×

মুক্তচিন্তা

দুর্নীতি ও লুটপাট বন্ধে কঠোর হতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০১৯, ০৭:৪৬ পিএম

যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে রেলপথ অনেকটাই নিরাপদ ও আরামদায়ক হিসেবে বিবেচিত। জনবল সংকট, অব্যবস্থাপনা, কোনো কোনো ক্ষেত্রে অনিয়ম আর অদূরদর্শিতায় রেলওয়ের বিবর্ণ চিত্র প্রকট হয়ে ওঠে। গত মঙ্গলবার কোচ-ইঞ্জিন ক্রয়ে দুর্নীতিসহ ১০ উৎস চিহ্নিত করে রেলের দুর্নীতি বন্ধে ১৫ দফা সুপারিশসহ প্রতিবেদন রেলপথমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের সুপারিশগুলো সময়োপয়োগী।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় নিতে পারেন। দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রেলওয়ের জায়গা মনিটরিংয়ের অভাবে শত শত জমি বেদখল হয়ে আছে। এ ছাড়া রেলের জায়গায় রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই অবৈধভাবে দখল করে বাসা-বাড়ি নির্মাণ করেছেন। রেলের ডাবল লাইন, সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ ট্র্যাক নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতি সংঘটিত হয়ে থাকে।

এ ছাড়া রেলের টিকেট কালোবাজারে বিক্রির ক্ষেত্রে রেলওয়ের কর্মচারীরা জড়িত বলে প্রতিবেদনে বলা হয়। এই অভিযোগ সত্য, যা বিভিন্ন সময় আমরা গণমাধ্যমের খবরে দেখে আসছি। প্রতিবেদনে দুর্নীতি প্রতিরোধে রেলের লোক নিয়োগের ক্ষেত্রে আইবিএ-বুয়েটের মতো জনবল নিয়োগে বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নিতে বলেছে দুদক।

কোচ আমদানি নিরুৎসাহিত করে রেলের নিজস্ব ফ্যাক্টরিতে কোচ নির্মাণে সক্ষমতা সৃষ্টির সুপারিশ করা হয়েছে। টিকেট কালোবাজারি বন্ধ করতে টিকেট বিক্রিতে ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহার ও নিয়মিত মনিটরিংয়ের উদ্যোগ নেয়া; রেলওয়েতে পদোন্নতি ও বদলির ক্ষেত্রে সততা, দক্ষতা ও নিষ্ঠাকে মানদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করা; আধুনিকায়নের মাধ্যমে যাত্রীসেবা বাড়ানো, বিশেষ করে নির্দিষ্ট সময়সূচি অনুযায়ী রেল চলাচল নিশ্চিত করা।

পাশাপাশি যাত্রীর নিরাপত্তা ও মালামাল পরিবহনে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার কথাও বলা হয়েছে। দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান মাধ্যম হলো রেলওয়ে। অথচ দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে অবহেলার শিকার হয়ে আসছিল রেলওয়ে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতাসীন হয়ে রেলের দিকে দৃষ্টি ফেরায়। স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় হয়েছে রেলওয়ে। যা দেশবাসীকে খুবই আশান্বিত করেছে, এ কথা বলতেই হয়।

তবে এই খাতে অনিয়ম-দুর্নীতির খবর আমাদের স্বভাবতই হতাশ করে। বিশ্বব্যাপী গণপরিবহন হিসেবে এখনো রেলওয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে, অতীতের সরকারগুলো রেলওয়ের প্রতি ইচ্ছাকৃত অবজ্ঞা প্রদর্শন করেছে। রেলওয়ে প্রকৃতই যাত্রীসাধারণের উন্নত সেবার প্রতিষ্ঠান হয়ে দাঁড়াক- এটিই রেলমুখীদের প্রত্যাশা।

বাংলাদেশ রেলওয়ের ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে ও এটিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে হলে আরো কিছু কাজ করতে হবে। অগ্রাধিকার দিতে হবে বাজেটে, আমলাতান্ত্রিক জটিলতামুক্ত করতে হবে খাতটিকে। দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, অব্যবস্থাপনার ছায়া সরাতে অবশ্যই জোরদার পদক্ষেপ নিতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App