×

অর্থনীতি

ডুবতে বসা পুঁজিবাজারের জন্য থাকছে গুচ্ছ প্রণোদনা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ জুন ২০১৯, ১২:১৩ পিএম

ডুবতে বসা পুঁজিবাজারের জন্য থাকছে গুচ্ছ প্রণোদনা
টানা পতনে দেশের পুঁজিবাজার তলানিতে ঠেকেছে। হাজার কোটি টাকার লেনদেন ২০০ কোটির ঘরে নেমেছে। এই পরিস্থিতিতে চরম অস্থিতিশীল বাজারকে স্থিতিশীল করার লক্ষ্যে আগামী বাজাটে পুঁজিবাজারের জন্য থাকছে একগুচ্ছ প্রণোদনা। যদিও অর্থমন্ত্রী একাধিকবার প্রণোদনা থাকার ঘোষণা দিলেও তার ইতিবাচক প্রভাব বাজারে দেখা যায়নি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বিশেষ প্রণোদনার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) শক্তিশালী করা, স্ট্যাম্প ডিউটি প্রত্যাহার, বন্ড মার্কেট কার্যকর করা এবং দ্বৈত কর প্রত্যাহারের মতো গুরুত্বপূর্ণ কিছু সিদ্ধান্ত রয়েছে। এ ছাড়া বাজেট ঘোষণায় আসতে পারে ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত। এর আগে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী পুঁজিবাজার সহায়ক কিছু কর প্রণোদনার আশ্বাস দিয়েছেন। অন্যদিকে এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বাজেটে পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে এমন কোনো কিছু করা হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টদের। বাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পুঁজিবাজারে একটি পক্ষ সব সময়ই অল্প দামে শেয়ার কিনে বেশি দামে বিক্রি করতে চান। সে ক্ষেত্রে তারা শেয়ার লোভনীয় দামে কেনার জন্য নানা গুজব ছড়িয়ে আতঙ্ক বাড়ান। সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও একপর্যায়ে ধৈর্যচ্যুতি ঘটায় আতঙ্কে পুঁজি বাঁচাতে শেয়ার বিক্রি করেন। অন্যদিকে মার্কেট প্লেয়াররা অল্প দামে শেয়ার কিনে পরে বেশি দামে বিক্রি করেন। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সম্প্রতি কয়েকবার মার্কেট প্লেয়ারদের এমন আচরণ নিয়ে কথাও বলেছেন। তিনি বলেন, পৃথিবীর সব দেশেই পুঁজিবাজারে দরপতন ঘটে পরবর্তীতে উত্থানের জন্য। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক দরপতনও এমনি ঘটনা। এই উত্থান-পতনে আতঙ্কের কিছু নেই। অর্থমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক বাজার পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে নীতিগত কিছু প্রণোদনার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার। আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটেই এসব সিদ্ধান্ত উল্লেখ থাকবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবিকে শক্তিশালী করা। বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, সরকারি নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান আইসিবি সরকারের নীতি অনুযায়ী পুঁজিবাজারে ব্যাপ্তি বাড়াতে কাজ করে। এবার বাজারের স্বার্থে আইসিবির আর্থিক ভিত্তি শক্তিশালী করতে বিএসইসি প্রস্তাব দেয়। এ সময় অর্থমন্ত্রী তা বিবেচনার আশ্বাস দেন। এ ছাড়া একই সময়ে বিএসইসির পক্ষ থেকে বাজার স্থিতিশীলতার স্বার্থে কিছু প্রস্তাব দেয়া হয়। এর মধ্যে আইসিবিকে শক্তিশালী করা ছাড়াও তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ সংক্রান্ত দ্বৈত কর (কোম্পানি পর্যায়ে ও শেয়ারহোল্ডার পর্যায়ে) সংক্রান্ত সমস্যার বিষয়েও প্রস্তাব দেয়া হয়। এ ছাড়া আগামী বাজেটে পুঁজিবাজারে কর সংক্রান্ত কিছু সমস্যা সমাধান এবং প্রণোদনা প্রদানের বিষয়েও অর্থমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব দেয় কমিশন। এ বিষয়টি বিবেচনায় এনে আগামী বাজেটে তা অন্তর্ভুক্ত হবে। একস ইঙ্গে কমিশনের প্রস্তাবে রয়েছে, তালিকাভুক্ত ও তালিকাবহিভর্‚ত কোম্পানির কর হারের ব্যবধান বাড়ানো। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর কর ছাড় বেশি হলে নতুন নতুন ভালো কোম্পানি শেয়ারবাজারে আসবে বলে এই উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। আগামী বাজেটে প্রাধান্য পাবে ট্রেজারি বন্ডগুলোকে লেনদেনযোগ্য করা এবং জিরো কুপন বন্ডকে উদ্বুদ্ধ করা। বন্ড মার্কেটের উন্নয়নেও পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভ‚ঁইয়া বলেন, করপোরেট কর কমানো হতে পারে। বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় তার জন্য কর ছাড় দেয়া হবে। এ বিষয় ডিএসইর এমডি কে এ এম মাজেদুর রহমান বলেন, পুঁজিবাজারকে গতিশীল, উন্নয়ন ও বিশ্বমানের করতে প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন খুবই জরুরি। অর্থনীতির সঙ্গে একটি সত্যিকারের পুঁজিবাজার গড়তে এসব প্রণোদনা প্রয়োজন। সিএসইর এমডি সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, বর্তমানে দেশে লক্ষাধিক কোম্পানি নিবন্ধিত হলেও মধ্যম ও বৃহদায়তনের কমপক্ষে কয়েক হাজার কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার সুযোগ আছে। অথচ শুধু কয়েকশ কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আছে, যা নগণ্য। ভালো কোম্পানি বাজারে আনতে বাজেটে প্রণোদনা থাকা জরুরি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App