জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এজেন্ট ব্যাংকিং
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ জুন ২০১৯, ০৫:০০ পিএম
দেশে এজেন্ট ব্যাংকিং জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এই ব্যাংকিং ব্যবস্থায় প্রায় ২৯ লাখ একাউন্ট খোলা হয়েছে। ২০১৯ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত বিগত ছয় বছরে এই ব্যাংকিং ব্যবস্থায় জমার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকার বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের (বিবি) জানুয়ারি-মার্চ ২০১৯ প্রান্তিক প্রতিবেদন অনুযায়ী এই সময়ে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে জমার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৭৩৪.৫০ কোটি টাকা যা ২০১৮ সালের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকের চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি। ওই সময়ে এই ব্যাংকিংয়ে জমার পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ১১২.৪১ কোটি টাকা। জানুয়ারি থেকে মার্চ প্রান্তিকের শেষ নাগাদ দেশব্যাপী এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে খোলা হিসাবের সংখ্যাও আগের প্রান্তিকের তুলনায় ১৮ শতাংশ বা প্রায় ৪.৫০ লাখ বেড়েছে। ২০১৯ সালের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের একাউন্টের সংখ্যা ২৪ লাখ ৫৬ হাজার ৯৮২টি থেকে বেড়ে ২৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৫টিতে দাঁড়িয়েছে। জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকের শেষ নাগাদ এজেন্টের সংখ্যা আগের প্রান্তিকের ৪ হাজার ৪৯৩টি থেকে বেড়ে ৪ হাজার ৮৬৬টিতে দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে ব্যাংক এজেন্ট আউটলেটও আগের প্রান্তিকের ৬ হাজার ৯৩৩টি থেকে বেড়ে ৭ হাজার ৮৩৮টিতে দাঁড়িয়েছে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যে, এই প্রান্তিকে বাংলাদেশি প্রবাসীরা এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ৭,১৮২.৬৫ কোটি টাকা পাঠিয়েছেন। ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর প্রান্তিকে এই ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রবাসীদের পাঠানো টাকার পরিমাণ ছিল ৫,৫৫৭.৪২ কোটি টাকা। সম্প্রতি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইসলামিক ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের (আইবিবিএল) উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু রেজা মো. ইয়াহিয়া বলেন, তৃণমূল পর্যায়ের গ্রাহকদের কাছে সেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা চালানোর মাধ্যমে এজেন্ট ব্যাংকিং দেশের বিভিন্ন স্থানে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। তিনি আরো বলেন, একটি বৈধ এজেন্সি চুক্তির আওতায় প্রতিনিধি নিয়োগের মাধ্যমে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এজেন্ট ব্যাংকিং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি চমৎকার পদক্ষেপ উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাধারণত একটি ব্যাংকের শাখা পরিচালনা করতে বেশকিছু লোকবল ও মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় হয়। ইয়াহিয়া আরো বলেন, একটি ব্যাংক এজেন্টের মাধ্যমে তার কার্যক্রম পরিচালনা করলে তা ব্যাংক ও গ্রাহক উভয়ের জন্যই সহায়ক হয়। তিনি বলেন, আইবিবিএলও এজেন্ট ব্যাংকিং শুরুর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে একটি ভ‚মিকা পালন করছে। তিনি আরো বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই ৫০৩টি আউটলেটের জন্য অনুমোদন পেয়েছি। আমরা প্রায় ৫০০টি আউটলেটে সেবা প্রদান শুরু করেছি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০১৩ সালে ব্যাংক এশিয়াকে লাইসেন্স প্রদানের মাধ্যমে এজেন্ট ব্যাংকিং শুরু করে।
ইতোমধ্যে মোট ২১টি বাণিজ্যিক ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের লাইসেন্স পেয়েছে। বর্তমানে ১৯টি ব্যাংক দেশব্যাপী তাদের এই ব্যাংকিংয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যে ১৯টি বাণিজ্যিক ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে সেগুলো হলো- ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, স্যান্ডার্ড ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড, এবি ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, ব্র্র্যাক ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংক।