×

বিনোদন

নকল বির্তকে সিনেমার গান

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০১৯, ০১:৩২ পিএম

নকল বির্তকে সিনেমার গান
গান নকলের বিতর্কে মজেছে ঢাকাই সিনেমা। গল্প চুরির আলোচনা শেষে এবার সুর চুরির আলোচনা। নকল নিয়ে হৈচৈ থামছেই না সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে। কে আসল আর কে নকল তা ধরতে রীতিমতো তর্কের আসর বসেছে। ছবি নকলের অভিযোগে ইতোমধ্যে সেন্সর বোর্ড সতর্ক হয়ে উঠেছে। শেষ পর্যন্ত গান নকলের অভিযোগও যেতে পারে তদারকি প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত। নকল-বিতর্কের সূচনা ঈদে মালেক আফসারী পরিচালিত ‘পাসওয়ার্ড’ মুক্তির পর। ঈদে রেকর্ডসংখ্যক সিনেমা হলে মুক্তি পায় ‘পাসওয়ার্ড’। কোরিয়ান ছবি ‘দ্য টার্গেট’র নকল প্রমাণিত হয় শাকিব খান অভিনীত-প্রযোজিত ‘পাসওয়ার্ড’। প্রচণ্ড সমালোচনার মুখে পড়েন শাকিব খান ও মালেক আফসারী। নকলের প্রতিবাদস্বরূপ একজন চলচ্চিত্রকর্মী অভিযোগ তুলে সেন্সর বোর্ডে আবেদনপত্র জমা দেন। আবেদনের ভিত্তিতে সেন্সর বোর্ড ‘পাসওয়ার্ড’র প্রযোজকের কাছে কারণ দর্শানোর নোটিস জারি করেন। ইতোমধ্যে সেই নোটিসের জবাব দিয়েছেন ‘পাসওয়ার্ড’র প্রযোজক। ছবিটির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা তা অচিরেই সেন্সর বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে। ‘পাসওয়ার্ড’র এমন কোণঠাসা অবস্থায় ছবিটির বিরুদ্ধে অভিযোগের আগুনে নতুন করে ঘি ঢালেন সঙ্গীত পরিচালক শওকত আলী ইমন। ছবিতে ব্যবহৃত শাকিব-বুবলি অভিনীত ‘আগুন লাগাইলো’ গানটিও নাকি নকল। ‘আগুন লাগাইলো’ আইটেম গানটি ইমনের একটি গানের সুর থেকে নকল করা- এমনই দাবি করেছেন জনপ্রিয় এই সুরকার। ইমন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করে এই অভিযোগ আনেন। সেখানে তিনি লেখেন- শেষ পর্যন্ত আমার গান ভারত থেকে নকল করিয়ে এনে আবার আমার দেশেই রিলিজ করলেন কেন এই প্রশ্নের উত্তর আমি শওকত আলী ইমন একটু জানতে চাই। একটু অনুমতি নিয়ে নিলে খুশি হতাম। চলতি বছরের ১৮ মার্চ ইউটিউবে ‘ইমন শওকত’ চ্যানেলে রোজিনা খানের কণ্ঠে এ মিজানের কথায় ‘চন্দ্র তারা’ শীর্ষক একটি গান প্রকাশ হয়। ওই গানের সুরের সঙ্গে ‘পাসওয়ার্ড’ ছবিতে কোনালের কণ্ঠে ‘আগুন লাগাইলো’ গানটির সুরের মিল খুঁজে পেয়েছেন ইমন। সে জন্যই তিনি নকলের অভিযোগ এনেছেন বলে জানান। ভারতীয় সঙ্গীত পরিচালক লিংকন ‘আগুন লাগাইলো’ গানটির সঙ্গীতায়োজন করেছেন। এতে কণ্ঠ দিয়েছেন কোনাল। কোনাল এ ব্যাপারে কিছু না বললেও নকলের অভিযোগ মেনে নেননি লিংকন। তিনি ‘আগুন লাগাইলো’ গানটি কয়েক বছর আগে সুর করেছেন বলে ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করে দাবি করেছেন। আর মালেক আফসারী নকলের অভিযোগ যথারীতি অস্বীকার করেছেন। নকল গান নির্মাণের জন্য বিতর্ক এবারই প্রথম নয়। এক মালেক আফসারীর বিরুদ্ধেই এর আগে কয়েকবার গান নকলের অভিযোগ উঠেছিল। প্রতিবারই তিনি অভিযোগ হয় অস্বীকার করেছেন, নয়তো নকলের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন। জায়েদ খান-পরীমনি অভিনীত ও মালেক আফসারী পরিচালিত ‘অন্তর জ্বালা’ মুক্তি পায় ২০১৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর। ছবির ‘ছোট ছোট আশা’ গানটির বিরুদ্ধে নকলের অভিযোগ উঠে। ২০০৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত তামিল ছবি ‘ভেইল’-এর ‘উরুহুদে মারুহুদে’ শিরোনামে শংকর ও শ্রেয়া ঘোষালের গাওয়া গানের সঙ্গে ‘অন্তর জ্বালা’ ছবির গানের কথা, দৃশ্যায়ন, শিল্পীদের কস্টিউম ও সুরের মিলের অভিযোগ উঠেছিল। মালেক আফসারী তখন এভাবে সাফাই দিয়েছিলেন- ‘গানটা নকল। এটা তো সুস্থ নকল। অসুবিধা কী? গান তো সুপারহিট। একটা গান নিয়ে এত আলোচনা আগে হয়নি। ভালো লাগাটাই ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচাবে। খারাপ লাগলে ইন্ডাস্ট্রি বাঁচবে না। ‘অন্তর জ্বালা’র গানটি লিখেছেন সুদীপ কুমার দীপ ও মিউজিক করেছেন আলী আকরাম শুভ। গানে কণ্ঠ দিয়েছেন এস আই টুটুল ও ন্যান্সি। মালেক আফসারী পরিচালিত ২০১৩ সালের ঈদের ছবি ‘ফুল এন্ড ফাইনাল’ এর গানের বিরুদ্ধেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ছবির কাহিনী, সংলাপ ও গান অনেক ক্ষেত্রেই হুবহু নকল বলে অভিযোগ আছে। একটি গানের বিরুদ্ধেও নকলের অভিযোগ তুলেছেন দর্শকরা। যেখানে তেলেগু ছবি ‘রাসা’র গান ‘ভানা ভানা বিল্লু বাই বাই’- এর অনুকরণে ‘ভালোবাসা হয়ে যায়’ গানটি ব্যবহার করা হয়েছে। এমনকি ছবিটির একমাত্র আইটেম গান ‘পোলারে পোলারে তুই আগুনের গোলারে’ গানটির বিরুদ্ধেও নকলের অভিযোগ ছিল। নকলের অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছিলেন মালেক আফসারী। কিন্তু তখন তার বিরুদ্ধে সেন্সর বোর্ডে কেউ অভিযোগ করেননি। তার বিরুদ্ধে কোনো চলচ্চিত্র সংগঠনও ব্যবস্থা নেয়নি। তবে তিনি দর্শকদের সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। বারবারই তিনি নকল করেন, সমালোচিত হোন এবং পুনরায় নকল করেন। কখনোই নকলের জন্য তিনি অনুতপ্ত হননি। এবারো সেন্সর বোর্ডে সঙ্গীত পরিচালক শওকত আলী ইমন কোনো অভিযোগ না করায় তার পার পেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দেখার বিষয়- নকলের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পর সেন্সর বোর্ড কী ব্যবস্থা নেয়। সে পর্যন্ত নকল বিতর্ক যে থামছে না, এটা হলফ করে বলা যায়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App