রপ্তানি বহুমুখীকরণ প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ জুন ২০১৯, ১১:৫৩ এএম
রপ্তানি বহুমুখীকরণ সংক্রান্ত ‘এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জব’ নামে একটি প্রকল্পে খরচ বাড়ছে। প্রকল্পটিতে নতুন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করায় এই খরচ বাড়ছে। প্রকল্পটির মূল ব্যয় ছিল ৯৪১ কোটি টাকা। এখন ৭১ কোটি টাকা বাড়িয়ে ব্যয় ধরা হচ্ছে ১ হাজার ১২ কোটি ১২ লাখ টাকা।
সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে সংশোধনী প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা হতে পারে। অনুমোদন পেলে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর আগে ২০১৪ সালের ২৮ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাণিজ্য বহুমুখীকরণের জন্য তার নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পটি নেয়া হয়েছে। ২০১৭ সালের ৯ আগস্ট একনেকে এটি অনুমোদিত হয়। প্রকল্পটি সংশোধনের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, শুরুতে এতে ইকুইপমেন্ট, মেশিনারিজ ও লজিস্টিকসে অন্তর্ভুক্ত ছিল না, কিন্তু সংশোধিত প্রকল্পে এ খাতে ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড মেকানিক্যাল মেশিনারিজ ফর টেকনোলজি সেন্টারস, অফিস ইকুইপমেন্ট এন্ড ফার্নিচার ফর টেকনোলজি সেন্টারস এবং লজিস্টিকস ফ্যাসিলিটিজ ফর টেকনোলজি সেন্টারস নামে ৩টি অংশ অন্তর্ভুক্ত করার ফলে এ খাতে খরচ বাড়ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার একটি প্রধান লক্ষ্য হলো রপ্তানি বাড়ানোর মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য কমিয়ে নিয়ে আসা। এ জন্য রপ্তানি বহুমুখীকরণকে একটি কৌশল হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশে রপ্তানি নীতিতে রপ্তানি বহুমুখীকরণের জন্য পণ্য ও মার্কেট বহুমুখীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। দেশের রপ্তানি বাজার সীমিত পণ্য ও সীমিত বাজার এলাকায় সীমাবদ্ধ। আন্তর্জাতিক বাজারে যে কোনো অস্থিতিশীলতা রপ্তানি বাজারকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এ সমস্যা নিরসনে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় রপ্তানি খাতগুলোকে চিহ্নিত করে একটি প্রকল্প গ্রহণের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) মাধ্যমে বিশ্বব্যাংককে অনুরোধ করে। প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমগুলো হচ্ছে, সেক্টরভিত্তিক কারিগরি প্রশিক্ষণ, ইএসকিউ রেফারেন্স গাইড বুক প্রণয়ন, কর্মশালা, শিল্প প্রতিষ্ঠান ও বিপিসির ক্যাপাসিটি বিল্ডিং, ইএসকিউ কমপ্লায়েন্স এসেসমেন্ট এবং ইএসকিউ গ্যাপ পূরণে ইআরএফ প্রদান, রপ্তানি বাজার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো, মার্কেট ইনটেলিজেন্স ও মার্কেট ব্রান্ডিং সংক্রান্ত কাজ করা।
প্রোডাক্টটিভিটি ইনহ্যান্সমেন্ট প্রোগ্রাম এ অংশের আওতায় প্রস্তাবিত ৩টি সেক্টরের উৎপাদনশীলতা বাড়ানো ও প্রযুক্তি উন্নয়নে ৪টি টেকনোলজি সেন্টার নির্মাণ করা হবে।
এই সেক্টরগুলোতে পণ্যের ডিজাইন সুবিধা, গুণগত মানোন্নয়ন, আধুনিক মোল্ড, ট্যুলস, ডাইস, টেস্টিং, সার্টিফিকেশন ইত্যাদি সুবিধাসংবলিত আধুনিক প্রযুক্তি স্থাপনের মাধ্যমে প্রযুক্তিগত সহায়তা ও প্রশিক্ষিত মানব সম্পদ তৈরি করা হবে।
পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফ্যাসিলিটি ফর ইনফ্রাস্ট্রাকচার কন্সট্রেইন : এ অংশের আওতায় ৩টি সেক্টরের জন্য রিসাইক্লিং সুবিধা স্থাপন, বিশেষ সাধারণ প্রযুক্তি সেন্টার স্থাপন, কোল্ড স্টোরেজ এবং প্রযুক্তি সেন্টার ও শিল্প ক্লাস্টারের মধ্যে যাতায়াত অবকাঠামো সুবিধার উন্নয়নকাজ বাস্তবায়ন করা হবে।
বিশ্বব্যাংক ও পরিকল্পনা কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে অনুমোদিত ডিপিপিবহিভর্‚ত ৪ জন পরামর্শক নিয়োগ দেয়া হয়। প্রকল্পের প্রয়োজনে পরবর্তী সময় আরো ৫ জন জুনিয়র পরামর্শক নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়েছে। সেবা খাতের আওতায় এই অতিরিক্ত জনবলের বেতন-ভাতা এবং অন্যান্য কিছু অংশের ব্যয় বৃদ্ধির কারণে এ খাতে ব্যয়ের পরিমাণ ১৪৩ কোটি টাকার জায়গায় ১৯২ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।