ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে নির্মাণাধীন লালদীঘি সুইমিংপুল
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ জুন ২০১৯, ০৫:০৭ পিএম
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগের অবহেলার কারণে নগরীর ঐতিহাসিক নির্মাণাধীন লালদীঘি সুইমিংপুল এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এ বি এম মহিউদ্দীন চৌধুরী মেয়র হিসেবে তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালনকালে এই সুইমিংপুল নির্মাণ কাজ শুরু হয়। মহিউদ্দীন চৌধুরীর পর এম মনজুর আলম মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন। তারপর বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনও ৪ বছরের বেশি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। অথচ লালদীঘিতে ডুবন্ত ঝুঁকিপুর্ণ লোহার রড অপসারণ করা হয়নি।
এই সুইমিংপুল নির্মাণের বিরোধিতা করেছিলেন চট্টগ্রামের নাগরিক ও সুধীজনদের একটি অংশ। তাদের যুক্তি ছিল, এই লালদীঘির একটি ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। এই ধরনের সুইমিংপুল নির্মাণের কারণে লালদীঘির সৌন্দর্যহানি ঘটবে। তারপরও এখানে সুইমিংপুল নির্মাণে মেয়র মহিউদ্দীন চৌধুরী অনড় থাকেন। এক পর্যায়ে নির্মাণ কাজও শুরু করা হয় আর কাজের অংশ হিসেবে দীঘির দক্ষিণ দিকে বেশ কিছু অংশজুড়ে পানি সেচে নিচে ও উত্তর পাশে রড দিয়ে আরসিসি ঢালাই করা হয়। কিন্তু এক পর্যায়ে বিভিন্ন মহলের অব্যাহত জোরালো আন্দোলন ও সমালোচনার কারণে মহিউদ্দীন চৌধুরী সুইমিংপুল নির্মাণ থেকে পিছিয়ে আসেন। ফলে দীঘির উত্তরপাশে আরসিসি ঢালাইয়ের মাধ্যমে রিটেইনিং ওয়াল পুরোপুরি নির্মাণ করা যায়নি। যে কারণে লোহার রডগুলো পানিতে ডুবন্ত অবস্থায় খাড়াখাড়িভাবে এখনো রয়ে গেছে। বর্ষায় বৃষ্টির পানিতে দীঘি পুরোপুরি ডুবে গেলে রডগুলো দেখাও যায় না।
মেয়র মহিউদ্দীন চৌধুরীর সময়েই পার্ক ও দীঘির পাড়ে স্বাস্থ্য সচেতন নাগরিকদের সকালে ও বিকেলে হাঁটার জন্য ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। অথচ নিরাপত্তাব্যবস্থা ভালো না হওয়ার কারণে এর ফাঁক গলে যে কোনো সময় বহিরাগত লোকজন ও শিশু-কিশোররা পার্কে ঘোরাঘুরি ও দীঘিতে গোসল করতে নামে। আর এতে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। এমনিতে অভিযোগ আছে এই দীঘি সংলগ্ন পার্কে মাদকসেবী ও ভবঘুরেদের আনাগোনা আছে। গত ১২ জুন সকালে লালদীঘিটি সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে পার্কের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নানা অব্যবস্থাপনা চোখে পড়ে।
সুইমিংপুল নির্মাণের কাজে ব্যবহৃত ঝুঁকিপূর্ণ লোহার রডগুলো অপসারণ করে দীঘিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা তা নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী ফরহাদুল আলমের সঙ্গে আলাপ হলে তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, বিষয়টি অনেক আগের। সুইমিংপুল নির্মাণে লালদীঘির ওই স্থানটি এখন কী অবস্থায় তাও দেখিনি। আর প্রকৌশলগতভাবে লোহার রডগুলো কী করা হবে তা তো আমার একার ব্যাপার না এটা সম্মিলিত সিদ্ধান্তের বিষয়। তাই কিছু বলা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল মহিউদ্দীন আহমেদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।