×

মুক্তচিন্তা

বাংলাদেশ-জাপান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দিকদিগন্ত

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ জুন ২০১৯, ০৯:১৯ পিএম

বাংলাদেশ-জাপান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দিকদিগন্ত

বাংলাদেশ-জাপানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি বড় অনুষঙ্গ হলো বিগত আটচল্লিশ বছরে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বাণিজ্যিক আদান-প্রদানের প্রসারতা। দুদেশের সম্পর্কের গভীরতা এবং গতি-প্রকৃতিতে অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং বাংলাদেশ-জাপান দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের উত্থান-পতন বিশেষ নির্দেশক হিসেবে কাজ করেছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের অব্যবহিত পরে জাপান সরকার বাংলাদেশের যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতি পুনর্গঠনে এগিয়ে আসে।

অর্থনৈতিক অবস্থানের দিক দিয়ে ব্যাপক ব্যবধান সত্ত্বেও এশিয়ার এ দুটি দেশের সরকার ও জনগণের মধ্যে বিদ্যমান সুসম্পর্ক সুদৃঢ়করণ ও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা সম্প্রসারণের ঐকান্তিক ইচ্ছা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যস্বার্থ দুদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের আধুনিক পর্যায়ে প্রাধান্য পেলেও বর্তমান সম্পর্কের ভিত্তি সুদীর্ঘ সময়ের গভীরে প্রোথিত। ওইসিডি সদস্য দেশগুলোর মধ্যে শিল্পোন্নত জাপানই সর্বপ্রথম বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। এশিয়ার সমৃদ্ধ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম জাপান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে শোচনীয় পরাজয়ের প্রেক্ষাপটে মিত্র শক্তির নেতৃত্বদানকারী যুক্তরাষ্ট্রের পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। ১৯৭২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তারিখে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার সময় জাপান তখনো মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির প্রভাব বলয়েরই একটি দেশ ছিলো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বিপরীত অবস্থান গ্রহণ করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো চীনও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে পাকিস্তানের মিত্র দেশ হিসেবে বিপরীত অবস্থানে ছিল। ঠিক এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে জাপানের সরকার ও জনগণের সমর্থন এবং বিজয়ের অব্যবহিত পরে বাংলাদেশকে স্বীকৃতিদানের সিদ্ধান্ত নিয়ে জাপান নিঃসন্দেহে তাৎপর্যবাহী ও সুদূরপ্রসারী কূটনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দেয়। জাপানিদের ভৌগোলিক অভিজ্ঞানে বর্তমান বাংলাদেশ হচ্ছে তাদের নিজেদের নৃতাত্ত্বিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অর্থনীতির বলয়ভুক্ত দেশম-লীর সীমান্ত। বাংলাদেশ এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় এবং মধ্য এশীয়-ইউরোপীয় দেশম-লীর ঠিক মধ্যবর্তী দেশ। বাংলাদেশকে এই দুই ভিন্নধারার মধ্যে মেলবন্ধন সৃষ্টির দ্যোতক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এশীয় ঐকতান সৃষ্টিতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক প্রয়াস এবং এর ভৌগোলিক-রাজনৈতিক অবস্থানকে বিশেষ তাৎপর্যবহ বলে জাপান মনে করে। বাংলাদেশ এবং এর জনগণের প্রতি জাপানিদের আগ্রহ বেশি হওয়ার যেসব কারণ অনুসন্ধানে জানা যায় তার মধ্যে প্রথমটি হলো