×

মুক্তচিন্তা

হজযাত্রায় যেন দুর্ভোগ না হয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০১৯, ১০:১২ পিএম

আগামীকাল ৪ জুলাই থেকে চলতি বছরের হজ ফ্লাইট শুরু হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার থেকে হজযাত্রীরা হজ ক্যাম্পে অবস্থান নেয়া শুরু করেছেন। হজ এজেন্সিগুলোর প্রতারণা, স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম এবং দুর্নীতির কারণে প্রতি বছরই হজযাত্রীদের পড়তে হয় চরম ভোগান্তির মুখে। এবার হাজিদের দুর্ভোগ কমাতে সরকারের পক্ষ থেকে নানারকম উদ্যোগের কথা শোনা যাচ্ছে। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীরা নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছবে এমনটাই প্রত্যাশা করছি।

জানা গেছে, ফ্লাইট নির্বিঘ্ন করতে বিমান এবার নতুন অনেক কর্মসূচি নিয়েছে। হজযাত্রীদের টিকেট বাতিল বা তারিখ পরিবর্তন করলে বড় অঙ্কের জরিমানার বিধান রাখায় হজ এজেন্সিগুলো এবার হজ ফ্লাইট শুরুর আগেই টিকেট চূড়ান্ত করেছে। ফলে বিমান তার পরিকল্পনা অনুযায়ী হজের সব কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবে। এ বছর ৬৩ হাজার ৫৯৯ জন হজযাত্রী পরিবহন করবে বিমান।

ইতোমধ্যে সাড়ে ৬২ হাজার টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে। আগামী দুদিনের মধ্যে পুরো টিকেট বিক্রি শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ ছাড়া কোটা পূরণ ও হজযাত্রী নিয়ে জটিলতা নিরসনে ১০ শতাংশ হজযাত্রী ‘রিপ্লেসমেন্ট’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ফলে রেজিস্ট্রেশন করেও যারা কোনো কারণবশত হজে যেতে পারবেন না, তাদের স্থানে হজে যেতে ইচ্ছুক অন্য ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে বেসরকারি এজেন্সিগুলো।

সরকারের উদ্যোগগুলো কতটুকু বাস্তবায়ন করা যায় সেটা এখন দেখার বিষয়। হজ এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে এখনো পর্যন্ত কোনো ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে বেসরকারি হজ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে অনিয়ম ও দুর্নীতি করার অভিযোগে ৩৭ হজ এজেন্সির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

২০১৭ সালে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ কার্যক্রম পরিচালনায় বাংলাদেশ ও সৌদি আরবে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত শেষে এই হজ এজেন্সির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। বাংলাদেশ থেকে এবার হজযাত্রীর কোটা ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনার কোটা ৭ হাজার ১৯৮ জন এবং বেসরকারি কোটা ১ লাখ ২০ হাজার। প্রতিবারই হজের আগে এজেন্সির অনিয়মসহ নানাবিধ কারণে হজযাত্রায় বিঘ্ন ঘটে।

বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর লক্ষাধিক মুসলমান হজ পালন করতে যান। সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এ বিশাল কর্মযজ্ঞ পরিচালিত হয়ে আসছে। সাধারণভাবে আমাদের দেশের হজযাত্রীরা বয়স্ক। হজ এজেন্সিগুলোর প্রতারণার শিকার হলে তাদের জন্য বিড়ম্বনা বেশি পোহাতে হয়। হজ-ওমরাহ ব্যবস্থাপনার নীতিমালা নির্ভর থাকার বিষয়টি দুঃখজনক।

নীতিমালায় অনিয়ম, প্রতারণা ও মানব পাচারের শাস্তি রয়েছে তিরস্কার থেকে শুরু করে লাইসেন্স বাতিল। দেখা যায়, শাস্তি হিসেবে কোনো এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল বা জরিমানা হলেও তাদের ব্যবসা বন্ধ থাকে না। দুর্নীতি-অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত অধিকাংশেরই রয়েছে একাধিক লাইসেন্স।

শাস্তি হিসেবে এক লাইসেন্স বাতিল হলে তারা অন্য লাইসেন্স দিয়ে হজ বাণিজ্য অব্যাহত রাখে। কাজেই শুধু লাইসেন্স বাতিল নয়, বরং এ ক্ষেত্রে দোষী এজেন্সি মালিকদের শাস্তির বিধান রেখে আইন প্রণয়নও জরুরি। হজযাত্রীদের যে কোনো ধরনের অনাকাক্সিক্ষত দুর্ভোগ এড়ানোর জন্য সরকারকে সজাগ থাকতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App