×

খেলা

দ্বাদশ জয়ের সন্ধানে টাইগাররা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ জুন ২০১৯, ০৩:২১ পিএম

দ্বাদশ জয়ের সন্ধানে টাইগাররা
১৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের সুযোগ পায় বাংলাদেশ। এরপরের সবকটি বিশ্বকাপ আসরেই খেলেছে টাইগাররা। বাংলাদেশের দুরন্ত ক্রিকেটাররা বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ১১টি ম্যাচে জয় পেয়েছে। আজ ওভালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্বকাপে দ্বাদশ জয় করাত্ত করতে মরিয়া টাইগাররা। দুরন্ত ফর্মে থাকা মাশরাফিবাহিনীকে সমীহ করছে প্রোটিয়ারা। নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১০৪ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরে ব্যাকফুটে রয়েছে ফাফ ডু প্লেসিসবাহিনী। বিশ্বকাপে এবার দলীয় অভিজ্ঞতায় বাংলাদেশ মোটেও পিছিয়ে নেই। ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতায় বাংলাদেশে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের চেয়েও। দলের মোট ১৫ জনের ওয়ানডে অভিজ্ঞতা ১ হাজার ৩০০ ম্যাচের বেশি। এর মধ্যে পাঁচ সিনিয়র ক্রিকেটারের কথা তো আলাদা করে বলতেই হয়। প্রায় এক যুগ ধরেই তারা বাংলাদেশ দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাদের ঝুলিতে আছে মোট ৯৮০ ওয়ানডের অভিজ্ঞতা। এসব হিসাবে নিলে এবারের বিশ্বকাপে ভালো না করার কোনো কারণ নেই টাইগারদের। গত বিশ্বকাপে বাংলাদেশের তিনটি জয়ে অসাধারণ ইনিংস খেলেছিলেন মুশফিক। সেই ধারা ধরে রেখেছেন পরেও। দলের প্রয়োজনের সময় বরাবরই চওড়া তার ব্যাট। বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংসগুলোর বেশ কটিই এসেছে তার ব্যাট থেকে। মাহমুদউল্লাহ গত বিশ্বকাপে ইতিহাস গড়েছিলেন দুটি সেঞ্চুরি করে। বিশ্বকাপের পর অবশ্য চার নম্বরে জায়গা ধরে রাখতে পারেননি। তবে পরে নতুন ভূমিকায়ও মানিয়ে নিয়েছেন দারুণভাবে। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে সময়ের সেরা ফিনিশারদের একজন তিনি। বাংলাদেশের পাঁচ সিনিয়র ক্রিকেটারই বড় আসরে বড় কিছুর প্রস্তুতি নিয়েছেন দারুণভাবে। তারাই বিশ্বকাপে দলের স্বপ্নসারথি। সিনিয়রদের সঙ্গে মোস্তাফিজুর রহমান ও সৌম্য সরকার নিজের দিনে গড়ে দিতে পারেন পার্থক্য। মেহেদী হাসান মিরাজের ওপর নির্ভর করা যায় নিশ্চিন্তে। কোনো এক স্পেলেই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন রুবেল হোসেন। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন উন্নতির প্রমাণ দিচ্ছেন প্রতিনিয়ত। সঙ্গে অন্যরাও যদি নিজেদের কাজ ঠিকঠাক করতে পারেন, লক্ষ্য পূরণ বা স্বপ্ন ছোঁয়া, অসম্ভব নয় বাংলাদেশের জন্য। আজ টাইগাররা প্রোটিয়াদের হারাতে পারলে তা হবে বিশ^কাপের দ্বাদশ জয়। এবার এক ঝলকে ১৯৯৯ থেকে ২০১৫ বিশ্বকাপ পর্যন্ত টাইগারদের এগার জয়ের গল্প জেনে নেয়া যাক। প্রথম জয় : ১৯৯৯ সালের ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে কাক্সিক্ষত জয়ের দেখা পেয়েছিলেন বাংলাদেশের দামাল ছেলেরা। ম্যাচটিতে টাইগারদের প্রতিপক্ষ ছিল স্কটল্যান্ড। ম্যাচটি টাইগাররা জিতেছিল ২২ রানে। দ্বিতীয় জয় : ১৯৯৯ সালের ৩১ মে নর্দাম্পটনে শক্তিশালী পাকিস্তানের মুখোমুখি হয়েছিল