এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেছেন, আগামী বাজেট থেকে ভ্যাট আইন কার্যকর হবে এবং সেখানে কয়েকটি স্তর থাকবে। তবে ভ্যাটের কারণে জনগণ এবং ব্যবসায়ীদের ওপর করের বোঝা চাপবে না। গতকাল বুধবার প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) সম্মেলন কক্ষে বাজেট বিষয়ক রিপোর্টিং প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলাল, সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পিআইবি এবং ইআরএফ যৌথভাবে এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করে। মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, রাজস্ব প্রবৃদ্ধির হারটা স্থিতিশীল হওয়া উচিত। একবার রাজস্ব আয় বেশি হলো, পরের বছর সেটা কমে গেল- এটা দেশের সার্বিক অর্থনীতির জন্য ভালো না। এ জন্য রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধিকে স্থিতিশীল করতে আমরা করের ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, বিশ্বব্যাপী ট্যাক্স তথা কর, ভ্যাট ও কাস্টমস ডিউটি থেকে রাজস্ব আয় বেশি হয়। কিন্তু আমরা এসব খাত থেকে বেশি পরিমাণে রাজস্ব আহরণ করতে পারি না। আগামীতে এসব খাতে বেশি গুরুত্ব দেব। তার মানে এই নয় যে, বেশি করে করারোপ করা হবে। তবে যারা ট্যাক্স দেয় না তাদের ট্যাক্সের আওতায় আনা হবে। অনুষ্ঠানে পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংকের ঋণ প্রত্যাহারের ঘটনা উল্লেখ করে সাবেক সেতু সচিব ও বর্তমান এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পে ‘সুপারভিশন কনসালটেন্সি’র ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়। সরকারের বিপক্ষ একটি গ্রুপ তখন ষড়যন্ত্র করে দুর্নীতি প্রমাণের চেষ্টা করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রমাণ হয় দুর্নীতিতে আমি জড়িত ছিলাম না। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংকও বিশ্বাস করেনি আমি ষড়যন্ত্র করেছি। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, তৎকালীন দুদক চেয়ারম্যান দুদকের কর্মকর্তাদের বলেছিলেন, মামলা করতেই হবে তা না হলে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন করবে না। তখনই বুঝেছি এই মামলায় আমাকে জড়ানো হবে। উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি সেতু বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ পান মোশাররফ। ওই বছরের ২৯ জুলাই পদোন্নতি পেয়ে সচিব হন তিনি। তখনই পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠলে দুর্নীতি দমন কমিশন মামলা করে। তাতে প্রধান আসামি করা হয়েছিল বর্তমান এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভ‚ঁইয়াকে। মামলা ও গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছিল সরকার। তবে জামিনে মুক্ত হওয়ার পর চাকরি ফিরে পান। পরে দুর্নীতি দমন কমিশন জানায়, পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির কোনো প্রমাণ তারা পাননি। ফলে ওই অভিযোগ থেকে মোশাররফসহ সাত আসামির সবাই মুক্তি পান।