×

মুক্তচিন্তা

প্রয়োজন পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও উন্নয়ন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ জুন ২০১৯, ০৮:১৪ পিএম

ঈদ, পার্বণে দেশের বিনোদন কেন্দ্রগুলো পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে। এই সময়ে নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর নির্বিশেষে সব বয়সের মানুষ পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঘুরে বেড়ান। বিশেষ করে কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকত, চট্টগ্রামের বিনোদন কেন্দ্র, সিলেটের পর্যটনস্পট, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ ও মাধবকুণ্ড এবং পটুয়াখালীর কুয়াকাটাসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকের ঢল নামে।

দেশের পর্যটনশিল্প বিকাশের রয়েছে সমূহ সম্ভাবনা। তা সত্ত্বেও নানা অব্যবস্থাপনার কারণে এ শিল্পকে একটি সফল শিল্প হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। এ খাত থেকে বিপুল কর্মসংস্থান ও অর্থ উপার্জনের সম্ভাবনা থাকলেও বরাবরই থেকেছে উপেক্ষিত। জানা যায়, বাংলাদেশে প্রায় পাঁচশ ছোট-বড় প্রাকৃতিক ও ঐতিহাসিক পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে।

অপার নৈসর্গিক সৌন্দর্য, প্রত্নতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক নিদর্শনসমৃদ্ধ বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প বিশ্বের ভ্রমণপ্রিয় মানুষকে আকৃষ্ট করছে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন, পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার, পার্বত্য চট্টগ্রামের অকৃত্রিম সৌন্দর্য, সিলেটের সবুজ অরণ্যসহ আরো অনেক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি আমাদের বাংলাদেশ।

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত পৃথিবীর একমাত্র দীর্ঘতম অবিচ্ছিন্ন সমুদ্রসৈকত, যা আর পৃথিবীর অন্য কোথাও নেই। ১২০ কি. মি. দীর্ঘ সৈকতটিতে কাদার অস্তিত্ব পাওয়া যায় না। তাই তো পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সমুদ্রসৈকতের চেয়ে কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকত বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ এবং এর রয়েছে অপার সম্ভাবনা। কক্সবাজারকে কেন্দ্র করে নেয়া হয়েছে নানা পরিকল্পনা। বাংলাদেশের হাওরাঞ্চল পর্যটনের আরেক সম্ভাবনার নাম।

বাংলাদেশের জেলাগুলোর মধ্যে সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, সিলেট, কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া এ সাতটি জেলার ৭ লাখ ৮৪ হাজার হেক্টর জলাভূমিতে ৪২৩টি হাওর নিয়ে হাওরাঞ্চল গঠিত। হাওরাঞ্চলের সাগরসদৃশ বিস্তীর্ণ জলরাশি এক অপরূপ মহিমায় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এত সম্ভাবনাকে আমরা কাজে লাগাতে পারছি না।

পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন, সম্প্রসারণ ও বিপণনের লক্ষ্যে ২০১৬ সালকে পর্যটন বর্ষ হিসেবে উদযাপন করে সরকার। এরপর আর কোনো অগ্রগতি আমাদের চোখে পড়েনি। দুঃখজনক হলেও সত্য, সরকারের নানামুখী উদ্যোগ ও চেষ্টা সত্ত্বেও দেশে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও প্রসার কাক্সিক্ষত পর্যায়ে উন্নীত করা যায়নি। এ জন্য মূলত আন্তরিকতার অভাবই দায়ী।

দেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও উন্নয়ন ঘটাতে হলে প্রথমত আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটাতে হবে। সেইসঙ্গে রাজনৈতিক সংস্কৃতিরও পরিবর্তন জরুরি। এ শিল্পের বিকাশ হলে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনা যেমন ফুটে উঠবে তেমনি দেশের অর্থনীতির চাকাও দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাবে। ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি গোল বাস্তবায়ন করার জন্য সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে এই পদক্ষেপে পর্যটন সমৃদ্ধ দেশ গঠনের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App