×

জাতীয়

ঈদের তৃতীয় দিনেও নাড়ির টানে মানুষ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ জুন ২০১৯, ১২:৫৭ পিএম

ঈদের তৃতীয় দিনেও নাড়ির টানে মানুষ
ঈদের তৃতীয় দিনে গতকাল শুক্রবারও রাজধানী ছাড়ে মানুষ। ঈদের আগে যারা ঢাকা ছাড়তে পারেননি তারা ঈদের পর দিন ঢাকা ছাড়তে শুরু করেন। গতকালও তাদের অনেকেই প্রিয়জনের সান্নিধ্য পেতে বাড়ি যান। ফলে ঈদযাত্রা গতকাল তৃতীয় দিনেও অব্যাহত থাকে। বাস স্টেশন, লঞ্চ টার্মিনাল ও রেলস্টেশনে ঘরমুখো যাত্রীদের চাপ দেখা গেছে। এদিকে ঈদের ছুটি শেষ হওয়ার পর দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটির প্রথম দিনে গতকাল শুক্রবার থেকেও মানুষ ঢাকা ফিরতে শুরু করেছে। আগামীকাল রবিবার থেকে সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত, ব্যাংক-বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খুলে যাওয়ার কারণে যারা বাড়তি ছুটি নেননি তাদের আজই কর্মস্থলে ফিরতে হবে। ফলে কর্মস্থলে ফেরার ঝামেলা এড়াতে অনেকেই গতকাল রাজধানীতে ফিরেন। ফলে কমলাপুর রেলস্টেশন, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল ও বিভিন্ন বাস টার্মিনালে সকাল থেকে বেশ কিছু যাত্রী নামতে দেখা গেছে। তবে আজ শনিবার ঢাকায় ফেরা মানুষের চাপ বাড়বে। রংপুর থেকে গাবতলী বাস টার্মিনালে এসে নেমেছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ওয়াহিদুল হক। তিনি জানান, আজ শনিবার পর্যন্ত ছুটি থাকলেও ভিড় এড়াতে আগেভাগেই ঢাকায় ফিরে এলাম। পথে কোথাও কোনো যানজটে পড়তে হয়নি। উত্তরবঙ্গ থেকে এত অল্প সময়ে আগে কখনো ফেরেননি বলে জানান তিনি। তার মতো অনেকে আগেভাগে ফিরে আসেন। আবার ছুটি ফুরিয়ে যাওয়ায় অনেকে আগেভাগে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান। সায়েদাবাদ ও আরামবাগ এলাকাতেও চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ফেনী নোয়াখালী থেকে কিছু যাত্রীকে বাস থেকে নামতে দেখা গেছে। তবে বাসগুলোতে যাত্রীর সংখ্যা কম ছিল। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের শ্যামলী কাউন্টারের ম্যানেজার আবুল কালাম জানান, ঢাকায় ফেরা যাত্রীদের চাপ নেই। আজ ছুটি শেষ হলে যাত্রীর চাপ বাড়তে শুরু করবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আসা-যাওয়ার পথে কোথাও কোনো যানজটে পড়তে হয়নি বলে তারা জানান। তবে সকালের দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্রামবাসী ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ঘটনার জের ধরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে খাঁটিহাতা বিশ^রোড মোড়ে প্রায় এক ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। ফলে এই সড়কের উভয় পাশে দূরপাল্লার ও স্থানীয় পর্যায়ের শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। সে কারণে এই সড়কের যাত্রীরা প্রায় দেড় ঘণ্টা বিড়ম্বনার মধ্যে পড়েন। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পর দুপুর থেকে আবার স্বাভাবিকভাবে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। ঢাকা-টাঙ্গাইল, টঙ্গী-গাজীপুর চৌরাস্তা সড়কের কোথাও কোনো ভিড় ছিল না। স্বাভাবিকভাবেই যানবাহন চলাচল করেছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনে আসা ট্রেনগুলোতে যাত্রীরদের কোনো চাপ ছিল না। বেশিরভাগ বগি ফাঁকা ছিল। তবে ঘরমুখো যাত্রীদের ভিড় বেশি ছিল। গতকাল শুক্রবার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ৬০টি লঞ্চ এসে ভিড়লেও ফেরার যাত্রী তেমন ছিল না। তবে গতকাল সকাল থেকেই সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া ঘরমুখো যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে। যেসব লঞ্চ বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, পিরোজপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর থেকে গতকাল ঢাকায় এসে পৌছেছে তাতে মোটেই ভিড় ছিল না। বরিশাল থেকে ঢাকায় আসা যাত্রী রাকিব জানান, ভিড় না থাকায় স্বস্তিতে ঢাকায় ফিরতে পেরেছেন। তবে অতিরিক্ত ভাড়া নিয়েছে। আগামীকাল থেকে অফিস করতে হবে তাই বেশি ভাড়া দিয়ে ঢাকায় এসেছি। কিন্তু এসব লঞ্চ বিকেলের দিকে যখন আবার যাত্রা শুরু করে তখন ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে। এখনো লঞ্চগুলোতে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া যাত্রীর সংখ্যা অনেক বেশি দেখা গেছে। সদরঘাট টার্মিনালে বিআইডবি্লউটিএ এর পরিদর্শক হুমায়ুন কবির জানান, সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত পর্যন্ত ৩০টি লঞ্চ টার্মিনাল ছেড়ে গেছে। সব লঞ্চেই যাত্রীদের ভিড় ছিল। এটা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। ঈদের পরদিন ১০৩টি লঞ্চ প্রচুর যাত্রী নিয়ে সদরঘাট ছেড়েছে। এদিকে ঢাকায় ফেরা এবং ঢাকা ছেড়ে যাওয়া যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাস-লঞ্চ টার্মিনাল ও রেলস্টেশনে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা অব্যাহত রয়েছে। ঈদ উপলক্ষে গত ৩০ মে থেকে শুরু হওয়া এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা ১২ জুন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে জানা গেছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App