×

খেলা

ক্যাচ মিসের খেসারত দিল প্রোটিয়ারা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ জুন ২০১৯, ০১:৩৮ এএম

ক্যাচ মিসের খেসারত দিল প্রোটিয়ারা
নিউজিল্যান্ডকে মাটিতে নামিয়ে আনার মোক্ষম সুযোগ কাজে লাগাতে না পারায় প্রোটিয়াদের সেমির স্বপ্ন ফিকে হয়ে গেল। ২০ ওভারে ৮৬ রানে কিউইদের ৪ উইকেট তুলে নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা ম্যাচ জেতার যে সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছিলেন তাতে জল ঢেলে দিয়েছেন ব্ল্যাক ক্যাপস অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। দলের বিপদে কীভাবে বুক চিতিয়ে লড়তে হয় তা দেখিয়ে দিয়েছেন তিনি। কথায় আছে, ভাগ্য সব সময় বীরের সঙ্গে থাকে। গতকাল এ সত্য ফের এজবাস্টনে প্রমাণ করল কিউইরা। ফিল্ডারদের ব্যর্থতায় হাতের নাগালে ঘুরপাক খাওয়া জয় নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি ফাফ ডু প্লেসিস বাহিনী। পারবেই বা কেমনে? যে ম্যাচে আট-দশটি ম্যাচ হাত ফসকে বেরিয়ে যায় সেখানে ম্যাচ জেতার স্বপ্ন দিবা স্বপ্নের মতোই। প্রোটিয়াদের ৪ উইকেটে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ওঠে এসেছে নিউজিল্যান্ড। ৫ ম্যাচে তাদের সংগ্রহ ৯ পয়েন্ট। সমান সংখ্যক ম্যাচ থেকে ৮ পয়েন্ট নিয়ে ইংল্যান্ড দ্বিতীয়, অস্ট্রেলিয়া তৃতীয় স্থানে রয়েছে। ৪ ম্যাচ থেকে ৭ পয়েন্ট নিয়ে কোহলিরা চার নম্বরে অবস্থান করছে। ৫ ম্যাচ থেকে ৫ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে রয়েছে টাইগাররা। আজ অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে পালে মাশরাফি বাহিনীর সেমিফাইনালে খেলার সম্ভাবনা বেঁচে থাকবে। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা নিউজিল্যান্ডের সেমিফাইনালে প্রবেশের দ্বার উন্মোচিত বললে ভুল বলা হবে না। কিউইদের অবশিষ্ট ম্যাচ চারটি হচ্ছে উইন্ডিজ, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। এ চার ম্যাচের অন্তত দুটিতে জিততেই কেল্লাফতে। গতকাল এজবাস্টনে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে কখনো ধৈর্য হারা হননি কেন উইলিয়ামসন। সাহসিকতার সঙ্গে এক প্রান্ত আগলে রাখেন তিনি। ষষ্ঠ উইকেটে কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমকে সঙ্গী করে ৯১ রানের জুটি গড়ে তোলেন কিউই অধিনায়ক। সাজঘরে ফেরার আগে পাঁচ চার এবং ২ ছক্কার সাহায্যে ৪৭ বলে ৬০ রানে মূল্যবান ইনিংস খেলেন। শেষ ওভারে খেলা বেশ জমে ওঠে। শেষ ওভারে ম্যাচ জিততে কিউইদের প্রয়োজন ৮ রান। অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ফিকোয়াওয়ের ওভারের দ্বিতীয় বলে বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বাদশ এবং এ বিশ^কাপে প্রথম সেঞ্চুরির মুখ দর্শন করেন। দুর্দান্ত শতকের কল্যাণে ম্যাচসেরা হন তিনি। শিরোপা জয়ের লক্ষ্য নিয়ে ইংল্যান্ডে আসা প্রোটিয়াদের এবারের বিশ^কাপ আসরটা কাটছে দুঃস্বপ্নের মতো। ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ ও ভারতের বিপক্ষে হেরে যাওয়া দলটি আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে জয়ের মধ্য দিয়ে বাঁচিয়ে রাখে শেষ চারে যাওয়ার আশা। প্রতিটি ম্যাচই বাঁচা-মরার লড়াই এমন একটা সমীকরণে অবস্থান করছিল ফাফ ডু প্লেসিসের নেতৃত্বাধীন দলটি। এমন কঠিন অবস্থায় গতকাল উজ্জীবিত নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হয় তারা। নিউজিল্যান্ড যে দ্বাদশ বিশ^কাপের হট ফেভারিট সেই প্রমাণ এ দিন রেখেছে কেন উইলিয়ামসনের নেতৃত্বাধীন দলটির বোলাররা। কিউই বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ২৪১ রানেই আটকে যায় প্রোটিয়াদের ইনিংস। ম্যাচ শুরু হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৩টায়। অথচ বার্মিংহামের এজবাস্টনে টসই হয় বিকেল পৌনে ৫টায়। অর্থাৎ নির্ধারিত সময়ের প্রায় দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় বিলম্বে মাঠে গড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার গতকালের ম্যাচটি। আর এই বিলম্বের কারণ একটাই, বেরসিক বৃষ্টি। বিলম্বে শুরু হওয়ার কারণে ম্যাচের ব্যাপ্তি কমিয়ে ৪৯ ওভারে নামিয়ে আনা হয়। বৃষ্টিতে বিলম্বিত হওয়া ম্যাচে টস জেতেন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। আর অনুমিতভাবেই আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কারণ একটাই, ভেজা উইকেটের সুবিধা কাজে লাগানো। ইনজুরি কাটিয়ে এই ম্যাচের একাদশে ফেরেন প্রোটিয়া পেসার লুঙ্গি এনগিদি। ফলে আরো শক্তিশালী হয় প্রোটিয়াদের পেস অ্যাটাক। আগে থেকেই বলা হচ্ছিল যে, এই লড়াইটা হবে দুদলের পেসারদের মধ্যে। প্রোটিয়াদের প্রথম ইনিংস শেষে এই লড়াইয়ে যে কিউই পেসাররা এগিয়ে আছেন সে কথা বলাই যায়। অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণিত করে দ্বিতীয় ওভারেই প্রোটিয়া ওপেনার কুইন্টন ডি কককে সাজঘরে ফেরান কিউই পেসার ট্রেন্ট বোল্ট। বোল্টের দ্রুতগতির ইয়র্কারে সরাসরি বোল্ড হন কক। দ্বিতীয় উইকেটে ভালো প্রতিরোধের চেষ্টা করেছিলেন হাশিম আমলা ও অধিনায়ক ডু প্লেসিস। তবে তাদের জুটি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে দেননি ফর্মে থাকা কিউই পেসার লুকি ফার্গুসন। আউট হওয়ার আগে ২৩ রান করেন প্লেসিস। তবে অর্ধশতক তুলে নেন আমলা। তার ব্যাট থেকে আসে ৫৫ রান। এ দিন অনন্য এক রেকর্ড গড়েছেন এই প্রোটিয়া ওপেনার। বিরাট কোহলির পর দ্বিতীয় দ্রুততম ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডেতে ৮ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন আমলা। ১৭৯ ম্যাচে তার রান এখন ৮০৩১। মিডল অর্ডারে এইডেন মারক্রাম ও ডেভিড মিলার ক্রিজে সেট হয়েও ইনিংসটাকে বড় করতে ব্যর্থ হন। মারক্রাম ৩৮ ও মিলার ৩৬ রানে আউট হন। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৪৯ ওভারে ৬ উইকেটে ২৪১ রানের মাঝারি স্কোর দাঁড় করায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ভান ডার ডুসেন ৬৭ রানে অপরাজিত ছিলেন। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে লুকি ফার্গুসন ৩টি উইকেট নেন। এ ছাড়া ১টি করে উইকেট নেন ট্রেন্ট বোল্ট ও মিচেল সান্টনার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App