×

অর্থনীতি

স্বাস্থ্যে টাকার অঙ্ক বাড়ে, সুফল পায় না গণমানুষ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ জুন ২০১৯, ১২:৩৩ এএম

স্বাস্থ্যে টাকার অঙ্ক বাড়ে, সুফল পায় না গণমানুষ
প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বেড়েছে। টাকার অঙ্কে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়লেও এর বেশিরভাগটাই চলে যায় এই খাতে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতনভাতার পেছনেই। এ ছাড়া যন্ত্রপাতি ক্রয় এবং অবকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বরাদ্দ ব্যয় হয়। সাধারণ জনগণ এই বরাদ্দে কতটুকু উপকৃত হবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, মোট বাজেটের ৭ শতাংশের কম বরাদ্দ দিয়ে জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়, সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত তো দূরের কথা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ও স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের জন্য বরাদ্দকৃত বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে ২৫ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বরাদ্দ ছিল ২২ হাজার ৩৩৬ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তা ছিল ২০ হাজার ৬৫১ কোটি টাকা। বাজেট বক্তৃতায় বলা হয়; স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের পরিচালন ব্যয় ১০ হাজার ৭ কোটি টাকা ও উন্নয়ন ব্যয় ৯ হাজার ৯৩৬ কোটি টাকা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের পরিচালন ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা ও উন্নয়ন ব্যয় ধারা হয়েছে ২ হাজার ৩৩০ কোটি টাকা। বরাদ্দ নিয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত : স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলন জাতীয় কমিটির সভাপতি ও বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশেনের (বিএমএ) সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই-মাহবুব ভোরের কাগজকে বলেন, প্রতিবছরই বিশাল আকারের বাজেট ঘোষণা করা হয়। কিন্তু স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে নতুন তেমন কিছুই থাকে না। যে বাজেট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এর বেশিরভাগটাই চলে যায় এই খাতে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতনভাতার পেছনেই। সাধারণ জনগণ কতটুকু উপকৃত হবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। স্বাস্থ্য খাতে বাজেটে যে পরিমাণ বরাদ্দ দেয়া হয়, তাতে মনে হয় সরকার পরিকল্পনা করে এই খাতকে বেসরকারি খাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সাধারণ মানুষের ‘আউট অব পকেট এক্সপেন্ডিচার (নিজস্ব ব্যয়) বাড়বে। টাকার অঙ্ক যতই বাড়ুক সাধারণ মানুষ বিশেষ কোনো সুবিধা পাবে না। পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ-এর চেয়ারম্যান এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের সাবেক আঞ্চলিক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মুজাহেরুল হক ভোরের কাগজকে বলেন, টাকার অঙ্কে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বেড়েছে। কিন্তু এই বরাদ্দ দিয়ে জনগণের স্বাস্থ্য সেবার মান বৃদ্ধি এবং বিস্তৃতি খুব একটা সম্ভব হবে না। সরকার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতনভাতা বাড়িয়েছেন এবং ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেবেন। বর্ধিত বেতনভাতা এবং নতুন নিয়োগকৃত চিকিৎসকদের বেতনেই বরাদ্দের বেশিরভাগ অর্থ ব্যয় হবে। এ ছাড়া যন্ত্রপাতি ক্রয় এবং অবকাঠামো খাতে বরাদ্দের উল্লেখযোগ্য অংশ ব্যয় হবে। জনগণের সেবার জন্য বরাদ্দ অল্পই। এই বাজেট দিয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। বিএমএ-এর মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল ভোরের কাগজকে বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে উল্লেখযোগ্য বরাদ্দ হয়নি। আমি হতাশ। এই বরাদ্দ দিয়ে ‘সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা’ সেবা কিভাবে নিশ্চিত হবে? তাছাড়া প্রিভেনটিভ মেডিসিন, মাতৃমৃত্যু রোধ, স্কুল হেলথ নিয়ে উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ দেখা গেল না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App