দিন পর এমন শ্বাসরুদ্ধকর ক্রিকেট ম্যাচ দেখলাম। সত্যি বলছি, নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার গতকালের ফাইনাল ম্যাচের কথা কখনোই ভুলতে পারব না। নির্ধারিত ওভারের খেলা শেষে স্কোর টাই, তারপর সুপার ওভারে গড়ানো এবং সেখানেও দুদলের স্কোর সমান হওয়া এ যেন রীতিমতো অবিশ্বাস্য। তবে খেলাটা যখন ক্রিকেট তখন তো সবকিছুই সম্ভব। এ কারণেই তো ক্রিকেটকে গৌরবময় অনিশ্চিয়তার খেলা বলা হয়। তবে দিনশেষে ক্রিকেটেরই জয় হয়েছে। এমন ম্যাচই তো ক্রিকেটপ্রেমীরা দেখতে চায়। গতকাল লর্ডসের ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হয় স্বাগতিক ইংল্যান্ড। আর এই ম্যাচের মধ্য দিয়েই শেষ হলো ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস বিশ্বকাপ। ফাইনাল ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় কিউইরা। তবে এদিন তাদের ব্যাটিং মুগ্ধতা ছড়াতে পারেনি। আমার মতে উইকেট খুব একটা কঠিন ছিল না। নিউজিল্যান্ড বেশ সতর্কতার সঙ্গে ব্যাটিং করেছে। আরেকটু মেরে খেললে উইলিয়ামসনের দলের স্কোর আরো বড় হতে পারত। তবে আড়াইশর কম পুঁজি নিয়েও কিউই বোলাররা যেভাবে লড়াই করেছে সেটা সত্যিই প্রশংসনীয়। দ্বাদশ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের ওপেনাররা পুরোপুরি ব্যর্থ। বিশেষ করে মার্টিন গাপটিলের কথা বলতে হয়। ফাইনাল ম্যাচে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের ওপর প্রত্যাশা অনেক বেশি থাকে। কারণ ফাইনাল ম্যাচ মানেই বাড়তি চাপ। তরুণদের তুলনায় অভিজ্ঞদের পক্ষে এই চাপ সামলানোটা সহজ। আমার মনে হচ্ছিল আগের ম্যাচগুলোতে ব্যর্থ হলেও ফাইনালে গাপটিলের ব্যাট থেকে বড় ইনিংস আসবে। সে শুরুতে বড় ইনিংস খেলতে পারলে উইলিয়ামসনের দলের জন্য ম্যাচ জেতা অনেক সহজ হয়ে যায়। কিন্তু লর্ডসের ফাইনালে সে দলের জন্য কিছুই করতে পারেনি। নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের টস ভাগ্য বেশ ভালো! এবারের আসরে টস অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর ছিল। টস জিতে আগে ব্যাটিং করা দলই অধিকাংশ ম্যাচ জিতেছে। সেমিতে শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের জয়ের পেছনে টস জেতাটাও একটি বড় কারণ। স্বাভাবিকভাবেই ফাইনালে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় কিউইরা। এদিন লর্ডসের উইকেট আমার কাছে অতটা কঠিন মনে হয়নি। আসলে শুরুতে উইকেট হারানোটাই নিউজিল্যান্ডকে বিপাকে ফেলে দেয়। একে তো ফাইনালের চাপ, তার ওপর আবার শুরুতে ওপেনার গাপটিলের উইকেট হারানোয় কিউইরা ব্যাকপুটে চলে যায়। সেই চাপ তারা আর সামলাতে পারেনি। ইংল্যান্ডের বোলারদের কৃতিত্ব দিতেই হয়। ইয়ন মরগানের দলের সবচেয়ে বড় ইতিবাচক দিক হলো সবার ছন্দে থাকা। সাফল্যের জন্য তাদের কোনো একজন নির্দিষ্ট খেলোয়াড়ের পারফর্মের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হয়নি। এটা প্লাস পয়েন্ট। গতকালের ম্যাচের দিকে তাকালেই সেটার প্রমাণ পাওয়া যায়। নিউজিল্যান্ডের ১০ উইকেট নিয়েছে চার ইংলিশ বোলার। পুরো ম্যাচেই তাদের বোলিংয়ের লাইন-লেংথ ছিল অসাধারণ। ব্যাটিংয়ে বিশেষভাবে বলতে হয় অলরাউন্ডার বেন স্টোকসের কথা। দলের চরম বিপর্যয়ের মুখেও সে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে। সে-ই এই ম্যাচের নায়ক। শিরোপজয়ী ইংল্যান্ড দলের পাশাপাশি তার নামও ইতিহাসের পাতায় লেখা হয়ে গেল।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App