অনলাইন কাইজেন সফটওয়্যার ব্যবহারে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর পাশাপাশি ফিরে আসবে পাটের হারানো গৌরব। গতকাল সরকারের এ-টু-আই প্রকল্পের আওতায় ‘পাটকলে অনলাইন কাইজেন পদ্ধতির বাস্তবায়ন’ শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ন্যাশনাল প্রোডাক্টিভিটি অর্গানাইজেশন (এনপিও) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পসচিব মো. আবদুল হালিম। এনপিওর পরিচালক এস এম আশরাফুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব লুৎফুন নাহার বেগম বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, শিল্প-কারখানায় উৎপাদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িতদের সচেতনতা ও নজরদারি বাড়িয়ে শতকরা ৫ ভাগ থেকে ২৫ ভাগ পর্যন্ত উৎপাদনশীলতা বাড়ানো সম্ভব। এ জন্য কোনো ধরনের উৎপাদন ব্যয় বাড়ানোর প্রয়োজন হয় না। এ ক্ষেত্রে জাপানের ঐতিহ্যবাহী কাইজেন পদ্ধতির অনুসরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সনাতন পদ্ধতিতে প্রত্যাশিত উৎপাদনশীলতা অর্জন সম্ভব নয় উল্লেখ করে তারা বলেন, পাটকলে সনাতনী বা ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে কাইজেন বাস্তবায়নে সময় ও জনবল উভয়ই বেশি লাগে। এর ফলে প্রত্যাশিত উৎপাদনশীলতা অর্জন সম্ভব হয় না। অনলাইন কাইজেন সফটওয়্যার ব্যবহারের ফলে সহজেই উৎপাদন পদ্ধতি তদারকি করা যায়। এতে করে অল্প সময়ে অধিক উৎপাদনশীলতা অর্জনের সুযোগ তৈরি হয়। পাটকলে এ পদ্ধতি চালু হলে একদিকে উৎপাদনশীলতা যেমন বাড়বে তেমনি পণ্য বৈচিত্র্যকরণের মাধ্যমে পাটের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। শিল্পসচিব মো. আবদুল হালিম বলেন, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে ধানসহ অন্যান্য কৃষিপণ্যের ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণে উৎপাদনশীলতা বাড়লেও পাট ও আখ ফসলের উৎপাদনশীলতা সে অনুপাতে বাড়েনি। এর ফলে পাট ও চিনিকলগুলো ক্রমেই অলাভজনক হয়ে পড়েছে। এর পাশাপাশি পাটের বিকল্প হিসেবে সস্তায় অন্য পণ্য উৎপাদনের ফলে পাটশিল্প মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। এ অবস্থার উত্তরণে পাটকলগুলোতে অনলাইন কাইজেন পদ্ধতি চালু এ শিল্পের গুণগত মানোন্নয়ন ও উৎপাদনশীলতা বাড়াতে ইতিবাচক অবদান রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। দিনব্যাপী এ কর্মশালায় ৩৫টি পাটকলের নির্বাহী ও কারিগরি শাখার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন। এতে অনলাইন কাইজেন সফটওয়্যার ব্যবহার করে উৎপাদনশীলতা বাড়ানো ও উৎপাদন কার্যক্রম মনিটরিংয়ের বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।