নৃতাত্ত্বিক। বাংলাদেশের উপজাতীয় সম্প্রদায়ের মুখনিঃসৃত ভাষা ও তাদের শারীরিক আকার-আকৃতির সঙ্গে জাপানিদের কিছু মিল লক্ষ করা যায়। মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড এমনকি চীনের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের জনজীবন ও সংস্কৃতির প্রভাব বাংলাদেশের পূর্ব সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বিশেষ করে উপজাতীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে লক্ষ করা যায়। দ্বিতীয় কারণ, ধর্মীয়। জাপানিদের একটি বড় অংশ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধ নেপালের কপিলাবস্তুতে জন্মগ্রহণ করেন এবং পাল ও মৌর্য যুগে বাংলাদেশ অঞ্চলেই বৌদ্ধ ধর্মের সর্বাধিক প্রচার ও প্রসার ঘটে। বাংলাদেশের পাহাড়পুর, মহাস্থানগড় আর ময়নামতিতে প্রাচীন বৌদ্ধবিহার প্রতিষ্ঠা এবং এসব বিদ্যায়তন ও ধর্মশালাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে বৌদ্ধ সংস্কৃতি ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রসার ঘটে। বিক্রমপুর অঞ্চলে শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপঙ্করের জ্ঞান সাধনার দীপ্তি এ কথা স্মরণ করিয়ে দেয় যে এক সময় বাংলা অঞ্চলই বৌদ্ধ জ্ঞান-বিজ্ঞান বিস্তারের তীর্থক্ষেত্র ছিল। তৃতীয় কারণটি হলো ভৌগোলিক ও প্রাকৃতিক পরিবেশ। দীর্ঘদিনের সাংস্কৃতিক যোগাযোগ হলো চতুর্থ কারণ। প্রাচীনকাল থেকেই উভয় অঞ্চলের জনগণের মধ্যে সাংস্কৃতিক সখ্য ও যোগাযোগ ছিল বোঝা যায়। বিশ শতকের শুরু থেকেই জাপানিদের সঙ্গে বাঙালিদের সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন রচনা করেন রবীন্দ্রনাথ চারু ও কারুশিল্প চর্চার বিনিময়ের মাধ্যমেই। সর্বোপরি দুদেশের মধ্যে মেলবন্ধন ও সহমর্মিতার পরিবেশ সৃজিত হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, রাসবিহারী বসু, নেতাজি সুভাস চন্দ্র বসু, বিচারপতি রাধাবিনোদ পাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাকেশি হায়াকাওয়া প্রমুখের প্রচেষ্টায়। বিপ্লবী যিনি পি এ ঠাকুর ছদ্মনামে জাপানে পাড়ি জমিয়েছিলেন ১৯১২ সালে। তিনি জাপানে বসে ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে দূরপ্রাচ্যের দেশ ও জাতিগুলোতে জনমত সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তিনি ইন্ডিয়া-জাপান ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটি গঠনের মাধ্যমে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি জাপানিদের সমর্থন ও সহানুভূতির সমন্বয় করেন। জাপান ও ভারতবর্ষের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনে তিনি বিশেষ ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। তিনি ১৯৪২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি জাপানের প্রধানমন্ত্রী জেনারেল তোজো ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি জাপানের সমর্থন ঘোষণা করেন। জাপানিদের কাছে ‘চান্দ্র বাসো’ নামে খ্যাত নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আজো জাপানে বিশেষ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। এখনো তার দেহভস্ম টোকিও শহরের রিংকিয়োজি মন্দিরে সংরক্ষিত আছে। প্রতি বছর ১৮ আগস্ট তার কথিত মৃত্যু দিবসে সেখানে আলোচনা ও প্রার্থনা সভা হয়। নেতাজি জাপানে পৌঁছার পর প্রধানমন্ত্রী তোজোর সঙ্গে সাক্ষাতের পর আজাদ হিন্দ ফৌজের ব্যানারে নেতাজির নেতৃত্বে বার্মা বাংলাদেশ সীমান্তে ইম্ফলে ব্রিটিশ বাহিনীর সঙ্গে জাপানিদের যুদ্ধ হয়। ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট জাপান আমেরিকার নেতৃত্বাধীন মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণের পর ১৮ আগস্ট তাইওয়ানে নেতাজি বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান। বিচারপতি ড. রাধা বিনোদ পাল জাপানিদের কাছে বাংলাদেশ-জাপান মৈত্রী ও বন্ধুত্বের সেতু হিসেবে বিবেচিত ও স্মরণীয় হয়ে আছেন। কুষ্টিয়ার সলীমপুরে ড. রাধাবিনোদের জন্ম। তিনি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারক (১৯৪১-৪৩) এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (১৯৪৩-৪৪) ছিলেন। তিনি ইন্টারন্যাশনাল মিলিটারি ট্রাইব্যুনাল ফর দ্য ফার ইস্ট (আইএমটিএফই), যা টোকিও ট্রায়াল নামে খ্যাত, এ ব্রিটিশ সরকার মনোনীত একজন সদস্য বিচারক হিসেবে জাপানিদের সপক্ষে বিভক্ত রায় দেন। ১২৩৫ পৃষ্ঠা টাইপ করা তার রায়ে পরাজিত জাপানিদের স্বস্তি, সাহস, আত্মবিশ্বাস ফিরে আসে এবং জাপানিদের প্রতি বাঙালিদের উদারনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে সহানুভূতি বোধ করে। বিচারপতি রাধাবিনোদ পাল যুদ্ধোত্তরকালে জাপানে দক্ষিণ এশীয় জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। জাপানিদের মধ্যে তাকেশি হায়াকাওয়া (১৯১৭-১৯৮২) জাপান বাংলাদেশের সম্পর্ক জোরদার করার ক্ষেত্রে অবিস্মরণীয় অবদান রাখেন। ১৯৭০ সালের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে অবর্ণনীয় ক্ষয়ক্ষতির সংবাদে এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের জনগণ তাকেশি হায়াকাওয়ার চিন্তাচেতনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ জাপানি মিডিয়ায় বিশেষ গুরুত্ব পায়। বাংলাদেশের শরণার্থীদের সাহায্যার্থে অর্থ সংগ্রহে এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রতি জাপানিদের সমর্থন সমন্বয়ে জাপানের বুদ্ধিজীবী, শিল্পমালিক, শ্রমিক, ছাত্রসমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন তাকেশি হায়াকাওয়া। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর আমেরিকা বলয়ের দেশ হওয়া সত্ত্বেও উন্নত বিশ্বের শিল্প সমৃদ্ধ দেশগুলোর মধ্যে জাপানই প্রথম বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় তারই প্রচেষ্টায় ১৯৭২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি। স্বীকৃতি দানের এক মাসের মধ্যে ঢাকায় জাপানি দূতাবাসের কার্যক্রম শুরু হয় এবং ১৩-১৪ মার্চ হায়াকাওয়ার নেতৃত্বে তিন সদস্যের জাপানি সংসদীয় প্রতিনিধিদল প্রথম বাংলাদেশ সফরে আসে। দেশে ফিরে ২৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রী সাতোর কাছে পেশ করা রিপোর্টে তিনি প্রস্তাব রাখেন (ক) বাংলাদেশকে ১০ মিলিয়ন ডলারের জরুরি অনুদান অবিলম্বে প্রদান এবং (খ) পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের হিস্যা আদায়ে জাপানের মধ্যস্থতা। তার সুপারিশ অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী সাতোর নির্দেশে ২৮ মার্চ ১৯৭২ তারিখে জাপান বাংলাদেশে প্রথম অর্থনৈতিক সার্ভে মিশন পাঠায়। ওই বছর ৬ জুন তারিখে জাপান বাংলাদেশ এসোসিয়েশন এবং কিছুকাল পরে জাপান বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি এসোসিয়েশন গঠিত হলে হায়াকাওয়া তার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হন এবং আমৃত্যু এর নেতৃত্বে ছিলেন। ১৯৭৩ সালের অক্টোবর মাসে জাপানে বাংলাদেশ থেকে শীর্ষ পর্যায়ের প্রথম সফরের সময় বাংলাদেশ-জাপান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের ক্ষেত্রে যে সুযোগ সৃষ্টি হয় হায়াকাওয়া ছিলেন তার অন্যতম রূপকার। ১৯৭৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর হায়াকাওয়া সস্ত্রীক বাংলাদেশ সফরে এলে রাষ্ট্রাচার উপেক্ষা করে বাংলাদেশের সরকারপ্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান মন্ত্রিসভার সিনিয়র সদস্যদের নিয়ে পদ্মা গেস্ট হাউসে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও সম্মান প্রদর্শনে আসার ঘটনাটিকে জাপান-বাংলাদেশের মধ্যে সুদূরপ্রসারী সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠার সোপান বলে হায়াকাওয়া তার আত্মজীবনীতে উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশ-জাপানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি বড় অনুষঙ্গ হলো বিগত আটচল্লিশ বছরে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বাণিজ্যিক আদান-প্রদানের প্রসারতা। এ কথা প্রণিধানযোগ্য যে আধুনিক পর্যায়ে দুদেশের সম্পর্কের গভীরতা এবং গতি-প্রকৃতিতে অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং বাংলাদেশ-জাপান দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের উত্থান-পতন বিশেষ নির্দেশক হিসেবে কাজ করেছে। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের অব্যবহিত পরে জাপান সরকার বাংলাদেশের যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতি পুনর্গঠনে এগিয়ে আসে। বাংলাদেশে জাপানি বাণিজ্য ও সে সুবাদে বিনিয়োগে জাপানিরা বরাবরই আগ্রহ দেখিয়ে এসেছে। জাপানই হচ্ছে এশিয়ায় বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যের অন্যতম গন্তব্যস্থল। আবার জাপানি পণ্য বাংলাদেশের আমদানি বাণিজ্যের সিংহভাগ দখল করে আছে। জাপানে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির ফলে এবং শ্রম শক্তির অপ্রতুলতার প্রেক্ষাপটে জাপানিরা আশির দশকে তাদের উৎপাদন ব্যবস্থাপনাকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে স্থানান্তর করে। এ প্রবণতা ডলারের সঙ্গে ইয়েনের মূল্যমান নির্ধারণ সংক্রান্ত ১৯৮৫ সালের প্লাজা চুক্তি স্বাক্ষরের পর আরো বেড়ে যায়। ১৯৮৬ সালে জাপান সরকার বিশ্বায়নের তাগিদে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো থেকে আমদানি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় এবং এর ফলে যেসব দেশ থেকে জাপানে রপ্তানি বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে সেসব দেশে জাপানি বিনিয়োগ উৎসাহিত হয়। এসব বাস্তব অবস্থার প্রেক্ষাপটে জাপানি কোম্পানিগুলো বিদেশে, বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয়ার উদীয়মান শিল্প সম্ভাবনাময় দেশগুলোতে তাদের উৎপাদন ব্যবস্থাপনাকে ব্যাপকভাবে স্থানান্তরে উদ্যোগী হয়। কিন্তু আশির দশকের শেষ ভাগের আগে বাংলাদেশ জাপানিদের কাছে বিনিয়োগ স্থল হিসেবে সম্যক পরিচিত ছিল না। তখন পর্যন্ত বাংলাদেশ তাদের কাছে জনসংখ্যার ভারে ন্যুব্জ, দারিদ্র্য, রোগ-শোক, বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় আক্রান্ত দেশ হিসেবেই পরিচিত ছিল। নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার পর থেকে বৈদেশিক বিনিয়োগের আকর্ষণে সরকারি উদ্যোগ বেশ জোরেশোরে গৃহীত হওয়ার ফলে ১৯৯১ সাল থেকে বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ প্রবাহ বৃদ্ধি পেতে থাকে। জাপানি অর্থনীতির মন্দাভাবের প্রেক্ষাপটেও বর্তমানে সে প্রবাহ অব্যাহত আছে।

ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ : সরকারের সাবেক সচিব, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান, জাপানে বাংলাদেশের সাবেক বাণিজ্য দূত।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App