টাইগাররা। এদিন পাকিস্তানকে ৬২ রানে হারিয়ে রূপকথার জন্ম দিয়েছিল বাংলাদেশ। তৃতীয় জয় : ২০০৭ সালের বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে টাইগারদের প্রতিপক্ষ শক্তিশালী ভারত। ম্যাচটিতে ভারতকে ৫ উইকেটে হারিয়ে বিশ^কে চমকে দেয় টাইগারবাহিনী। চতুর্থ জয় : ভারতকে হারানোর ৫দিন পর গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে বারমুডার মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। জয় পেলেই নিশ্চিত হবে সুপার এইটের টিকেট- এমন সুযোগ হাতছাড়া করেনি বাশারের দল। বৃষ্টি আইনে বারমুড়াকে ৭ উইকেটে হারায় তারা। পঞ্চম জয় : ২০০৭ বিশ^কাপের সুপার এইটে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে প্রোটিয়া বধের ইতিহাস লিখেছিলেন বাশার, আশরাফুল, তামিম, মাশরাফি, সাকিবরা। এ ম্যাচে ৬৭ রানে জয় পায় বাংলাদেশ। ষষ্ঠ জয় : ২০১১ সালের বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের দেখা পেয়েছিল টাইগাররা। ওই ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল আয়ারল্যান্ড। ম্যাচটিতে আইরিশদের ২৭ হারিয়েছিল সাকিব বাহিনী। সপ্তম জয় : ২০১৮ সালের বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে যাওয়ার আশা বাঁচিয়ে রাখতে হলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প ছিল না বাংলাদেশ দলের সামনে। গুরুত্বপূর্ণ ওই ম্যাচে ইংল্যান্ডের দেয়া ২২৬ রানের জয়ের লক্ষ্য তাড়া করে ২ উইকেটের নাটকীয় এক জয় পেয়েছিল টাইগাররা। অষ্টম জয় : শেষ আটের টিকেট পেতে হারাতে হবে নেদারল্যান্ডসকে- গ্রুপ পর্বে নিজেদের পঞ্চম ম্যাচে খেলতে নামার আগে টাইগারদের সামনে সমীরকরণটা ছিল এমন। ওই ম্যাচে আগে ব্যাটিংয়ে নামা নেদারল্যান্ডসের ইনিংস গুটিয়ে গিয়েছিল মাত্র ১৬০ রানে। মামুলি এই টার্গেট তাড়া করে ৬ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে গিয়েছিল বাংলাদেশ। নবম জয় : ২০১৫ সালের বিশ^কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে টাইগাররা প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছিল আফগানিস্তানকে। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ২৬৭ রান করেছিল বাংলাদেশ দল। বিপরীতে মাত্র ১৬২ রানেই অলআউট হয়ে গিয়েছিল আফগানিস্তান। দশম জয় : গ্রুপ পর্বে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল স্কটল্যান্ড। কাইল কোয়েটজারের ১৫৬ রানের এক ইনিংসে স্কটল্যান্ড নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৩১৮ রানের বিশাল স্কোর দাঁড় করালে কঠিন হয়ে উঠেছিল টাইগারদের জয়ের পথ। তবে তামিমের ৯৫, মাহমুদউল্লাহর ৬২, মুশফিকের ৬০ ও সাকিবের অপরাজিত ৫২ রানে ভর করে ৬ উইকেট ও ১১ বল হাতে জয় নিশ্চিত করেছিল বাংলাদেশ। একাদশ জয় : কোয়ার্টার ফাইনালের টিকেট পেতে ইংলিশদের হারানো প্রয়োজন ছিল টাইগারদের। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ১০৩ রানের ইনিংসে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৭৫ রান সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশ। বিপরীতে ইংলিশদের স্কোর ২৬০ রানে থামলে ১৫ রানের রোমাঞ্চকর এক জয় পেয়েছিল মাশরাফির দল।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App